কচুয়ায় কৃষি শ্রমিকদের সুরক্ষায় বিশ্রামাগার নির্মাণ

বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খাত কৃষি। কৃষি খাতের এ অভাবনীয় অর্জনের পেছনে রয়েছে কৃষি শ্রমিকদের ঘাম ঝরানো শ্রম। কিন্তু এ গুরুত্বপূর্ণ খাতে নিয়োজিত শ্রমিকদের মাঠে-ঘাটে কাজ করার সময় ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষার কোনো প্রাতিষ্ঠানিক বা অন্য কোনো সুবিধা নেই। তাদের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা সৃষ্টির জন্যও নেই কোনো সুনির্দিষ্ট উদ্যোগ। এদিকে কৃষকদের স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষায় চাঁদপুরের কচুয়ায় স্থাপন করা হয়েছে কৃষকদের বিশ্রামাগার। উপজেলার ৬নং কচুয়া উত্তর ইউনিয়নের জলাতেতৈয়া বিলে কৃষকদের জন্য ইউনিয়ন পরিষদ উন্নয়ন সহায়তা তহবিল অর্থায়নে ইউপি চেয়ারম্যান এম আখতার হোসাইন মজুমদারের বাস্তবায়নে বিশ্রামাগার ও অগভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়।

জানা যায়, উপজেলার জলাতেতৈয়া বিলে প্রায় সহস্রাধিক কৃষক রবি মৌসুমে ফসল উৎপাদন করে থাকে। ফলে কৃষককে মাঠে-ঘাটের নোংরা কাদামাটির ওপর বসেই খাবার খেতে হয়। কাছাকাছি কোনো নিরাপদ পানির উৎস না থাকায় মাঠ বা ডোবার পানি খেতে হয়। কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা না থাকায় উন্মুক্ত স্থানে প্রাকৃতিক কাজ সম্পন্ন করতে হয়, ফলে পরিবেশ দূষিত হয়। রৌদ্র, বজ্রপাত ও বৃষ্টিপাত থেকে কৃষকদের সুরক্ষার জন্য আশ্রায়ন হিসেবে কৃষকদের বিশ্রামাগার নির্মান করা হয়। ফসল উৎপাদনের সময় কৃষকরা ক্লান্তি হলে একটু বিশ্রামের জন্য আসেন এই আশ্রায়নে। অনেক কৃষকদের দেখা যায় কেউ বসে গল্প করেন এবং আবার কেউ বসে খাবার খাচ্ছেন।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, এ বিলে আমাদের অনেক ফসলি জমি রয়েছে। এ জমিতে আগে আমরা যখন কাজ করতে যেতাম তখন রোদ-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে কাজ করতে হতো। অনেক কৃষি শ্রমিককে দেখতাম জমির আইলে বসে অনেকটা কাদামাখা হাতে রোদের ভেতরে খাবার খেতে কিন্তু এখন তারা বিশ্রামাগারে এসে নলকূপের পানি ব্যবহার করতে পারছেন বলেও জানান তারা।

ইউপি চেয়ারম্যান এম. আখতার হোসাইন মজুমদার বলেন, এলাকাজুড়ে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ, যেখানে কোনো ধরনের নলকূপ, স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট ও বিশ্রামের জন্য কোনো স্থাপনা নাই। এমনকি ছায়া দেয়ার মতো কোনো বড় গাছও নেই। কৃষক ও দিনমজুরের এ সমস্যা সমাধানে আমরা বিশ্রামাগার নির্মাণ করতে পারায় খুবই ভালো লাগছে। বিশ্রামাগার ব্যবহারের ফলে কৃষি শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত হয়েছে।

প্রতিবেদক: জিসান আহমেদ নান্নু, ১০ নভেম্বর ২০২৩

Share