প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি দেয়া, নিজের পুত্রকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলাসহ নানান প্রলোভন দেখিয়ে বিদ্যালয় সহকর্মীদের ও বিভিন্ন এনজিও সংস্থা থেকে ঋণ উত্তোলন করে প্রায় অর্ধকোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা রয়েছে এক সহকারি প্রধান শিক্ষক। একাধিক পাওনাদারদের মধ্যে তুলপাই গ্রামের ইউসুফ আলীর পুত্র ইসমাইল হোসেন ৯ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা ফেরত পাওয়ার দাবীতে আইনি লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছেন। অভিযুক্ত ওই সহকারি প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ গোলাম ছাদেক বর্তমানে পরিবার পরিজন নিয়ে গা ঢাকা দেয়ায় ওই আইনি নোটিশ তার পরিবারের সদস্যদের কাছে দেয়া হয়েছে। একজন সহকারি প্রধান শিক্ষকের এহেন কর্মকান্ডে বিদ্যালয়ে ও বাড়িতে পাওনাদাররা প্রতিনিয়ত ভীড় জমানোর ফলে এলাকায় তোলপাড় চলছে।
জানা গেছে, চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার তুলপাই দারাশাহী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক পদে মোহাম্মদ গোলাম ছাদেক ২০১৬ সালের ২১শে সেপ্টেম্বর যোগদান করেন। পরবর্তীতে তিনি ওই বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মো: নাসির উদ্দিনকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক রুবেল ও তার বোন মৌসুমি ও তার বাবা বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ইসমাইল হোসেনের কাছ থেকে মোট ৯ লক্ষ ৪০ লক্ষ ধার নেন। পরবর্তীতে টাকা দেই দিচ্ছি করে তাল-বাহনা করেন এবং ৯ লক্ষ টাকার চেক প্রদান করেন কিন্তু ব্যাংকে গিয়ে ওই চেকের মাধ্যমে টাকা না পাওয়ায় ওই চেক ডিজঅনার হয়ে যায়। পরবর্তীতে চাঁদপুরের জর্জ কোর্টের আইনজীবি শাহাদাত সরকার শাওনের সহায়তায় ২৩ এপ্রিল উকিল নোটিশ প্রদান করা হয়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: জহিরুল ইসলাম বলেন, আমার বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ গোলাম ছাদেক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, অভিভাবক ও অফিস সহায়কদের কাছ থেকে বিভিন্নভাবে কয়েক লক্ষ টাকা ধার নেয়ার কথা শুনেছি এবং স্থানীয় আশা ও ব্রাক এনজিও থেকে ঋণ নেয়ার ঘটনায় কয়েকজন কর্মকর্তা টাকা ফেরত পেতে গতকাল রবিবার আমার বিদ্যালয়ে এসেছেন। তিনি আরো জানান, সহকারি প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ গোলাম ছাদেক বিদ্যালয়ের প্রায় ১ বছর ধরে বিদ্যালয় ক্যাশের দায়িত্বে (কোষাধ্যক্ষ) রয়েছেন। আমার সিল-স্বাক্ষর জালিয়তি করে কচুয়া জনতা ব্যাংকে আমাকে জামিনদার বানিয়ে গোপনে টাকা উত্তোলন করেন। ওই সিল ও স্বাক্ষর এবং হিসাব-নিকাশের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক জহিরুল ইসলাম বলেন, এই বিষয়ে আমি থানায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।
এব্যাপারে অভিযুক্ত তুলপাই দারাশাহী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক পদে মোহাম্মদ গোলাম ছাদেকের বক্তব্য জানতে তার নিজ বাড়ি ও বিদ্যালয়ে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি।
বিদ্যালয়ের সভাপতি আলহাজ¦ মো: আইয়ুব আলী পাটয়ারী জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কচুয়া প্রতিনিধি, ২৮ এপ্রিল ২০২৪