কচুয়া সরকারি বঙ্গবন্ধু ডিগ্রি কলেজে শাখা ছাত্রলীগের নবঘোষিত কমিটিতে সম্প্রতি মো. ইব্রাহীম মিয়া (দুরন্ত কে আহবায়ক করা হয়। বর্তমানে এই ছাত্র নেতার বিরুদ্ধে এলাকায় চাঁদাবাজী, গরু চুরিসহ এলাকায় বহু অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় ভুক্তভোগীরা তার ক্ষমতার দাপটে ভয়ে আতংকে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। শনিবার রাতে কড়ইয়া ইউনিয়নের বাসাবাড়িয়া গ্রামের উত্তম সরকার নামের এক ব্যাক্তির বাড়ির পাশের দখলীয় জমিলোক চক্ষুর অন্তরালে রাতের বেলা বাঁশের বেড়া দিয়ে দখলের চেষ্টা করে।
কচুয়া থানায় অভিযোগের পর সে থানা পুলিশের নিষেধ অমান্য করে মঙ্গলবার রাতে ওই জমিতে বালি ফেলে ভরাট করতে গেলে থানা পুলিশ বাধা প্রদান করে। ছাত্রলীগ নেতা ইব্রাহীমের হুমকি ধমকির ভয়ে আতংকিত হয়ে উত্তম সরকার অসুস্থ হয়ে বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
বিষয়টির ন্যায় বিচার পেতে উত্তম সরকার বুধবার কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর মো: ইব্রাহীমকে অভিযুক্ত করে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। কচুয়া বঙ্গবন্ধু সরকারি ডিগ্রি কলেজ কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, ইব্রাহীম মিয়া বর্তমানে ওই কলেজে অধ্যয়নরত কোন শিক্ষার্থী নয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ছাত্র নেতা জানান, মো: ইব্রাহীম ৪ বছর পূর্বে উপজেলার কোমরকাশা গ্রামের পাটওয়ারী বাড়ির দুলাল পাটওয়ারী মেয়ে মিথিলা চাঁদনী লিজার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বর্তমানে তাদের তিন বছরের একটি ছেলে সন্তানও রয়েছে।
কচুয়া বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ওই কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মাসুদ মজুমদার অনিক জানান, ইব্রাহীম আমাদের কলেজের ছাত্র নয় এবং এক সন্তানের জনক এমন একজনকে এই কলেজ শাখা ছাত্রলীগের আহবায়ক করা হয়েছে যা অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয় এবং ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র পরিপন্থী। এ ব্যাপারে আমি জেলা ছাত্রলীগের বরাবর অভিযোগ করলেও এর কোন প্রতিকার পাইনি।
উপজেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মো.সোহাগ উদ্দীন বলেন, ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বিবাহিত কেউ কিংবা ছাত্রত্ব না থাকলে কেউ ছাত্রলীগের পদ পেতে পারে না। তবে কচুয়া কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কমিটি গঠনের এখতিয়ার জেলা ছাত্রলীগের।
উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক মো.সালাউদ্দীন সরকার বলেন, মো. ইব্রাহিম মিয়ার বিবাহের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জহির উদ্দীনের মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তার সাথে যোগাযোগ করতে না পেরে সাধারণ সম্পাদক মো. সাদ্দাম হোসেন খানের সাথে কথা হলে তিনি জানান, ইব্রাহিম মিয়া যদি বিবাহিত হয় এবং তার যদি ওই কলেজে ছাত্রত্ব না থাকে তাহলে ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
স্থানীয় ও ছাত্রলীগের একাধিক ত্যাগী নেতাকর্মী জানান, কার খুঁটির জোরে মো. ইব্রাহিম দুরন্ত বঙ্গবন্ধু সরকারি ডিগ্রি কলেজের ছাত্রত্ব না থেকে এবং বিবাহিত হয়েও কিভাবে একটি সুনামধন্য প্রতিষ্ঠান যা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নামে প্রতিষ্ঠিত এমন একটি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের আহবায়ক হয় তা আমাদের বোধগম্য নয়। কার খুঁটির জোরে সে সংখ্যালগু পরিবারের সম্পত্তি দখল ও এই সমাজে বিভিন্ন প্রকার অপকর্ম করে পার পেয়ে যাচ্ছে?
কচুয়া প্রতিনিধি, ১১ জানুয়ারি ২০২৩