চাঁদপুরে কচুয়া উপজেলার রঘুনাথপুর বাজারে আজ শনিবার (৮ সেপ্টেম্বর) গণহত্যা দিবস। আজকের এই দিনে পাক হানাদার বাহিনী রঘুনাথপুর বাজারে প্রায় অর্ধ শতাধিক নিরীহ বাঙ্গালী ও মুক্তিযোদ্ধাদের গুলি করে হত্যা করে।
মুক্তিযুদ্ধের ৪৭ বছর পরেও গুলিতে নিহত অনেক শহীদরা সঠিক মর্যাদা পায়নি। দিনটি এলে নাম মাত্র প্রায় প্রতি বছর রঘুনাথপুর বাজার মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি সংসদের আয়োজনে দিনটিকে রঘুনাথপুর বাজার গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
প্রতবিাররে মতো রঘুনাথপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে নানা কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
রঘুনাথপুর বাজার মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি সংসদের সভাপতি,মুক্তিযোদ্ধা সরর্দার মো. আবুল বাসার ও সাধারন সম্পাদক মাষ্টার মো. আব্দুল হালিম বলনে, ৮ সেপ্টেম্বর নিহত শহীদদের স্মরনীয় করে রাখতে প্রতি বছরের ন্যায় এবারো আমরা স্থানীয় ভাবে আলোচনা সভার আয়োজন করেছি এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন,সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড.মহীউদ্দীন খান আলমগীর এমপি।
নজরুল ইসলাম ভূঁইয়াকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার দাবি পরিবারের:
মো. নজরুল ইসলামকে ১৯৭১ সালের ৮ই সেপ্টেম্বর কচুয়া উপজেলার রঘুনাথপুর বাজারে মসজিদের সামনে গুলি করে নির্মম ভাবে হত্যা করে পাকিস্থানী দোসর, রাজাকার বাহিনী। শহীদ মো. নজরুল ইসলাম ভূঁইয়া উপজেলার ৮নং কাদলা ইউনিয়নের মহদ্দিরভাগ গ্রামের মৃত: ছেরাজুল হকের ছেলে। তাকে এলাকাবাসী নজির হোসেন হিসেবে চিনতেন। তারা ছিলেন ৪ ভাই ও ৩ বোন। তার ৪ ভাইয়ের মধ্যে একমাত্র জীবিত ডা. মো. হারুনুর রশিদ বর্তমানে পরিবার পরিজন নিয়ে আমেরিকা বসবাস করছেন।
মো.নজরুল ইসলাম ভূঁইয়া পাকিস্থানের করাচি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তৎকালীন ১৯৭০ সালে সিএএম,কম ডিগ্রি অর্জন শেষে করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ে অডিটর ডিসি ১৩ তে কর্মরত ছিলেন। পরবর্তীতে ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষন, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতান সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম বক্তব্যের ডাকে সারা দিয়ে চাকুরি ছেড়ে পালিয়ে দেশের বাড়িতে চলে আসেন।
যেদিন নজরুল ইসলাম ভূঁইয়া নির্মমভাবে নিহত হন, সেদিন তার সাথে তার হতভাগ্য বৃদ্ধ বাবা মো.জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া সঙ্গে ছিলেন। নিহত শহীদ নজরুল ইসলাম ভূঁইয়ার জন্য গ্রামবাসী ও তার স্বজনরা নিরবে নিভৃতে কাঁদেন। এলাকাসীর চোখে তিনি আজো বেচেঁ আচেন চির অমর হয়ে।
মহদ্দিরবাগ গ্রামের অধিবাসী আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া,আবু তাহের ভূইয়া ও মো. ইউসুফ ভূঁইয়াসহ অনেকে জানান,ওই দিন আমাদের বুকের ধন নজরুল ইসলামকে পাকিস্থানরা গুলি করে নির্মম ভাবে হত্যা করার পর একদিন পর লাশ মহদ্দিরবাগ গ্রামের ভূঁইয়া বাড়ীর পারিবারিক কবরস্থানে তার লাশ সমাহিত করা হয়। ওই সময় সারা গ্রামে অথৈই পানি ছিল। সেদিন তাকে মাচা করে তার লাশ দাফর করা হয় এবং এলাবাসী রাজাকারদের ভয়ে দীর্ঘদিন গ্রাম ছাড়া হয়ে থাকে।
কিন্তু শহীদ নজরুল ইসলাম (নজির হোসেন) মহান মুক্তিযোদ্ধে দেশের জন্য নিজের জীবন বাজি রেখে নিহত হলেও তার সমাধিস্থল এখনো সঠিক ভাবে রক্ষণাবেক্ষন ও তাকে শহিদ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি।
এলাকাবাসী আরো বলেন, ১৯৯৩ সালে সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত মো. মিজবাহ উদ্দিন খান শহীদ নজরুল ইসলামের কবরে এসে সম্মান জানিয়ে তার নামে একটি নাম ফলক স্থাপন করেন।
এলাকাবাসী শহীদ নজরুল ইসলামের আত্মার শান্তির জন্য বর্তমান সরকারের মুক্তিযোদ্ধা বান্ধব প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর এমপি ও সঙশ্লিষ্ট মন্ত্রানারয়ের কাছে তাকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া ও তার কবরটি কে স্মৃতিময় করে রাখতে জোর দাবী জানিয়েছেন ।
প্রতিবেদক: জিসান আহমেদ নান্নু
৮ সেপেটম্বর,২০১৯