Home / উপজেলা সংবাদ / কচুয়া / কচুয়ার ইতিহাসের সাথে মিশে আছে যেসব ঐতিহ্য
Kachua mosque
চাঁদপুরের কচুয়ায় প্রাচীনতম এক গম্বুজ বিশিষ্ট শাহী মসজিদ ও নেয়ামত শাহ (রহ.) এর মাজার

কচুয়ার ইতিহাসের সাথে মিশে আছে যেসব ঐতিহ্য

ব্র্যান্ডিং জেলা চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলায় রয়েছে ঐতিহাসিক বখতিয়ার খাঁ মসজিদ, বেহুলার পাটা এবং নেয়ামত শাহ্(রঃ)এর দরগা। উপজেলা সদর থেকে তিন কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে উজানী গ্রাম। বর্তমানে এ গ্রামে আছে একটি বিখ্যাত মাদ্রাসা।

মাদ্রাসার দক্ষিণ পাশে আছে একটি দিঘি। তার পশ্চিম পাড়ে আছে এক গম্বুজ বিশিষ্ট একটি সুদৃশ্য মসজিদ। এটি বক্তার খাঁ শাহী মসজিদ নামে খ্যাত। এক সময় উজানী গ্রামটি বনজঙ্গলে আচ্ছাদিত ছিলো।

উজানীর পীর ক্বারী ইব্রাহিম সাহেব বন-জঙ্গল পরিষ্কার করে এখানে বসবাস করতে শুরু করেন। তিনি ছিলেন একজন অত্যন্ত কামেল পুরুষ। তিনি এ মসজিদটিকে ব্যবহার্য করে তোলেন। মসজিদে প্রাপ্ত একটি শিলালিপিতে আছে, ‘‘পরম দয়ালু আল্লাহ্তায়ালার নামে আরম্ভ করিতেছি। আল্লাহ্ এক, তাহার কোনো শরীক নাই। মোহাম্মদ তাহার রাসূল। বাদশাহ বাহাদুর শাহ্ গাজীর শাসনামলে খাদেম আবুল হোসেন খাঁর পুত্র ইলিয়াস খাঁর পৌত্র’’।

এই উজানী গ্রামেই আছে হযরত নেয়ামত শাহের দরগাহ।এটি উজানি বাজারের পশ্চিম পাশেই। যিনি হযরত শাহজালাল (রঃ)-এর একজন সঙ্গী ছিলেন।

উজানী গ্রামে একজন বিখ্যাত ফৌজদার ছিলেন। তার নাম ছিলো বখতিয়ার খাঁ। তিনি বখতিয়ার খাঁ মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন। নির্মাণ সাল ১৭৭২।

উজানী একটি প্রাচীন গ্রাম। এ গ্রামের নাম পাওয়া যায় মধ্যযুগের মনসামঙ্গল কাব্যে ‘উজানী নগর’ হিসেবে।

বেহুলা লখিন্দরের লোহার তৈরি বাসরঘর এ গ্রামে ছিলো। যা মাটির নিচে ডেবে গেছে। বেহুলার শীল নোড়ার কথিত অংশবিশেষ এখনো এ গ্রামে রয়ে গেছে। লোকজন এখনো এগুলো দেখতে আসে।

কিন্তু এখন পাটা/পাথর কিছুই নাই। মানুষ ঘর-বাড়ি করে ফেলেছে।

পদ্মপুরাণে বর্ণিত রয়েছে চাঁদ সওদাগরের পুত্রবধু বেহুলার পৈত্রিক নিবাস চাঁদপুর জেলাধীন কচুয়া উপজেলার উজানী গ্রামে (তৎকালীণ উজানী নগরে)।

উত্তরাংশে বেহুলার পৈত্রিক রাজবাড়ী অর্থাৎ বেহুলার পিতার নামানুসারে রাজবাড়ীটি নামকরণ করা হয়েছে। রাজবাড়ীর দক্ষিণাংশে রয়েছে বেহুলার দিঘীর নামে পরিচিত বেহুলার দিঘী।

বেহুলার দিঘীর উত্তর পাড়ে রাজবাড়ী হতে প্রায় ৫০ মিঃ দক্ষিণে বেহুলার ছোটবেলার খেলনার সামগ্রী পুরানো পাথরের নির্মিত শিলা পাথরটি (আঞ্চলিক ভাষায় বেহুলার পাটা) আংশিক বিদ্যমান আছে। দৈর্ঘ্য ৩২ ইঞ্চি ও প্রস্থ ২৬ ইঞ্চি বিশিষ্ট এ শিলাটির ওজন প্রায় ২৫০ কেজি হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এ শিলাটি আদি অবস্থার আংশিক মাত্র।

কয়েক বছর পূর্বে জনৈক ধোপা এই শিলায় খারাপ কাপড় ধোয়ার সময় শিলা পাটাটি বিকট শব্দে স্থানান্তরিত হয়ে উজানী গ্রামের দুধখাঁর দিঘীতে পতিত হয়। শিলা পাটাটি পানির ওপর ভেসে উঠে বলে জনশ্রম্নতি আছে।

তবে যেখানে ছিল সেখানে কিছু ভাঙা ইটের টুকরো এখন দেয়া যায়। এছাড়া এখন বেহুলার পাটা বলে কিছুই নেই এখানে। স্থানীয়দের ঐতিহ্য বিমুখতা দেখে অনেকটা হতাশ হয়ে ফিরতে হয়।

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১:০৩ এএম, ২১ জানুয়ারি ২০১৮, রোববার
ডিএইচ