বিনোদন

ওমর সানী যখন কাপড় ব্যবসায়ী

বিনোদন ডেস্ক :

বসুন্ধরা সিটির দ্বিতীয় তলায় ‘ফ্রি জোন’ নামের একটি শো-রুমে বসে কাপড় বিক্রি করছেন নব্বই দশকের সাড়া জাগানো নায়ক ওমর সানী। শপিং করতে এসে অনেকেই ঘাড় কাত করে তাকিয়ে দেখছেন তাকে। আবার কেউ কেউ এসে ছবি তুলছেন, অটোগ্রাফ নিচ্ছেন— সে ছবি আবার ফেসবুকে শেয়ার করছেন।

না, এ দৃশ্য কোনো সিনেমার নয়। একদম বাস্তব। বিশ্বাস না হলে গিয়ে দেখে আসতে পারেন।

শোবিজ তারকাদের অনেকেই এখন মিডিয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ওমর সানীর কাপড় বিক্রেতা হওয়ার ঘটনাটাও তো তেমন। অনেকেই হয়তো জানেন বেশ কয়েক বছর আগে ওমর সানী-মৌসুমী বসুন্ধরা সিটিতে ‘ফ্রি জোন’ নামে পোশাকের শো-রুমটি চালু করেন। তাই ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রমজানের বেশিরভাগ দিন দোকানে সময় দিচ্ছেন ওমর সানী।

ওমর সানীর সঙ্গে আড্ডা দিতেই বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) বিকেলে বসুন্ধরা সিটির ‘ফ্রি জোন’ এ এক চক্কর ঘুরে আসা। দোকানে প্রবেশ করতেই স্বাগত জানালেন ‘চাঁদের আলো’ খ্যাত এ তারকা। প্রথমেই বিক্রিবাট্টা নিয়ে জানতে চাইলে জনপ্রিয় এ চিত্রনায়ক বলেন, ‘এখনো তেমন চাপ শুরু হয়নি। এবার ক্রেতার সংখ্যাও কমেছে। এর জন্য পাড়ার দোকানগুলো কারণ হতে পারে।’

পাড়ার দোকানগুলোর জন্য ক্রেতা কমেছে!— বিস্তারিত জানতে চাইলে ওমর সানী বলেন, ‘এখন যেখানে-সেখানে যে কেউ দোকান খুলে বসেছে। এর জন্য কোনো অনুমোদনও নিতে হচ্ছে না। ফলে মার্কেটগুলোতে ক্রেতা কমেছে। আমাদের দেশে তো অনেক কিছুতেই নীতিমালা নেই। নীতিমালা থাকলেও তার ব্যবহার হচ্ছে না। এগুলো নিয়মের মধ্যে আনতে হবে। মুদির দোকানের পাশে আমি কেন কাপড়ের দোকান দেব। কোন ব্যবসা কোথায় হবে এটা নিয়মের মধ্যে আনতে হবে। সেটা যদি না করা হয় তবে মার্কেটের প্রয়োজন কী?’

ওমর সানীর এই প্রশ্নের উত্তর রাষ্ট্রীয় নীতি-নির্ধারকরা দেবেন। আপাতত চলুন জেনে নেওয়া যাক কীভাবে কাপড়ের ব্যবসায় এলেন তিনি। এ প্রসঙ্গে বলেন, “প্রায় এক যুগ আগে ‘দি লিভাইস’ নামে আমাদের একটি ফ্যাশন হাউজ ছিল। এরপর এটি বন্ধ করে দিয়ে ‘ফ্রি জোন’ নামের নতুন হাউজ গড়ে তুলি। বসুন্ধরা সিটিতে শো-রুম নেওয়ার ৭ বছর হয়ে গেল। ‘ফ্রি জোন’ নামটি আমাদের ছেলে ফারদিনের দেওয়া।”

তিনি আরও বলেন, “ধর্মীয়ভাবে কিন্তু কাপড়ের ব্যবসা পবিত্র। আমাদের নবী এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। মৌসুমীকে নিয়ে প্রায়ই বিভিন্ন ব্যবসা নিয়ে কথা বলতাম। মৌসুমীরও ফ্যাশন ডিজাইনের প্রতি ঝোঁক রয়েছে। দুজন মিলে ভাবলাম ফ্যাশন হাউজটাই ভাল হবে। পরে ‘দি লিভাইস’ নামে শুরুও করেছিলাম। পরে সেটি আরও বর্ধিতরূপে সাত বছর আগে ‘ফ্রি জোন’ হয়েছে।”

মিডিয়ার ব্যস্ততার মাঝে ব্যবসায় সময় দিতে পারেন?— এবার ওমর সানীর উত্তর, “একটু সময় তো দিতেই হবে। আমাদের পোশাকগুলোর বেশিরভাগ ডিজাইন করেছে মৌসুমী ও আমাদের মেয়ে ফাইজা। ফ্যাশন ডিজাইনের প্রতি খুবই আগ্রহ ফাইজার। ভবিষ্যতে ফ্যাশন ডিজাইন নিয়েই সে পড়াশুনা করবে। তখন এই ব্যবসাটার হাল ধরবে সে। ছেলেটার আগ্রহ চলচ্চিত্র পরিচালনায়। এবারের ঈদে চ্যানেল আইয়ের জন্য ‘ডেস্টিনেশন’ নামের একটি টেলিফিল্ম নির্মাণ করেছে। এতে আমি অভিনয় করেছি।”

পোশাক ব্যবসা নিয়ে ওমর সানীর বিস্তৃত পরিকল্পনা রয়েছে। সে সম্পর্কে বলেন, “আগামী বছর ঢাকার বাইরে দুটি শহরে ‘ফ্রি জোন’ এর শো-রুম করা হবে। এখন শুধুমাত্র বসুন্ধরা সিটিতেই শো-রুম রয়েছে। মিরপুরে রয়েছে ‘ফ্রি জোন’ এর কারখানা।”

মিডিয়ার ব্যস্ততা সম্পর্কে জানতে চাইলে এ অভিনেতা বলেন, ‘এবারের ঈদে মাছরাঙা টিভির ‘সবজান্তা শমসের’ নামের একটি অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেছি। ২৫ বছরের ক্যারিয়ারে আমি কখনোই উপস্থাপনা করিনি। এটা আমার জন্য অন্যরকম একটি ঘটনা। অনুষ্ঠানটি মাছরাঙার ঈদ আয়োজনে প্রচার হবে। আশা করি ভাল লাগবে সবার।’

মাঝে কয়েক বছর বড়পর্দায় ওমর সানীকে খুব একটা দেখা যায়নি। এখন আবার নিয়মিত হয়েছেন। তবে ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত কোনো সিনেমায় এ নায়ককে দেখা যাবে না। টেলিভিশনে বেশ কিছু অনুষ্ঠানে তাকে পাওয়া যাবে। এর মধ্যে রয়েছে আগে উল্লেখিত টেলিফিল্ম ‘ডেস্টিনেশন’। ঈদের ৫ম দিন বিকেল সাড়ে ৪টায় টেলিফিল্মটি প্রচার হবে চ্যানেল আইয়ে।

ওমর সানী সম্প্রতি চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন ‘রাজা বাবু’ চলচ্চিত্রে। এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এখন চরিত্র ধরে অভিনয় করার চেষ্টা করছি। আগে গল্প জেনে পছন্দ হলে অভিনয় করছি। অনেক তো সিনেমা করা হয়েছে। মানহীন সিনেমায় অভিনয় করে নিজেরে আগের অর্জনগুলোকে হারাতে চাই না। ভাল কাজের মধ্য দিয়ে মানুষের মাঝে বেঁচে থাকতে চাই।’

আপডেট :   বাংলাদেশ সময় : ০৪:৩৭ অপরাহ্ন, ১৯ আষাঢ় ১৪২২ বঙ্গাব্দ, শুক্রবার ০৩ জুলাই ২০১৫ খ্রিস্টাব্দ

 চাঁদপুর টাইমস : প্রতিনিধি/এমআরআর/২০১৫

চাঁদপুর টাইমস ডট কমপ্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি

Share