পবিত্র রমজানে মাসে দীর্ঘ ৩০ বছর পর কামান ব্যবহার করে ইফতারির সময় সম্পর্কে জানাবে মিসর। গতকাল মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) তিন দশক পর প্রথম বারের মতো কামানটি ব্যবহার করা হয়।
মিডফা আল ইফতার বা ইফতারের কামানটি কয়েক শতাব্দির পুরোনো। মিশরের প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা সংস্কারের অংশ হিসেবে ১৯৯২ সালে কামানটির ব্যবহার বন্ধ করা হয়। এরপর থেকে দীর্ঘ ৩০ বছর বন্ধ ছিল। মিসরের রাজধানী কায়রোর ঐতিহাসিক সালাহ উদ্দিন দূর্গে থেকে কামান ব্যবহার করা হয়।
পবিত্র রমজান মাসে সূর্যোদয়ের সময় রোজার শুরু ও সূর্যাস্তের সময় রোজার সমাপ্তি সম্পর্কে অবগত করতে বিশেষভাবে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়। রমজান মাস শুরুর আগে কামানের পরীক্ষামূলক ব্যবহার সম্পন্ন হয়। মিশরের পর্যটন ও প্রত্নতত্ত্ব মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে একথা জানায়।
মিদফা আল ইফতার তথা কামানা নিক্ষেপের মাধ্যমে ইফতারের সময় জানান দেওয়া মিসরীয়দের একটি প্রাচীন ঐতিহ্য। সাহরি ও ইফতারের সময় কামানের ধ্বনি দিয়ে মানুষকে সতর্ক করার কাজটি অত্যন্ত সুচারুভাবে পালন করে মিশরীয়রা।
জাদুঘর এবং প্রত্নতাত্ত্বিক পর্যটন বিষয়ক উপমন্ত্রী ইমান জিদান বলেছেন, দুর্গের প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখতে পুরো মাস ধরে কামানটি চালানোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
১৪৬০ সালে মামলুক সুলতান খাসকাদুমকে একজন জার্মান কামানটি উপহার হিসেবে প্রদান করেন। পরীক্ষার জন্য সূর্যাস্তের সময় কামান দিয়ে গোলা নিক্ষেপ করা হয়। ঠিক ওই সময়টি ছিল মাগরিবের সময়, যখন রোজা শেষ হয়।
রোজার সময় সমাপ্তির নির্দেশক হিসেবে কামানের গোরা নিক্ষেপ পক্রিয়াটি শহরবাসীর পছন্দ হয়। পরবর্তীতে রমজানের সাহরি ও ইফতারের সময় জানাতে মাসব্যাপী কামানটি চালাতে স্থানীয় আলেম ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গরা সুলতানকে পরামর্শ দেন।
ইফতারের কামান অনেক দেশের মুসলিমদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। অবশ্য পরবর্তীকালে সাহরি ও ইফতারে সময় জানাতে ফাঁকা গুলিসহ বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করা হয়। তবে কামানের গোলা নিক্ষেপ রমজানের বিশেষ ঐতিহ্য হিসেবে মুসলিম দেশগুলোতে এখনও পালিত হয়।
ঢাকা চীফ ব্যুরো, ১৪ এপ্রিল, ২০২১;