কচুয়ায় গৃহবধূ শাহনাজ হত্যার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন চায় পরিবার

চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার ৪নং পালাখাল মডেল ইউনিয়নের সফিবাদ গ্রামের মঞ্জিল মিয়াজীর স্ত্রী শাহনাজ আক্তার হত্যার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের দাবী জানিয়েছেন নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী।

শাহনাজ আক্তার হত্যার ১৪ বছর পর সম্প্রতি নিহতের স্বামী মঞ্জিল মিয়াজী নিজেকে নির্দোষ দাবী করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও বার্তা ভাইরাল হয়। ওই ঘটনায় স্থানীয় লোকজনের মাঝে পুরোনে এ বিষয়টি নিয়ে নতুনভাবে আলোচনার জন্ম হয়। এ নিয়ে মুখ খুলেন নিহতের রেখে যাওয়া দুই কন্যা নাজমীন আক্তার ও ইয়াসমিন আক্তার। বুধবার দুপুরে নাজমিন আক্তার ও ইয়াসমিন আক্তার দাউদকান্দির পিপিয়াকান্দি গ্রামে তাদের নানার বাড়িতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়। এসময় তারা বলেন, আমার মা মারা গেছেন তৎকালীন ২০১১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে। তখন আমরা শিশু বাচ্চা ছিলাম। মায়ের মৃত্যুর বিষয়ে তখন কিছুই বুঝিনি। বর্তমানে আমরা নানার বাড়িতে বড় হয়ে দুজনেই স্বামীর সংসারে রয়েছি। দীর্ঘদিন বাবাকে দেখিনি ও কথা হয়নি। হঠাৎ কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে বাবার ভিডিও বার্তা দেখে আমরা বিস্মিত হয়েছি। আসলেই বাবা কি নির্দোষ নাকি মায়ের হত্যাকারী? এ প্রশ্ন আমাদেরও। তাহলে আমার মায়ের প্রকৃত হত্যাকারী কে? যারা মায়ের আদর ও বাবার আদর থেকে আমাদের দু বোনকে বঞ্চিত করেছে, আমরা তাদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি চাই। এমন কথা বলতে গিয়েই আবেগে আপ্লুত হয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন মা হারা দুই সন্তান নাজমিন আক্তার (২৫) ও ইয়াসমিন আক্তার (২১)। তারা আরো বলেন, যাদের কারনে আমরা মা হারিয়েছি, হয়েছি এতিম। আমরা প্রশাসন ও এলাকাবাসীর মাধ্যমে আমরা ন্যায় বিচার চাই।

নিহত শাহনাজ আক্তারের বাবা শাহ আলম বেপারী জানান, আমার তিন মেয়ে ও দুই ছেলে ছিল। খুবই আদরের দ্বিতীয় মেয়ে শাহনাজ আক্তারকে তৎকালীন ১৯৯৯ সালে কচুয়া উপজেলার সফিবাদ গ্রামে বিয়ে দেই। বিয়ের পর তাদের গৃহে দুটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। হঠাৎ ২৩ সেপ্টেম্বর মধ্য রাতে সফিবাদ গ্রামের জনৈক নাসির উদ্দিন আমাকে ফোন দিয়ে বলেন, আপনার মেয়ে অসুস্থ, তারাতারি আসেন।

পরবর্তীতে কিছুক্ষণ পর আবারো নাসির উদ্দিন ফোন দিয়ে বলেন, আপনার মেয়ে মারা গেছেন। তখন তারাতারি মেয়ের বাড়িতে গিয়ে দেখি মেয়ে আর বেচেঁ নেই। ওই সময় আমার মেয়ের জামাতা মঞ্জিল হোসেনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করি। কিন্তু বর্তমানে আমার মনে হয় আমার মেয়ের জামাই মেয়েকে হত্যা করেননি। তবে কে বা কাহারা এ হত্যার সাথে জড়িত অনুসন্ধান পূর্বক ন্যায় বিচার চাই। এ ঘটনায় বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে আমি পূর্ণ তদন্তের দাবী করবো।

নিহতের ভাই মনির হোসেন জানান, তৎকালীন সময়ে আমি প্রবাসে ছিলাম। বোনের মৃত্যুর বিষয়টি প্রবাসে থেকেই জেনেছি। ওই সময় আমার বাবা মাকে ভুল বুঝিয়ে ভগ্নিপতিকে আসামী করে জেল হাজতে পাঠিয়েছিল। বর্তমানে আমরা আমার বোনের মৃত্যুর প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করতে প্রশাসনসহ সকলের সহযোগিতা চাই। আমার ভগ্নিপতি নির্দোষ হলে তাকে এ মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হোক এবং যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনার জোড় দাবী জানাই। এদিকে কচুয়া উপজেলার সফিবাদ গ্রামের মঞ্জিল মিয়াজীর স্ত্রী শাহনাজ আক্তার (২৮) এর মৃত্যুর প্রকৃত রহস্য খুজেঁ বের করার জোড় দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

প্রতিবেদক: জিসান আহমেদ নান্নু, ৯ এপ্রিল ২০২৫

Share