কচুয়ায় প্রত্যন্ত গ্রামে সুপেয় পানি পাচ্ছে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী

চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার পশ্চিম সহদেবপুর ইউনিয়নের দারাশাহী তুলপাই একটি প্রত্যন্ত গ্রাম। ওই গ্রামের মানুষের সুপেয় পানির কষ্ট লাঘবে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় পাইপ লাইনের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে বেজ টিউবওয়েল স্থাপন করা হয়। শুধু দারাশাহী তুলপাই গ্রামই নয় এ সুবিধা ভোগ করছে গোহট উত্তর ইউনিয়নের মিয়ার বাজার-হাসিমপুর গ্রামও। এতে সহজেই সুপেয় পানি পাচ্ছে ওই দুটি ইউনিয়নের প্রায় ১২শ পরিবারের মানুষ।

জানা যায়, আগে সেখানে রান্নার জন্য ব্যবহার করতে হতো পুকুর অথবা খালের পানি। আর খাবারের পানি ফুটিয়ে পান করতো। কেউ-কেউ দূরের গভীর নলকূপ থেকে পানি এনে পান করতেন। ফলে গ্রামটির মানুষ ডায়রিয়া, আমাশয়, টাইফয়েডসহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হতেন। এখন এই কমিউনিটির বেজ টিউবওয়েলে ট্যাপ ঘোরালেই পানি পড়ে। এছাড়া টিউবওয়েল বসাতে উপকারভোগীদেও তিন হাজার টাকা খরচ বহন করতে হয়। পরে শুধুমাত্র যে বিদ্যুৎ বিলটি আসে, সেটি শুধু পরিশোধ করতে হয়। এদিকে মিটার ছাড়াই যে পরিবার সংযোগ নিয়েছে তাদের প্রতি পরিবার ২০০ টাকা করে এবং মিটার সংযোগকারীকে মিটার চার্জ অনুযায়ী বিল পরিশোধ করা হয়। গ্রামের শহরের সুবিধা দিতে ২ ইউনিয়নে মোট ১২০০টি পরিবারের মাঝে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করেছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।

দারাশাহী-তুলপাই গ্রামের উপকারভোগী শিউলী আক্তার,চারু মিয়া,সুমী বেগম,সামছুন্নাহার ও জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, এ গ্রামে সুপেয় পানির তীব্র সংকট ছিল। ফলে আমরা পানিবাহিত রোগে প্রতিনিয়ত আক্রান্ত হতাম। কিন্তু জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ঘরের দুয়ারে সুপেয় পানি পৌঁছে দিয়েছে। এ লাইনে ২৪ ঘন্টাই পানি পাওয়া যায়। এ পানি পান করে পানিবাহিত রোগ থেকে মুক্তি পেয়েছি। শহরের সুবিধা আমরা গ্রামেই পাচ্ছি তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তারা।

গোহট উত্তর ইউনিয়নের হাসিমপুর গ্রামের কুলছুমা বেগম,আলম প্রধান,সফিক ও মরিয়ম বেগম বলেন, পানির জন্য আমাদের দুর্ভোগের শেষ ছিল না। সরকার থেকে আমাদের এখানে একটি টিউবয়েল স্থাপন করে দিয়েছে। সেই টিউবওয়েল থেকে লাইন লাইনের মাধ্যমে ঘরে বসে সহজেই বিশুদ্ধ ও নিরাপদ পানি পাচ্ছি।

দারাশাহী তুলপাই বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ প্রকল্পের অপারেটর মো. জাহিদুল ইসলাম জানান, এ গ্রামে আগে টিউবওয়েলের পানি ব্যবহার করত কিন্তু ওই পানিতে ছিল প্রচুর পরিমানে আয়রন এবং নোংরা। বর্তমানে ওই গ্রামের মানুষেরা এখন বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করছে যা উপকৃত হয়েছে বলেও জানান তিনি।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কচুয়া উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান বলেন, নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ২টি ইউনিয়নে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রায় ১২শ পরিবারের লোকজন সুপেয় পানির সুবিধা ভোগ করছে।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর শহরের মতো অত্যন্ত গ্রামের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ঘরে ঘরে পানি পৌঁছে দেওয়ার জন্য এই কমিউনিটি বেজ টিউবওয়েল প্রকল্প গ্রহণ করে। পর্যায়ক্রমে উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে বিশুদ্ধ ও নিরাপদ পানি সরবরাহে টিউবওয়েল স্থাপন করার প্রক্রিয়া রয়েছে।

কচুয়া প্রতিনিধি, ১৮ নভেম্বর ২০২৩

Share