চাঁদপুরের কচুয়ায় শিশু ধর্ষণের দায়ে বোরহান উদ্দিন (৩৫) নামের মসজিদের এক ইমামকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয়মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
১০ আগস্ট বৃহস্পতিবার দুপুরে চাঁদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জান্নাতুল ফেরদাউস চৌধুরী এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত বোরহান উদ্দিন উপজেলার নিশ্চিন্তপুর এলাকার আকানিয়া গ্রামের ফকির বাড়ীর মৃত তাজুল ইসলামের ছেলে। তিনি স্থানীয় শাহী মসজিদের ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। ধর্ষণের শিকার শিশুটি তার কাছে কোরআন পড়া শিখতো।
মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, শিশুটির প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণি পড়া শেষ হলে পড়াশোনা বন্ধ করে দেন তার বাবা। এরপর মেয়েকে কোরআন শেখার জন্য স্থানীয় মসজিদের ইমাম বোরহানের কাছে দেন। প্রতিদিন সকালে শিশুটি তার কাছে কোরআন পড়তে যেতো।
ঘটনার দিন ২০২০ সালের ১৫ মার্চ রাত আনুমানিক ৯টার দিকে ইমাম বোরহান উদ্দিন শিশুর বাড়িতে ফোন করে জানান, মসজিদ কমিটি মসজিদ সংস্কারের জন্য স্থাপনা ভাঙবে। তাই শিশুটি যেন তার কোরআন শরিফ মসজিদ থেকে নিয়ে যায়। ফোন পেয়ে শিশুটি মসজিদে কোরআন আনতে গেলে অভিযুক্ত ইমাম তাকে ধর্ষণ করেন। এরপর শিশুটি কাঁদতে কাঁদতে বাড়িতে এসে ঘটনা খুলে বলে।
শিশুর বাবা বিষয়টি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানান। তারা কোনো ধরনের সমাধান করতে না পারায় ২১ মার্চ কচুয়া থানায় বোরহান উদ্দিনকে আসামি করে মামলা করেন ভুক্তভোগীর বাবা।
কচুয়া থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলমকে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি তদন্ত শেষে একই বছরের ৩০ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) সাইদুল ইসলাম বাবু বলেন, মামলাটি গত তিন বছরেরও অধিক সময় চলা অবস্থায় পাঁচজনের সাক্ষ্য নেন আদালত। সাক্ষ্য-প্রমাণ ও মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় আসামির উপস্থিতিতে বিচারক এ রায় দেন।
স্টাফ করেসপন্ডেট, ১০ আগস্ট ২০২৩