চিকিৎসক থেকে পুষ্টিবিদ,সকলেরই পছন্দের খাতায় নাম লিখিয়েছে মিষ্টি আলু। যদিও নাম শুনলে অনেকেই নাক সিঁটকিয়ে ওঠেন। কিন্তু রকমারি মশলার সংমিশ্রণে রান্না করলে সুস্বাদু পদ হিসেবে খেতে পারবেন। মিষ্টি আলুর উপকারিতা শুনলে এটি আপনার বাজারের তালিকায় নতুন সংযোজন হতে বাধ্য। এনিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন আইসল্যান্ডের পুষ্টিবিদ আদ্দা ব্যারনাদোত্তির।
প্রথমেই পুষ্টিবিদ ব্যাখ্যা করলেন মিষ্টি আলুর পুষ্টিগুণ। ১০০ গ্রাম কাঁচা মিষ্টি আলুর মধ্যে মধ্যে কী কী থাকে?
ক্যালোরি: ৮৬, জল: ৭৭ শতাংশ, প্রোটিন: ১.৬ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট: ২০.১ গ্রাম, চিনি: ৪.২ গ্রাম, ফাইবার: ৩ গ্রাম, চর্বি (ফ্যাট): ০.১ গ্রাম।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি থেকে শুরু করে হজমক্রিয়া উন্নত করা,সব কিছুতেই উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে এই সবজির। নামে ‘আলু’ থাকলেও পুষ্টিগুনের দিক থেকে সাধারণ আলুর সঙ্গে এর তেমন মিল নেই। মিষ্টি আলুর উপকারিতা নিম্মরূপ –
চোখের স্বাস্থ্যের উন্নতি:
ভিটামিন এ-এর মতো পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায় মিষ্টি আলুতে, যা চোখের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে খুব কার্যকর। এ ছাড়াও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এই সবজি খেলে। ভিটামিন এ ছাড়াও ভিটামিন সি-র উপস্থিতি কোলাজেন উৎপাদন এবং ত্বকের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। বিটা-ক্যারোটিন এমন এক অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, যেটিকে শরীর ভিটামিন এ-তে পরিণত করে। মিষ্টি আলুতে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় এই উপাদানটি। এটি দৃষ্টিশক্তি ভাল রাখতে সাহায্য করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাবৃদ্ধি:
শরীরের মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টগুলি কোষের যে কোনও ক্ষতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে পারে। চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে ডায়েটে মিষ্টি আলু রাখুন, তাতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়তে পারে। ঋতু পরিবর্তনের সময় যখন শরীরে ঘন ঘন রোগ বাসা বাঁধে, তখন মিষ্টি আলুই মুশকিল আসান।
হজমপ্রক্রিয়ার উন্নতি:
ঘন ঘন অ্যান্টাসিড না খেয়ে মিষ্টি আলুতে ভরসা রাখুন। হজমের সমস্যা মোকাবিলা করার প্রাকৃতিক উপায়। মিষ্টি আলু ডায়েটারি ফাইবারের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। ডায়েটারি ফাইবার হজমের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে। মিষ্টি আলু সিদ্ধ বা মিষ্টি আলু ভাজা হালকা,পুষ্টিকর খাবারের মধ্যেই পড়ে।
ওজন নিয়ন্ত্রণ:
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা, মেদ ঝরানো, রোগা হওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভোগেন? খাওয়া দাওয়া ছেড়ে জিমে গিয়ে ঘাম ঝরানোর চেয়ে মিষ্টি আলুর উপর ভরসা রাখতে পারেন। এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যেমন রয়েছে, তেমনই এটিতে ক্যালোরির পরিমাণ বেশ কম। মিষ্টি আলু খেয়ে অনেক ক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখতে পারেন আপনি। ফলে অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকতে পারবেন। যার ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। ধনেপাতা, জিরে এবং গোলমরিচের মতো কিছু ভেষজ এবং মশলায় মিশিয়ে মিষ্টি আলু খেতে পারেন। স্বাস্থ্যকর ও সুস্বাদু।
২০ এপ্রিল ২০২৫
এজি
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur