চাঁদপুরের কচুয়ার আইনগিরি-বাতাবাড়িয়া গ্রামে দুবৃর্ত্তদের দেয়া কেরোসিনের আগুনে পুড়ে গেছে বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তানের ছোট বড় ৬টি ঘর। এতে ঈদের আগে পথে বসেছে এ পরিবারটি। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে গোহট উত্তর ইউনিয়নের বাতাবাড়িয়া গ্রামের হাজী বাড়িতে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ওই পরিবারের নগদ ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা,২২ ভরি ওজনের স্বর্ন-গহনা,দলিলপত্র ও মূল্যবান আসবাবপত্রসহ প্রায় ২ কোটি টাকার ক্ষতিসাধন হয়েছে বলে দাবি ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের।
স্থানীয় এলাকা সূত্রে জানা গেছে, লন্ডন প্রবাসী প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল ইসলামের পুত্র রিয়াজুল ইসলামের কাচারী ঘর থেকে অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত হয়। আগুনের লেলিহান দেখে পাশ্ববর্তী জহির রায়হানের মেয়ে সামিয়া রহমান ডাক চিৎকার দিলে স্থানীয়রা ছুটে এসে আগুন নিয়ন্ত্রনে চেষ্টা করে এবং ফায়ার সার্ভিসে সংবাদ দেয়। পরবর্তীতে আগুন ছড়িয়ে পড়লে পাশ^বর্তী জহির রায়হানের গৃহের আংশিকসহ রিয়াজুল ইসলামের ছোট-বড় ৬টি ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত রিয়াজুল ইসলামের মা মাজেদা বেগম বলেন, আগুনে আমাদের পুড়ে সব শেষ হয়ে গেছে। পরনের কাপড় ছাড়া আর কিছু নাই। আমার সৌখিন স্বামী তার লন্ডনের পরিশ্রমের সকল অর্থ দিয়ে নিজ বাড়িকে সাজিয়ে ছিলেন। আমরা সর্বস্বান্ত হয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছি। তিনি আরো বলেন,আমার ধারনা দুবৃর্ত্তদের দেয়া কেরোসিনের আগুনে আমাদের ঘর বাড়ি পুড়েছে আমি দুবৃর্ত্তদের খোজেঁ বের করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাই।
প্রতিবেশী জহির রায়হান,আবু সুফিয়ান,বাকের হোসেন জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল ইসলাম একজন সৌখিন মানুষ ছিলেন। তার ঘরগুলো টিনসেডের ছিল। আগুনে তাদের সবকিছু পুড়ে গেছে এখন খোলা আকাশের নিচে তাদের মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে। তারা আরো জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল ইসলামের একমাত্র পুত্র রিয়াজুল ইসলাম এভারেস্ট ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিতে চাকুরির সুবাদে কুমিল্লায় বসবাস করছেন। ঘটনার দিন রিয়াজুল ইসলামের মা মাজেদা বেগম কুমিল্লা থেকে তার খালার বাড়ি বরুড়া উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামে বেড়াতে যান ও দুই বোন মরিয়ম ও হাফিজা আক্তার তাদের স্বামীর বাড়িতে বসবাস করছে। মরিয়ম আক্তার জানান, তার মায়ের কাছে আমানত হিসেবে তাদের দুই বোনের ও সন্তানদের স্বর্ন-গহনা রূপা জমা রাখেন। সর্বনাশা আগুনে তাদের সব স্বপ্ন পুড়ে শেষ হয়ে গেছে।
কচুয়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশন অফিসার মাহাতাব মন্ডল বলেন, অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে আমাদের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। সেখানে টিনসেডের তৈরি ৬টি ঘর ও ব্যবহারিক জিনিসপত্র পুড়ে গেছে।
এ বিষয়ে কচুয়া থানার ওসি মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। অগ্নিকান্ডের রহস্য উদঘাটনে অধিকতর তদন্ত চলছে। এদিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের গৃহ পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় দৃস্কৃতিকারীদের খুজে বের করে শাস্তির দাবিতে সোমবার বিকালে মানববন্ধন করেছেন ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার ও এলাকাবাসী।
প্রতিবেদক: জিসান আহমেদ নান্নু, ২৪ মার্চ ২০২৫
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur