Home / উপজেলা সংবাদ / কচুয়া / কচুয়ায় দৃষ্টিনন্দন সেতু নির্মাণে বদলে গেল দুই উপজেলাবাসীর যোগাযোগের চিত্র
সেতু
বদলে গেছে কচুয়া ও মতলব দক্ষিন উপজেলার যোগাযোগের চিত্র

কচুয়ায় দৃষ্টিনন্দন সেতু নির্মাণে বদলে গেল দুই উপজেলাবাসীর যোগাযোগের চিত্র

চাঁদপুরের কচুয়া-মতলবের বোয়ালজুড়ি খালে দৃষ্টিনন্দন সেতু নির্মানে সীমান্তবর্তী প্রসন্নকাপ বাংলাবাজার ও মতলব দক্ষিণ দুই উপজেলাবাসীর বদলে গেছে যোগাযোগের চিত্র। বৃদ্ধি পাচ্ছে জীবনযাত্রার মান ও অর্থনীতির চিত্র। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে ওই খালে কোনো সেতু না থাকায় দুই উপজেলার মানুষের চরম দুভোর্গ পোহাতে হয়েছে। বর্তমানে বোয়ালজুড়ি খালে সেতু নির্মান করায় দীর্ঘদিনের চরম ভোগান্তির অবসান হয়েছে। পাল্টে গেছে দুই উপজেলার যোগাযোগের চিত্র। সেতু নির্মাণ হওয়ায় ভাগ্য বদলেছে দুই উপজেলার কয়েক লক্ষাধিক মানুষের।

জানা যায়, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন এলজিইডি’র আওতায় ওই খালে ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় সেতুটি। সেতু নির্মান কাজের দায়িত্ব পান মতলব উত্তরের মের্সাস সুন্দরবন পরিচালক মো. রিপন পাটোয়ারী। ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে সেতুর কাজ শুরু করলেও করোনা কারনে কিছুটা বিলম্বিত হলে ২০২৩ সালের প্রথমে সমাপ্ত হয়। দু’পাশের সড়ক পাকা করার পাশাপাশি খালের ওপর ৪২ মিটার দৈর্ঘ্যের আরসিসি গার্ডার সেতুটি নির্মিত হয়। কচুয়ার সাংসদ ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীরের সার্বিক প্রচেষ্টায় কচুয়া উপজেলার প্রসন্নকাপ বাংলা বাজারের সঙ্গে মতলব দক্ষিন উপজেলার অন্যান্য এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে উদ্বোধন করা হবে বলেও জানান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। উদ্বোধন উপলক্ষে সেতুর দু’পাশের আরসিসি গার্ডার রং দিয়ে সুসজ্জিত করা হচ্ছে। এছাড়া সেতু নির্মাণের ফলে বিশেষভাবে দুই উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থারও উন্নতি হয়েছে। সেতুটি নির্মাণের ফলে ওই এলাকার অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের চিত্র বদলে গেছে।

স্থানীয় অধিবাসী আবুল হোসেন, শফিক পাটোয়ারী জানান, দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে এ খালে ব্রীজ ছিলো না। এতে করে সাধারন মানুষেরা খুবই ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। সেতুটি নির্মানের ফলে যাতায়াতের সুবিধা হয়েছে বলেও জানান তারা।

যানবাহন চালক সুজন মিয়া ও রফিকুল ইসলাম জানান, সেতু না থাকায় যানবাহন খালের ওপারেই রাখতে হতো অথবা নৌকা দিয়ে পারাপার করা হতো। সেতু নির্মানের ফলে এখন সহজেই মোটরসাইকেল সহ বিভিন্ন যানবাহন নিয়ে যাওয়া যায়।

মতলব দক্ষিন উপজেলার কালিকাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক জানান, আগে আমরা এ খালে নৌকা দিয়ে পারপার হতাম। দীর্ঘদিন ধরে খালের দু’পারের শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় ও কলেজে যেতে পারত না। কিন্তু সেতু নির্মান হওয়ায় বর্তমানে দু’পারের শিক্ষার্থী ও জনগন সহজেই যাতায়াত করতে পারছে।
কাজের ঠিকাদার মো. রিপন পাটোয়ারী বলেন, করোনা কারনে সেতুটি নির্মানে কিছুটা বিলম্বিত হয়েছে। সেতু নির্মানের কাজ শেষ হলেও এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষা। এ সেতুটি নির্মানের ফলে দুুই উপজেলার জীবনযাত্রার মান ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে।

ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ব্রীজটি নির্মাণ দুই উপজেলাবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল। বর্তমানে তা বাস্তবায়ন হওয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর এমপি’র প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। এই দৃষ্টিনন্দন ব্রীজটি নির্মাণের ফলে একদিকে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত ও অন্যদিকে বিকেল বেলা বিনোদন প্রেমিদের ভীড় বেড়েছে।

কচুয়া উপজেলা প্রকৌশলী মো. আব্দুল আলীম লিটন চাঁদপুর টাইমসকে জানান, একটি সেতু নির্মানের কারণে কচুয়া ও মতলব দক্ষিন উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থায় যুগান্তকারী পরিবর্তন এসেছে। বিশেষ করে কচুয়া উপজেলার পশ্চিম সহদেবপুর ইউনিয়নের প্রসন্নকাপ বাংলা বাজারের স্থানীয়রা খুবই ভোগান্তিতে ছিলেন। এখন বোয়ালজুড়ি খালের দু’পারের মানুষের দীর্ঘদিনের কষ্ট ভোগান্তি দুর হয়ে বদলে গেছে হাজারো মানুষের জীবনযাত্রা ও যোগাযোগের ব্যবস্থা।

প্রতিবেদক: জিসান আহমেদ নান্নু, ২৪ আগস্ট ২০২৩