ফরিদগঞ্জ

ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে এনে ফরিদগঞ্জে পালকি করে বিয়ে

একটা সময় ছিল গ্রাম বাংলায় পালকি ছাড়া বিয়ের কথা কল্পনাই করা যেতো না। কিন্তু কালের বিবর্তনে ধীরে ধীরে গ্রামীণ জনপদে এ লোকজ ঐতিহ্য হারিয়ে গেছে, মানুষ প্রবেশ করেছে যান্ত্রিক সভ্যতায়।

পালকির স্থলে বিয়েতে যোগ হয়েছে গাড়ি। বিগত শতাব্দির শেষ দুই দশক হতে চার বেড়া এই ছোট্ট ঘরটিতে করে বর কনে শ্বশুর বাড়িতে যাত্রার দৃশ্যটি আর চোখে পড়ে না।

একবিংশ শতাব্দির ২য় দশকের শিশু কিশোররা তো নয়ই যাদের বয়স ৩০-৪০ হয়েছে তারাও হয়তো পালকির কথা শুনেছে। কিন্তু পালকি চোখে দেখেনি।

আমাদের গ্রাম বাংলার লোকজ শিল্পী থেকে শুরু করে আরো অনেক ঐতিহ্যের সাথে পালকিও হারিয়ে গেছে লোকালয় হতে।

কিন্তু নিজের কৃষ্টি, সভ্যতা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে মন থেকে হারিয়ে যেতে দেননি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার সুবিদপুর পশ্চিম ইউনিয়ন সাচনমেঘ মজুমদার বাড়ির হাজী আবুল খায়ের মজুমদার।

আগ থেকেই তিনি ইচ্ছা করেছিলেন তার মেঝো ছেলে সৌদি প্রবাসী মো. শরিফ হোসেন মজুমদারের বিয়ে দেবেন পালকিতে করে।

যে কথা সে কাজ, দীর্ঘদিন খুঁজে চাঁদপুরে পালকি না পাওয়ায় অবশেষে মেঘনার ওপাড় শরীয়তপুর হতে দুটি পালকি ভাড়া করে এনে শুক্রবার (৭ অক্টোবর) ছেলেকে পাঠালেন কনের বাড়িতে।

বিয়ের সব আয়োজন শেষে যখন নববধূ শারমিন এবং বর শরীফ মজুমদারকে নিয়ে বেহাড়ারা তাদের চিরাচরিত নিয়ম অনুযায়ী বিভিন্ন ঝারি সারি গেয়ে গেয়ে রাস্তা দিয়ে যখন যাচ্ছিল সে সময় রাস্তার দু’পাশে শত শত নারী পুরুষ একনজর পালকি দেখার জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।

সব চাইতে বেশি আনন্দ পেয়েছে শিশুরা, শত শত শিশু পালকি দেখতে রাস্তার দু’পাশে ও বিয়ে বাড়িতে ভিড় জমায়।

হাজী আবুল খায়ের মজুমদারের এমন ব্যতিক্রমী আয়োজনকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সবাই। পাশাপাশি আমাদের গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অনেকেই।

নিউজ ডেস্ক ।। আপডটে, বাংলাদশে সময় ৬:৩০ পিএম, ৮ অক্টোবর ২০১৬, শনিবার
এইউ

About The Author

প্রতিবেদক- এবি সিদ্দিক, ফরিদগঞ্জ উত্তর করেসপন্ডেন্ট
Share