চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দেশীয় আম গাছে এখন প্রচুর আমের মুকুল ফুটেছে। গাছে গাছে আমের মুকুলের সমারোহ লক্ষ্য করা গেছে। এ অঞ্চলের প্রায় প্রতিটি আম গাছে মুকুল দেখা দিয়েছে। প্রকৃতিতে শীতের প্রকোপ এবার সঠিকভাবে থাকায় প্রায় শত বছরের পুরানো ফল আম গাছ বেশ আগেভাগেই মুকুলে মুকুলে ছেঁয়ে গেছে।
কচুয়া উপজেলার কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় অনেক এলাকায় আমের চাষ করা হয়। সারা উপজেলা জুড়ে লক্ষাধিক আমের গাছ ও ছোট বড় মিলিয়ে ১৫-২০টি আমের বাগান রয়েছে। আমের মুকুল আসার আগে-পরে যেমন আবহাওয়ার প্রয়োজন, এ বছর তা বিরাজ করছে। ডিসেম্বরের শেষ থেকে মার্চের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত আম গাছে মুকুল আসার আদর্শ সময়। এ সময়ে মুকুলের প্রধান শত্রু কুয়াশা।
এখন পর্যন্ত কুয়াশা কম এবং আকাশে উজ্জ্বল রোদ থাকায় আমের মুকুল সস্পূর্ণ প্রস্ফুটিত হচ্ছে। হিমসাগর, চোষা, বউ সোহাগী, ল্যাংড়া, নাগ ফজলি, আলতাপেটি, রানি পছন্দ, দুধ সর, আম্রপালি, লক্ষ্মণভোগ, মল্লিকা, মিছরি দানা, ফজলি ইত্যাদি জাতের আম চাষ হয় এ অঞ্চলে।
সরেজমিনে আমচাষীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা ভালো ফলনের স্বপ্ন বুনছেন। তাদের মতে, এ উপজেলার সর্বত্র আমের মুকুল দেখা গেলেও তেগুরিয়া, সহদেবপুর, তেতৈয়া, আলিয়ারা, নন্দনপুর, সাচার, মাঝিগাছা, করইশ গ্রামে আম গাছের পরিমান বেশি। এসব এলাকার কোনো কোনো গাছে আমের মুকুল থেকে বেরিয়েছে ছোট ছোট আম গুটি।
বাগান মালিকরা আমের ভালো ফলন পেতে ছত্রাকনাশক প্রয়োগসহ বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
উপজেলার পালাখাল এলাকার আম চাষী জয়নাল আবেদীন বলেন, আমার আম্রপালি জাতের ১০টি গাছই মুকুলে ছেয়ে গেছে। এবার কুয়াশা কম থাকায় মুকুল ভালোভাবে প্রস্ফুটিত হয়েছে। বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর আমের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
তেগুরিয়া গ্রামের আম চাষি জালাল উদ্দিন প্রধান বলেন, আমার ৮টি আম গাছে এবার আগেভাগে মুকুল এসেছে। এখন আমের ভালো ফলন পেতে ছত্রাকনাশক প্রয়োগসহ গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছি।
কচুয়া উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা সোফায়েল হোসেন জানিয়েছেন, কচুয়ার গাছে গাছে এখন প্রচুর আমের মুকুল। গ্রামগঞ্জ সর্বত্র আমগাছে মুকুলের সমারহ দেখা যাচ্ছে। গাছে গাছে অজস্র মুকুল দেখে বাম্পার ফলনের আশা করা যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত আম চাষী ও গাছ মালিকদের সঠিকভাবে মুকুল পরিচর্যা করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
প্রতিবেদক: জিসান আহমেদ নান্নু, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩