Home / উপজেলা সংবাদ / কচুয়ায় মুঘল শাসনামলে নির্মিত ‘গায়েবি মসজিদ’
মসজিদ

কচুয়ায় মুঘল শাসনামলে নির্মিত ‘গায়েবি মসজিদ’

চাঁদপুরের কচুয়ায় বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান রয়েছে। এ উপজেলায় ইসলামী সংস্কৃতির অনেক গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শনও রয়েছে। উপজেলার আটোমোর পূর্বপাড়া গ্রামে রয়েছে ‘গায়েবি মসজিদ’। এটি বর্তমানে প্রাচীন শাহী জামে মসজিদ নামে পরিচিত। এই মসজিদটি কবে, কখন এবং কিভাবে নির্মিত হয়েছে তা কেউ জানেন না। বর্তমানে তার নামকরণ করা হয়েছে আটোমোর পূর্বপাড়া প্রাচীন শাহী জামে মসজিদ।

তবে ধারণা করা হয়, প্রায় ৬’শ বছর আগে এই মসজিদটি নির্মিত হয়েছে। সেই সময় থেকে ইতিহাস-ঐতিহ্যের প্রাচীনতম এই মসজিদটি আজও দাঁড়িয়ে রয়েছে অক্ষত অবস্থায়। তবে বর্তমানে মসজিদটিকে বড় আকারে নির্মাণ করছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। এতে ব্যয় হয়েছে অনেক টাকা। বাকী কাজ শেষ করতে সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন মসজিদ কমিটির নেতৃবৃন্দ ও এলাকাবাসী।

মসজিদের ইমাম মাওলানা নুরুল হক নিজামী জানান, লোক মুখে শুনেছি সম্ভবত মুঘল সম্রাট শাসনামলে এলাকাবাসী বন-জঙ্গল পরিস্কার করতে গিয়ে মসজিদটির সন্ধান পান। ওই সময়ে এলাকায় জনবসতি না থাকায় বনজঙ্গলে আচ্ছন্ন হয়ে মসজিদটি ঢাকা পড়ে যায়। তখনকার সময়ে স্থানীয় এলাকাবাসী বন-জঙ্গল পরিস্কার করে মসজিদটি দেখতে পায়। মুঘল সম্রাটের আমলে কে বা কারা এ মসজিদটি নির্মাণ করেছে তা কেউ জানে না। সেই থেকে এলাকার মানুষ মসজিদটিকে ‘গায়েবি মসজিদ’ হিসেবে আখ্যায়িত করে আসছে। তাছাড়া পূর্বে এক গুম্বজ বিশিষ্ট মসজিদটিতে ইমামসহ ৯ থেকে ১০জন মুসল্লি নামায় আদায় করতে পারতো। বর্তমানে মসজিদে ২০০ থেকে ৩০০ জন মুসল্লি একসাথে নামাজ আদায় করতে পারে। মসজিদটি প্রায় ১৮ শতাংশ জমিতে নির্মিত রয়েছে।স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, সম্ভবত মুঘল সম্রাটের আমলে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে।

প্রায় ৬’শ বছর আগে নির্মিত হয়েছে মসজিদটি। এখন মসজিদটিকে বৃহৎ আকারে নির্মাণ করা হচ্ছে। এখন বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতি শুক্রবার মুসল্লিরা এ মসজিদে নামাজ আদায় করতে আসেন। অনেকে মনের আশা পূরণে মানত করেন বলেও জানান তারা। তবে মসজিদটিকে সংস্কারের জন্য সরকারি কিংবা বেসরকারি সহায়তার পাশাপাশি এলাকার বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তারা। ওই মসজিদটির পূর্ব পাশে নির্মাণ করা হয়েছে আটোমোড় জামালিয়া হাফিজিয়া নূরানীয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা।

মসজিদ কমিটির কোষাধ্যক্ষ মো. বায়েজিদ সরকার বলেন, প্রতি শুক্রবার দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ মসজিদে মানতের নগদ টাকা প্রদান ও মিষ্টি বিতরণ করেন।তাদের ধারণা, গায়েবি মসজিদে যে কেউ নিয়ত মানত করলে আল্লাহর অশেষ রহমতে তা পূরণ হয়। আগের চেয়ে মসজিদটি অনেক প্রসারিত হয়েছে। এখনো অনেক কাজ অসমাপ্ত রয়েছে। এদিকে মসজিদ প্রসারিত করতে গিয়ে অনেক টাকার ঋণ হয়েছে। তাই সরকারি-বেসরকারি, জনপ্রতিনিধি ও বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করছেন এলাকাবাসী।

আটোমোর পূর্বপাড়া প্রাচীন শাহী জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা নুরুল হক নিজামী বলেন, এ মসজিদের নির্মাতা কে বা কারা আমরা বলতে পারছি না। আমরা বাপ-দাদার আমল থেকে শুনেছি এটি গায়েবি মসজিদ।বাহির থেকে অনেক বড় মনে হলেও মসজিদের ভেতরে শুধুমাত্র ২০০ থেকে ৩০০ জন মুসল্লি নিয়ে নামাজ আদায় করা যায়। মসজিদের পূর্বের অবকাঠামো ঠিক রেখে মসজিদ ভবন নতুন করে নির্মাণ করা হচ্ছে। তাই সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।

কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ হেলাল চৌধুরী বলেন, ‘মসজিদটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে।’

প্রতিবেদক: জিসান আহমেদ নান্নু, ২০ নভেম্বর ২০২৪