চাঁদপুর শহরের ডাকাতিয়া নদীর পশ্চিম পাড়াস্থ ঐতিহাসিক একটি বাণিজ্যিক এলাকা পুরাণবাজার। প্রসিদ্ধ এই বানিজ্যিক এলাকাটি শুধুমাত্র মাদকের কালিমা মাথায় নিয়ে তার ঐতিহ্যের গৌরব হারাতে বসেছে।
মুষ্টিময় কিছু অসাধু ব্যক্তির কারণে মাদকের অভয় অরণ্য বনে যাওয়া ওই এলাকায় গত কয়েক বছরে মাদক বিক্রির সাথে পাল্লা বেড়েছে সেবনকারীর সংখ্যাও।
এর সাথে সংশ্লিষ্ট কিছু পরিবার লাখোপতি ও একাধিক বাড়ির মালিক বনে গেলেও বহু যুবকের প্রাণ অকালেই ঝরে গেছে। এছাড়াও বর্তমানে অনেক যুবকই তাদের অভিশপ্ত জীবন নিয়ে মৃত্যুর প্রহর গুনছে।
স্থানীয় সচেতন মহলের দাবি জেলার পুলিশ প্রশাসনের মাদক বিরোধী অভিযানে অপরাধীরা আটক হলেও আদালত থেক তাদের জামিন পাওয়ার সহজলভ্য হওয়ায় এবং অল্প অর্থ ব্যয়ে অধিক লাভবান হওয়ায় অন্যানরাও এ ব্যবাসার সাথে জড়িয়ে পড়ছে।
এ কাজের সাথে জড়িতদের অধিকাংশরা হলো সরকারি দলের রাজনৈতিক পরিচয় বহন করা কিছু উঠতি বয়সের যুবক। যার ফলে পুরাণবাজার এলাকাটি দিনে দিনে মাদকসেবী ও বিক্রেতাদের স্বগরাজ্যই বনে যাচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ‘বিগত ১০ বছরে চাঁদপুরে ব্যাপকহারে ফেনসিডিল ও ইয়াবা প্রবেশ করেছে। এতে পুরাণবাজারে মাদক সেবন এবং বিক্রি কয়েকগুনে বৃদ্ধি পেয়েছে। একটা সময় অত্র এলাকায় প্যাথোডিন ইনজেকশনের ছরাছরি থাকলেও বর্তমানে গাঁজা ও ইয়াবা বেশি বিক্রি হচ্ছে। তাদের দাবি এসকল অপব্যবসায়ীরা প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই তাদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
‘পুরাণবাজার ফাঁড়ি পুলিশ মাঝে মধ্যে দু’চারজনকে সন্ধ্যায় আটক করে আদালতে প্রেরণ করলেও অনেকেই আবার রাত পোহানোর আগেই ছাড়া পেয়ে যায়’।
এছাড়াও চাঁদপুরের সুযোগ্য পুলিশের সুপারের নির্দেশে সম্প্রতিক সময়ে জেলা পুলিশের মাদক বিরোধী অভিযানে একাধিক মাদক বিক্রেতা আটক হলেও এর পাইকারি চালানদাতা ও মূল হোতারা ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, পুরাণবাজার বাদিয়া বাড়ি খালের উপর নির্মিত মেয়র রোড়, পশ্চিম বাজার দুধপট্টি বস্তি, মধশ্রীরামদী কবরস্থান, বউ বাজার, আইল্লার বিল, গাজি বাড়ি, নতুন রাস্তা, হরিসভা, লোহারপুল, জাফরাবাদসহ বেশ কিছু এলাকায় সকাল থেকে গভির রাত পর্যন্ত প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি হচ্ছে। গত কয়েক বছরের ওই এলাকার মাদকাসক্ত যুবক এমদাদ ছৈয়াল (৪০), কালু (২০), তায়েফ (৩৪), (দুধু মিয়া (২৮),সহ প্রায় ১০ যুবকের অকাল মৃত্যু ঘটেছে।
এদিকে চাঁদপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার এই জেলায় যোগদানের পর থেকেই মাদকের বিষয়ে জিরো ট্রলারেন্স ঘোষণা করেন। গত কয়েক মাসে পুলিশ সুপারের নির্দেশে জেলা পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশের মাদক বিরোধী অভিযানের ফলে বর্তমানে মাদক ব্যাবসাহীদের একটি অংশ গা ঢাকা দিয়েছে। তবে সাময়িক সময়ের জন্য তারা গা-ঢাকা দিলেও ভ্রাম্যমান মাদক বিক্রেতাদের মাধ্যমে তাদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
পুরাণবাজারের হারনো গৌরব ফিরিয়ে আনা তথা এই অঞ্চলের যুবসমাজকে রক্ষায় চাঁদপুরের জেলা প্রশাসন, পুলিশ সুপার ও ক্ষমতাশিল রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের সুদৃষ্টি কামনা করেছন অভিবাবক মহল।
না হলে মাদকের হিংস্ত্র থাবায় জেলার যুব সমাজের বড় একটা অংশ অচিরেই ধ্বংস হয়ে যাবে।
প্রতিবেদক- আশিক বিন রহিম