চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার আকানিয়া-নাছিরপুর গ্রামে মিথ্যা ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দিয়ে গ্রামবাসীকে হয়রানির প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ভূক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসী। শুক্রবার দুপুরে আকানিয়া-নাছিরপুর গ্রামের সড়কে ভূক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসীর আয়োজনে মামলাবাজ ছেফায়েত উল্যাহ মুন্সী’র শাস্তির দাবিতে এ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়।
মানববন্ধনে রমিজ উল্যাহ,সাইফুল ইসলাম,মজিব উল্যাহ, কামাল হোসেন,অলি উল্যাহ ও ইউপি সদস্য কামরুজ্জামান কাঞ্চন বক্তারা বলেন, উপজেলার ৯নং কড়ইয়া ইউনিয়নের আকানিয়া-নাছিরপুর গ্রামের অধিবাসী মৃত. আব্দুর রহিম উদ্দিন মুন্সীর ছেলে ছেফায়েত উল্যাহ মুন্সীর চাচা সম্পর্কে একই গ্রামের রমিজ উল্যাহ গংদের সাথে কবরস্থানের ৭শতাংশ জায়গাকে কেন্দ্র করে এক পরিবারের বিরুদ্ধে ৫টি মামলাসহ গ্রামের বিভিন্ন লোকজনের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালত ও থানায় ২১টি মামলা দিয়ে ৩৬ ব্যক্তিকে হয়রানি করে আসছে। ৩৬জনের ব্যক্তির মধ্যে বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করে।
প্রতিপক্ষ রমিজ উল্যাহ’র বিরুদ্ধে ছেফায়েত উল্যাহ মুন্সীর দায়েরকৃত মামলা গুলো হচ্ছে, মামলা নং-৮৩৫/২০২৩,৯০/২০২৩,১৭/২০২১,৩৫৬/২০২১,২২৩/২০২৩ এ মামলার আসামীরা হচ্ছেন, মৃত সালামত উল্যাহ’র পুত্র রমিজ উল্যাহ, রমিজ উল্যাহর ছেলে মোহাম্মদ উল্যাহ, মো. রুবেল ও রমিজ উল্যাহ’র স্ত্রী। ছেফায়েত উল্যাহ মুন্সী ৮৩৫/২০২৩ মামলাটি দায়ের করে ২২৮৮ দাগ উল্লেখ করে ওই দাগে ৭শতাংশ জমির দাবিতে। অথচ ২২৮৮ দাগের ৭ শতাংশ জমির মালিকদার বাদী ছেফায়েত উল্যাহ মুন্সী নিজেই। এ দাগের কোনো জায়গা নিয়ে মামলার বিবাদী রমিজ উদ্দিন মুন্সীর মামলার বাদী ছেফায়েত উল্যাহর কোনো বিরোধ নাই। রমিজ উল্যাহ মুন্সীর ২২৮৭ দাগে ৭ শতাংশ সম্পত্তির মালিকদার। ছেফায়েত উল্যাহ তথ্য গোপন করে অর্থাৎ মিথ্যা দাগ নং উল্লেখ পূর্বক মামলা দায়ের করে প্রতিপক্ষকে হয়রানি করার প্রতিবাদ করায় (৯০/২০২৩) মামলায় বাদীর পুত্র আব্দুর রহমান (২৫) ও হাবিবুর রহমান (৩৬), নাতি শাহপরান শিশির (২০) কে আসামী করা হয়। ওই মামলায় আব্দুর রহমান কয়েক দিন কারাবরন করেন।
একই ভাবে ছেফায়েত উল্যাহ মুন্সী ওই গ্রামের মৃত. রেছায়েত উল্যাহ মুন্সীর ছেলে মজিব উল্যাহ ও অলি উল্যাহসহ ৮জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং ৩৩৯/২০০৩। এছাড়াও ছেফায়েত উল্যাহকে আরো কয়েকটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে গ্রামের সাধারন নিরীহ মানুষকে হয়রানি করে আসছে। তিনি কারো প্রশাসন ও এলাকাবাসীর কারো কথা শুনেননি মর্মে গ্রামবাসী তাঁর হয়রানি থেকে পরিত্রান পেতে আজ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।
ছেফায়েত উল্যাহ মুন্সী কর্তৃক একই বাড়ির রেছায়েত উল্যাহ মুন্সীর বিরুদ্ধে ৩টি মামলা দায়ের করেন যার নং- ০৪/২০১৩ ও ১৬৭/২০১৯ ও মো: নং-২৬/২০১৩। অলি উল্যাহ মামলা নং-২২/২০১৪, রমিজ উল্যাহ’র ছেলে মোহাম্মদ উল্যাহসহ ৬জন আসামী করে মামলা নং- ১৯৮/২০২২,মহিব উল্যাহ’র ছেলে দ্বীন ইসলাম,রাসেল, রেছায়েত উল্যাহ’র ছেলে অলি উল্যাহ,মহিব উল্যাহ ও মৃত. গোলাম হোসেনের ছেলে শহীদ উল্যাহ, মামলা নং- ১৬/২০১৯,মহিব উল্যাহ’র স্ত্রী মার্জিয়া বেগম,মজিব উল্যাহ’র স্ত্রী পারুল বেগম,অলি উল্যাহর স্ত্রী তাছলিমা বেগম,রেছায়েত উল্যাহর ছেলে মহিব উল্যাহ,অলি উল্যাহ ও মহিব উল্যাহ’র ছেলে রাসেল, জি.আর মামলা নং ৩৩/১৯ ও মৃত. গোলাম হোসেনের ছেলে শহীদ উল্যাহ গং মামলা নং- ২৩/২০২১৯ইং।
এদিকে একের পর এক মামলা দায়ের করায় বিবাদী রমিজ উল্যাহ বাদী হয়ে ৯নং কড়ইয়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে ন্যায় বিচার চেয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম সওদাগর বেশ কয়েকবার ছেফায়েত উল্যাহকে নোটিশ করলেও তিনি উপস্থিত হননি। পরবর্তীতে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম সওদাগর বিবাদী ছেফায়েত উল্যাহ মুন্সীর কর্মকান্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে খারপ প্রকৃতির ও আইন অমান্যকারী বলে প্রতিবেদন দেন। এ ঘটনায় বাদী ছেফায়েত উল্যাহ ও তার সহযোগিদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি ও দ্রুত মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার ও এলাকাবাসী।
কচুয়া প্রতিনিধি, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩