কচুয়ায় মরা গরুর মাংস বিক্রির অভিযোগ, এলাকায় তোলপাড়

চাঁদপুরের কচুয়ায় মরা গরু দাফনের পর চুরি করে উঠিয়ে ওই গোশত বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার হরিপুর গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে শওকত হোসেনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠে। এ ঘটনায় স্থানীয় এলাকাবাসীর মাঝে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে পাশাপাশি এমন ঘৃণিত কাজের জন্য অভিযুক্ত ওই যুবক সওকত হোসেনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

উপজেলার হরিপুর গ্রামের কৃষক হেলাল প্রধান জানান, তার খামারে বিভিন্ন জাতের চারটি গরু ছিল। প্রতিদিনের মতো তিনি গত ৭ এপ্রিল রবিবার শাহী ওয়াল জাতের দুটি গরুকে কাঁচা ঘাস দেন। ধারনা করা হচ্ছে ওই কাঁচা ঘাসের মধ্যে বিষক্রিয়া থাকায় কৃষক হেলাল প্রধানের দুটি শাহী জাতের গরু মারা যায়। পরে গরুর মালিক হেলাল প্রধান বাড়ির উঠানে একটি ও বাড়ির দক্ষিন পাশে কৃষি জমির এক পাশে অপর একটি মৃত গরু মাটি চাপা দেন। পরদিন সোমবার সকালে হেলাল প্রধান দেখতে পায়, পতিত কৃষি জমির পাশে মাটি চাপা দেয়া মৃত গরুটি ওই স্থানে নেই। ওই জমি থেকে প্রায় ২শ গজ পশ্চিমে পতিত ভুট্টা জমিতে গরুর রশি, পাকস্থলী ও নাড়িভুড়ি দেখা যায়। ধারনা করা হচ্ছে, রাতের আধারে ওই গরুটি দাফনের পর শওকত হোসেন আরো কয়েকজনকে নিয়ে একই গ্রামের হারুনের ঘরে মরা গরুর গোশত রেখে ভাগ ভাটওয়ারা করে কোন এক বাজারে কসাইদের মাধ্যমে বিক্রি করে দেন। হারুনের গৃহে গোশত ভাগ ভাটওয়ারা বিষয়টি শিকার করে হারুনুর রশিদের স্ত্রী মিলন বেগম বলেন, আমার ছেলে ও আমাদের ফাঁসাতেই শওকত হোসেন এমন ঘৃণিত কাজটি করেছেন। আমরা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানাই।

গরুর মালিক হেলাল প্রধান আরো জানান, গরু দুটি মারা যাওয়ার সময় একই এলাকার যুবক শওকত হোসেন আমার কাছে গরু বিক্রির বায়না ধরে। আমি গরু বিক্রি না করতে অপরাগতা শিকার করি। সন্দেহ করা হচ্ছে গভীর রাতে শওকত হোসেন ও তার সহযোগীরা মাটি চাপা দেয়া একটি গরুকে উত্তোলন করে তার মাংস অন্যত্রে বিক্রি করে দেন। এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতা আনার দাবি জানাই। স্থানীয় অধিবাসী আওয়ামীলীগ নেতা আবদুর রশিদ জানান, শওকত মৃত গরুটি ক্রয় করতে চাওয়ায় আমাদের সন্দেহ জাগে। কি করে মুসলমান হয়ে অপর মুসলমানের কাছে মৃত গরুর মাংশ বিক্রি করলো তা ভেবে হিমসিম খাই। এমন ঘৃণিত কাজ করায় আমরা তার শাস্তির দাবী জানাই। এদিকে এ নিয়ে ঈদের দিন সন্ধ্যায় স্থানীয় লোকজন হরিপুর গ্রামে শালিশ বৈঠকের আয়োজন করলে অভিযুক্ত শওকত হোসেন উপস্থিত না হওয়ায় শালিশ বৈঠক সম্পন্ন হয়নি।

এ ঘটনা জানতে অভিযুক্ত যুবক শওকত হোসেনের বাড়িতে গেলে তাদের গৃহ তালা বদ্ধ থাকায় কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে তার ফুফু জোসনা বেগমকে পেলেও এ বিষয়ে জানতে চাইলে শওকত কোথায় আছে এর কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি। বর্তমানে শওকত হোসেন পলাতক থাকায় তাকে আইনে আওতায় এনে এলাকার বিভিন্ন সময় চুরিসহ নানান অপকর্ম বেরিয়ে আসবে বলে স্থানীয়রা দাবী করেন।

কচুয়া প্রতিনিধি, ১৩ এপ্রিল ২০২৪

Share