চাঁদপুরের কচুয়ার দারাশাহী-তুলপাই উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জহিরুল ইসলামকে লাঞ্চিতের অভিযোগে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অনিদিষ্টকালীন পাঠদান বর্জন করেছে।
বুধবার সকালে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওইদিন সকালে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে ও স্থানীয় বহিরাগত অভিযুক্ত ব্যক্তি মনির হোসেন পাটওয়ারীর শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
সরেজমিনে বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভার আয়োজন করা হয়। সভায় কমিটির সদস্য ও দুইজন শিক্ষানুরাগীকে আমন্ত্রন জানানো হয়। ম্যানেজিং কমিটির বিদ্যুৎসাহী সদস্য আব্দুল কাদেরের সভাপতিত্বে পূর্বের বিষয় নিয়ে আলোচনা সভা শুরু করলেও উশৃঙ্খল ব্যক্তি মনির হোসেন পাটওয়ারী বিষয়বস্তু বহিভর্ূত আলোচনার সূত্র ধরে সভা চলাকালে প্রধান শিক্ষক জহিরুল ইসলামকে গালমন্দ ও মারধরের হুমকি প্রদান করেন। এ ঘটনায় শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে। পরে ঘটনা শুনার পর বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অভিযুক্তের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আব্দুল কাদের,ইসমাইল হোসেন নয়ন ও সাবেক ইউপি সদস্য তাজুল ইসলাম জানান, সভা চলাকালীন সময়ে প্রধান শিক্ষককে লাঞ্চিত করা হয়। এ ঘটনার তীব্র ও নিন্দা জানাই পাশাপাশি দোষীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের শিক্ষককে লাঞ্চিত করা হয়েছে এটা খুবই দু:খজনক। ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হলে আমরা অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস বর্জন করব।
বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানান, বিদ্যালয় সভাকক্ষে যে ঘটনা হয়েছে এটা আসলে কাম্য নয়, তবে প্রধান শিক্ষককে এসব গালমন্দ ও মারধরের হুমকিদাতাকে বিচারের আওতায় আনার দাবি করছি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ নিয়ে এডহক কমিটি গঠনের লক্ষে সভা করা হয়। কিন্তু সভায় বহিরাগত ব্যক্তি মনির হোসেন উল্টো কমিটি নিয়ে আমাকে গালমন্দ করেন এবং মারধরের হুমকি প্রদর্শন করেন।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. আলমগীর হোসেন বলেন, তুলপাই-দারাশাহী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে মারধরের হুমকি দেয়া এটা দু:খজনক। সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে উপজেলা প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন তিনি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. আলী আশ্রাফ খান বলেন, প্রধান শিক্ষককে মারধরের হুমকি ও লাঞ্চিতের ঘটনায় মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। তবে ইউএনও’র কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়ার জন্য বলা হয়েছে এবং শিক্ষার্থীদের ক্লাসে পাঠদান যথারীতি ভাবে চলবে। এদিকে দোষীর বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে অভিযুক্ত মনির হোসেন পাটওয়ারী বলেন, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভায় কমিটি গঠন নিয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে ব্যখ্যা চাওয়ায় নিয়ে কথা-কাটাকাটি হয়। পরে বিষয়টি সমাধান হয়।
প্রতিবেদক:জিসান আহমেদ নান্নু,১৭ জানুয়ারি ২০২৪