করোনা ভাইরাসে অতিমারির কারনে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আগামি ১ লা মুহাররাম ১৪৪৩ হিজরী মোতাবেক ১০ অগাস্ট ২০২১ ঈসায়ী থেকে সৌদি আরব পুনরায় আন্তর্জাতিক ওমরাহ খোলার ঘোষণা দিয়েছে। ১৪৪২ হিজরীর হজের পর পবিত্র বায়তু্ল্লায় পৌঁছেছে দেশটিতে বসবাসরত ওমরাহ পালনকারী প্রথম দল।
১৪৪৩ হিজরির মহররমের ১ তারিখ থেকে বিদেশিরাও ওমরাহ পালন করতে পারবে বলে জানিয়েছে, সৌদির হজ ও ওমরাহ বিষয়ক জাতীয় কমিটির সদস্য হানি আল-ওমাইরি।
গ্রহণযোগ্যতা এবং শর্ত সমূহ : নয়টি দেশ ছাড়া বাকি সব দেশ সরাসরি ওমরাহর ফ্লাইট পাঠাতে পারবে।
এক্ষেত্রে শর্ত হলো কোভিড ১৯ প্রতিরোধী টিকা পুর্ণ ডোজ গ্রহণ করতে হবে। গ্রহণযোগ্য টিকা সমূহ হলো:- ফাইজার, মডার্না, অ্যাস্ট্রাজেনেকা অথবা জনসন এন্ড জনসন।
(চীনের আবিষ্কৃত টিকা পুর্ণ ডোজ গ্রহণের পর যদি বোস্টার ডোজ হিসেবে উপরোক্ত টিকাগুলোর কোনো একটি নিয়ে থাকে তাহলে তা গ্রহণযোগ্য হবে অন্যথায় নয়।)
ওমরাহ যাত্রীর বয়স ১৮ বছরের উপরে হতে হবে এর নিচে গ্রহণযোগ্য নয়।
নিজ দেশের কোনো উমরা এজেন্সির ভায়া না হয়ে যাত্রী নিজে সরাসরি সৌদী আরবের হজ এবং উমরা মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে ভিসা নিয়েও আসতে পারবেন।
নিষিদ্ধ নয়টি দেশ হলো:- ইন্ডিয়া, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, মিশর, তুর্কি, আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং লেবানন। উল্লেখিত দেশগুলো থেকে ওমরাহয় আসতে হলে তৃতীয় কোনো দেশে গিয়ে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইন করে তারপর আসতে হবে। এক্ষেত্রেও ভ্যাক্সিনের শর্ত বহাল থাকবে।
একটি সূত্র জানায়, প্রায় ৫০০ সংস্থা ও ঠিকাদারকে আগামী মহররম মাসের ১ তারিখ থেকে বিদেশি ওমরাহ পালনকারীদের গ্রহণ করার জন্য প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। তবে যারা মহামারি করোনা ভাইরাসের টিকা নেওয়া সম্পন্ন করেছে তারাই কেবল ওমরাহ করার অনুমতি পাবে।
আরেকটি তথ্য মতে, করোনাভাইরাস থেকে সর্তকতা অবলম্বন ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ওমরার জন্য নির্দিষ্ট দরজা দিয়ে ২৫ জুলাই রোববার থেকে কাবা চত্বরে প্রবেশ করছেন ওমরাহ পালনকারীরা।
নীতিমালা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ওমরাহযাত্রীদের লক্ষ্য করা উচিত যে, ইবাদাতের নির্দিষ্ট স্থানগুলো কোভিড-১৯ স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী নির্ধারিত করা হয়েছে। তওয়াফ করার সময় ওমরাহযাত্রীদের মেঝের চিহ্নগুলো অনুসরণ করতে হবে যেমন হজ চলাকালীন এবং গোটা মহামারিজুড়ে দেখা গিয়েছিল।
করোনা মহামারির কারণে সদ্যসমাপ্ত হজে সউদী আরবের বসবাসরতদের মধ্যে থেকে ৬০ হাজার মানুষকে অনুমতি দেয়া হয়েছিল। তবে মোট ৫৮ হাজার ৫১৮ জন হজ পালন করেছেন। এর মধ্যে ৩২ হাজার ৮১৬ জন পুরুষ এবং বাকী ২৫ হাজার ৭০২ জন মহিলা। এ নিয়ে টানা দ্বিতীয়বার সউদী সরকারকে কোভিড-১৯ এর কারণে হজযাত্রীদের সংখ্যা হ্রাস করতে হয়। ২০২০ সালে মহামারির কারণে মাত্র ১০ হাজার জন হজের অনুমতি পেয়েছিলেন।
কর্তৃপক্ষ করোনা সংক্রমণের কোনো ঘটনা রেকর্ড করা হয়নি উল্লেখ করে বার্ষিক অনুষ্ঠানের ‘সফল’ সমাপ্তির ঘোষণা দেয়। সউদী স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. তৌফিক আল-রাবিয়া বলেছেন, ‘আমি ঘোষণা করতে চাই যে, এবার হজ সফল হয়েছে, করোনা মহামারি বা অন্য কোনো সংক্রমণের খবর পাওয়া যায়নি’।
প্রতিবেদক: সাগর চৌধুরী, ২৬ জুলাই ২০২১