ফিচার

এ কোন ভাইরাসে আক্রান্ত সমাজ?

মুহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল | আপডেট: ১১:০৮ অপরাহ্ণ, ১৮ আগস্ট ২০১৫, মঙ্গলবার

‘হ্যালো জান! আই এম আন হ্যাপি জাস্ট ফর ইউ; আমি পৃথিবীর অন্য কোনোকিছুই চাই না, চাই শুধু তোমাকে…।’

রাত তখন ২টা; চাঁদপুর টু ঢাকা ময়ূর-২ লঞ্চের প্রথম শ্রেণিতে যাত্রীদের অনেকেই ঘুমাচ্ছেন; অনেকে হয়তো আড়ি পেতে কথাগুলোর স্পর্শকাতরতা অনুভব করছেন।

হঠাৎ ত্রিশোর্ধ এক তরুণ ভদ্রভাষায় বললেন, ‘আপু এবার বন্ধ করা যায় না?’

আগুনের তীব্রতার ভেতর ঝড়ো ধাক্কায় পাশে থাকা তেলের ড্রাম উল্টে পড়লো। এক নোংরা পরিবেশ সৃষ্টি হলো লঞ্চের প্রথম শ্রেণির কামরায়। অশালীন ভাষায় ত্রিশোর্ধ একজন গৃহবধূ চালিয়ে যাচ্ছেন তার কর্ম। থামানোর যেনো কোনো লোক নেই!

হঠাৎ মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি! প্রবাসীর ফোন- ‘জান! তুমি ঘুমাওনি?’ ঘুমের ভাণ করে এতো লোকের সামনেই, ‘জান! আমি ঘুমাচ্ছি, আমার প্রচন্ড মাথাব্যাথা বাবুকে সকালে স্কুলে পাঠিয়ে কথা বলবো।’

উপস্থিত কারো আর বুঝতে বাকি রইলো না ইনি কে? কোথায় যাচ্ছেন? লঞ্চের ম্যানেজারকে ডেকে সবার অনুরোধে ভদ্র (!) মহিলাকে একটি কেবিনে পাঠিয়ে আপাতত পরিবেশ বসার উপযোগী করা হলো।

পিনপতন নীরবতায় ষাটোর্ধ একজন ভদ্রলোক বলে উঠলেন, ‘আহ, মোবাইল!’

আমার ঘুম আসছিলো না। লঞ্চের বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালাম।

চারজন তরুণ একসঙ্গে এতো রাতে মোবাইল দেখছে। হঠাৎ আমার নজর সেদিকে যেতেই চোখাচোখি হলো তাদের সাথে। তারা মোবাইলটি বন্ধ করে চুপচাপ বসে থাকলো।

আমি কিংকর্তব্য বিমূঢ় হয়ে আমার অবস্থানে চলে আসলাম।

আমার ক’জন বন্ধু; যারা বর্তমানে স্কুল-কলেজে শিক্ষকতা করছেন; তাদের কাছে শোনা। আজকাল স্কুল শিক্ষার্থীরা গ্রুপ করে মোবাইল কিনছে। এক সপ্তাহে একেকজনের কাছে থাকে এ মোবাইল। ক্লাস চলাকালীন সময়েও চলে মোবাইলে ভিডিও দেখা। এমন ক’টি মোবাইল জব্দ করার পর দেখা গেলো মোবাইল মেমোরিতে যা রয়েছে, তা সুস্থ মস্তিস্কে দেখার মতো নয়।

গত ক’দিন আগে গিয়েছিলাম ক’টি মোবাইল কাস্টমার কেয়ার দোকানে। পরিকল্পিতভাবে এক ঘণ্টা করে অবস্থান নিয়েছি নির্দিষ্ট স্থানে।

বাস্তবতা এবং তথ্য অনুযায়ী শতকরা ৮০ জন আসেন মোবাইলে ইন্টারনেট চালানো বিষয়ে সমস্যা নিয়ে। আগন্তুকদের ৮০ ভাগই যুবক-যুবতী।

সমাজের একশ্রেণির লোক যেনো অন্ধ এবং বধির হয়ে গেছে। মোবাইল প্রেম যেন ভাইরাসের মতো আক্রান্ত করে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে সমাজের ছোট থেকে বড় সব বয়সের নারী-পুরুষকে।

মোবাইল ভাইরাসের ভয়াবহতা এতটাই বেড়েছে যে, অপরিচিত নাম্বারে প্রথমে আলাপচারিতা। তারপর প্রণয়, এক সময় বিয়ে। অতপর যৌতুকের দাবিতে নির্যাতিত হয়ে পারিবারিক বন্ধন থেকে বিতাড়িত।

পত্রিকার পাতা অথবা টিভি স্ক্রিনে এমন কোনোদিন নেই, যে দিনগুলোতে আমরা এ ধরনের খবর পড়ছি অথবা দেখছি না।

এ ভাইরাস থেকে এখন মুক্ত নেই গৃহবধূ থেকে গৃহিনী, শিক্ষক থেকে শিক্ষার্থী, ডাক্তার থেকে আইনজীবী, ভিআইপি থেকে ব্যবসায়ী, এমনকি সাধারণ মানুষও। এটিকে এখন আর শুধুমাত্র সামাজিক অবক্ষয় বলেই শেষ করা যায় না, এটি এখন রীতিমতো ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।

একজনের দেখাদেখি অপরজন। এক পরিবারের পাশাপাশি অপর পরিবার। এক গ্রাম থেকে অপর গ্রাম। ছড়িয়ে পড়ছে মরণব্যাধির মতো গোটা দেশে।

আরবি প্রবাদবাক্য রয়েছে, ‘‘কোনো বস্তুর ভালোবাসা ব্যক্তিকে অন্ধ ও বধির করে দেয়।’’

অর্থাৎ মানুষ যখন কোনো বস্তুকে ভালোবাসে এবং তার ভালোবাসা সীমা ছাড়িয়ে যায়, তখন সে তার দোষ-ত্রুটি ও ক্ষতিকর দিক ভুলে যায়। ফলে সে তাতে কোনো দোষ-ত্রুটি দেখে না, তাতে কোনো বিপদ বা অকল্যাণ খুঁজে পায় না, যদিও তাতে অনেক দোষ-ত্রুটি, অনেক বিপদ ও অকল্যাণ থাকে। সে হারিয়ে ফেলে তার বিবেক; তার কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে গোটা সমাজ।

যেমন বলা হয়, ‘‘আমি তার ভালোবাসার কারণে কালো জিনিসকেও ভালোবাসি, এমনকি তার ভালোবাসার কালো কুকুরকেও ভালোবাসি; ভালোবাসি তার ইচ্ছা-অনিচ্ছা তার চাওয়া-পাওয়া, আনন্দ-বেদনা তার প্রতিটি মুহূর্ত।’’

সামাজিক এ অবক্ষয়ের অন্যতম একটি কারণ আধুনিক যুগে যুবক-যুবতীদের মাঝে ইন্টারনেটপ্রীতি, গভীর মনোনিবেশ সহকারে এর যথেচ্ছ ব্যবহার, কোনোপ্রকার ক্লান্তি অথবা বিরক্তিবোধ ছাড়াই দীর্ঘ সময় ধরে ইন্টারনেটের সামনে বসে থাকা এমনি একটি বিষয় যা সামাজিক ও চারিত্রিক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

যার ফলে আমরা হারাতে বসেছি আমাদের পারিবারিক ঐতিহ্য দেশীয় সংস্কৃতি। বিরোধ শুরু হয়েছে পিতার সাথে পুত্রের, ভাইয়ের সাথে ভাইয়ের, মায়ের সাথে কন্যার, বোনের সাথে বোনের, আত্মীয়ের সাথে আতœীয়ের।

এখানে সঠিক পথপ্রাপ্ত যুবক-যুবতীদের ব্যাপারে কথা বলছি না, যারা মোবাইল এবং ইন্টারনেটকে বৈধ প্রয়োজনে ব্যবহার করে অথবা জাতির কল্যাণে ব্যবহার করে অথবা বিভিন্ন কল্যাণকর অঙ্গনে ব্যবহার করে।

যেমন সৎ কাজের আদেশ, অসৎ কাজের নিষেধ, ইসলামের দিকে দাওয়াত, ইসলামের শত্রুদের জবাব দান, উত্তম চরিত্র ও উপকারী জ্ঞান বিজ্ঞানের প্রসার। আর তারা মাকড়সার জালের ন্যায় পৃথিবীতে ছড়িয়ে থাকা এ ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল উপকারী ও কল্যাণকর বিষয় সমূহ থেকে যথাসম্ভব উপকৃত হয়ে থাকে।

বরং কথা বলছি ওই সকল হাজার হাজার যুবক-যুবতী ও সমূহ বিপদগ্রস্তদের ব্যাপারে, যারা মোবাইল এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিপর্যস্ত হয়েছে, এতে কঠিনভাবে আসক্ত হয়েছে, এমনকি জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহ থেকে বিমুখ হয়েছে।

ফলতঃ ইন্টারনেট ও মোবাইল এদেরকে সন্ত্রাস ও বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডের দিকে ধাবিত করেছে।

বিশেষ করে তাদেরকে ইন্টারনেট কি কল্যাণ উপহার দিয়েছে?

আল্লাহর দিকে দাওয়াতের ক্ষেত্রে কোনো উপকারিতা কি তারা পেয়েছে? তারা কি ইসলামের শত্রুদের পদক্ষেপসমূহ চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছে? ইসলাম ও মুসলিমদের নিধন করার ব্যাপারে শত্রুদের ঘৃণা ও ষড়যন্ত্রসমূহ তারা কি চিহ্নিত করতে পেরেছে? তারা কি ইসলামী ওয়েবসাইটসমূহের মাধ্যমে উপকারী শরয়ী জ্ঞানসমূহ লাভ করতে সক্ষম হয়েছে?

তারা কি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির জ্ঞানলাভ এবং এর মাধ্যমে উন্নতি ও অগ্রগতির কারণসমূহ জানতে সক্ষম হয়েছে?

তারা কি পরিসংখ্যানবিদ্যা ও বিশিষ্ট বিষয়সমূহের ওপর নির্ভরশীল সামগ্রিক গবেষণাকর্ম সম্পাদন করতে সক্ষম হয়েছে?

তারা কি জাতির মর্যাদা পুনরুদ্ধার এবং অতীতের গৌরবগাঁথার ইতিহাস প্রসারে সক্ষম হয়েছে?

ইসলাম সম্পর্কে যে সকল অপপ্রচার ছড়ানো হয়েছে, তার জবাব দিতে সক্ষম হয়েছে? তারা কি পেরেছে আমাদের স্বাধীনাতার খ্যাতি পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে দিতে?

আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতিকে পশ্চিমা বিশ্বের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে। তারা কি পেরেছে আমাদের দেশের সফলতা তুলে ধরতে?

আসলে ইন্টারনেটের উপকারিতা বহুবিধ। অধিকাংশ যুবক এ সকল উপকারী বিষয়ের প্রতি গুরুত্বারোপ করে না।

তারা ইন্টারনেটকে ব্যবহার করে উলঙ্গ ছবি দেখার ক্ষেত্রে, অশ্লীল দৃশ্যসমূহ উপভোগ করার জন্য এবং এমন অবৈধ ওয়েবসাইট সমূহ খোঁজার ক্ষেত্রে, যা একজন যুবককে পাশবিক শক্তিতে বন্দী করে ফেলে আর পাশবিক কুপ্রবৃত্তির সামনে দুর্বল করে ফেলে।

তাকে শিক্ষাদেয় পশুর মতো আচরণ। ফলে তাকে ফলদায়ক উপকারী যে কোনো কাজ থেকে বিরত রাখে এবং তাকে সংকীর্ণ গন্ডীতে বন্দী করে রাখে।

অথচ এ ইন্টারনেট বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন ঘটনাবলীর মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য ব্যবহার করা যায়, এক কথায় যাকে ‘বিশ্বকে এক কক্ষে নিয়ে আসার মাধ্যম’ বলা যায়। এর মাধ্যমে উলঙ্গ ছবি দেখা অথবা পথভ্রষ্ট যুবক-যুবতীদের মাঝে যোগাযোগের মাধ্যমে এত বেশি সময় নষ্ট করা হয়, যে সময় তার জীবন উন্নয়নের কাজে ব্যবহার করা যেতো।

অপরদিকে মোবাইলের অপব্যবহারের কারণে প্রতিনিয়তই ঘর ভাঙ্গছে অনেক সংসারের। পরিবার থেকে পালিয়ে যাচ্ছে কন্যা সন্তানরা। বাবা-মায়ের খোঁজখবর নেয়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে সন্তানদের কাছ থেকে।

বিশ্লেষকদের মতে, মোবাইল এবং ইন্টারনেটের আড্ডায় নিমজ্জিত ৮০% যুবক পরবর্তীতে বিয়ে করে না। এদের ৭০% নিষিদ্ধ পল্লীতে যাতায়াত করে এবং উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। এদের ৫৫% তাদের পরিবারের কোনো খোঁজখবর নেয় না। এদের অধিকাংশই খারাপ ওয়েবসাইট সমূহের ঠিকানা বিনিময় করে, এমনকি তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমূহেও।

ফলে এটি শিক্ষা কার্যক্রকে বড়ই বাধাগ্রস্ত করে। ইন্টারনেটে আসক্ত অধিকাংশ শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবনের উপর কুপ্র্রভাব পড়ে। ইন্টারনেটে আসক্তি নৈতিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে গড়ে উঠার পরিবর্তে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব-সংঘাতের ঘটনা ঘটায়।

ইন্টারনেট পারিবারিক বন্ধনকে শিথিল করে দেয়, এর মাধ্যমে স্বাভাবিক বিবাহের মাধ্যমে গঠিত পরিবারতন্ত্র ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। ফলে পরিবারের পরিবর্তে অবৈধ পন্থার অবাধ জীবনযাপনে এরা অভ্যস্ত হয়ে উঠে।

এরা মনে করে যৌনতাই বিবাহের মূল উদ্দেশ্য। আর সে উদ্দেশ্য যদি বিবাহ ছাড়াই পূরণ করা সম্ভব হয়, তাহলে বিবাহের আর প্রয়োজন কি?

অথচ ইসলামের দৃষ্টিতে বিবাহ বন্ধনে আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য নিহিত রয়েছে। দেশে মোবাইল এবং কম্পিউটার সামগ্রীর মূল্য এবং ইন্টারনেট সংযোগ সস্তা হওয়ার ফলে অধিকসংখ্যক যুবক ইন্টারনেট জগতের দিকে ঝুঁকে পড়ার সুযোগ পায়।

অনেক রক্ষণশীল ও ইসলামী আন্দোলনের সাথে জড়িত পরিবারের সন্তানদের অনলাইন মোবাইল ব্যবহারের ফলে নৈতিকতা দুর্বল হয়ে পড়ে।

প্রশ্ন হচ্ছে, একজন মুসলিম কি সবকিছুর সাথে সম্পর্ক রাখতে পারে অথবা তা রাখা উচিত?

একজন বুদ্ধিমান যুবক যে তার নিজের, তার দ্বীনের, তার জাতির সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখবে, অথচ সে কি চরিত্র বিধ্বংসী অশ্লীল দৃশ্য, উলঙ্গ ছবি দেখা এবং মোবাইলে অশালীন কথা বলার মাধ্যমে তার মূল্যবোধ ধ্বংস করে দেবে?

অথচ যেখানে অমুসলিম যুবকেরা এ সংযোগের মাধ্যমে জ্ঞানভিত্তিক গবেষণা, বিশ্বজগৎ নিয়ে গবেষণা এবং নতুন নতুন আবিষ্কারের মাধ্যমে উন্নতি ও অগ্রগতির শীর্ষে পৌঁছে যাচ্ছে।

মহান রব আমাদের কেনো সৃষ্টি করেছেন তা আমরা কি বেমালুম ভুলে যাচ্ছি? আমরা কি ভুলে যাচ্ছি আমাদের মরতে হবে? কিয়ামতের মাঠে এ পৃথিবীর সকল কর্মের হিসেব আমাদের কাছ থেকে নেয়া হবে।

আমাদের সঠিক পথে পরিচালিত হওয়ার জন্যই মহান আল্লাহ অনুগ্রহ করে আমাদের মাঝে বিশ্ব নবী (স.)-এর মাধ্যমে পাঠিয়েছেন সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ আল-কোরআন।

কোরআনে আল্লাহ ঘোষণা করেছেন, ‘সেদিন তাদের মন্দ কাজগুলো তাদের কাছে স্পষ্ট প্রকাশ হয়ে পড়বে, এবং সে বিষয়টিই তাদের পরিবেষ্টন করে নেবে যে ব্যাপারে তারা হাসি-ঠাট্টা করে বেড়াত। (সূরা আল-জাছিয়া : ৩৩)

তুমি কি জানো না, আল্লাহ তোমাকে দেখেন? তুমি যে অবস্থায়ই থাকো না কেনো, তোমার সবকিছুই তাঁর সামনে প্রকাশিত। “অবশ্যই আল্লাহ তা’আলার কাছে আকাশমালা ও ভূখন্ডের কোনো তথ্যই গোপন নেই।” (সূরা আলে ‘ইমরান : ৫)

বর্তমান সমাজের নানাবিধ অপকর্ম ও ভয়াবহ মোবাইল ভাইরাস থেকে মুক্তি পেতে হলে; আমাদের উচিত আল্লাহ তা’আলাকে ভয় করা। আমাদের প্রতিপালকের নাফরমানি থেকে বিরত থাকা।

যৌবন ও সুস্থতা যেনো আমরা ক্ষতি না করি এবং শয়তান যেনো আমাদের ধোঁকায় না ফেলে।

আমরা নিজেরাই নিজেদের চিকিৎসক হতে পারি। মাধ্যম হলো রবের ইবাদাত বন্দেগী, জিকির ও শুকর-গুজারী, তার কিতাবের তেলাওয়াতের মাধ্যমে আমাদের অন্তরের রোগ সমূহ দূর হবে।

সাময়িক প্রবৃত্তির তাড়নায় জান্নাতকে বিক্রি করে দেয়া কি ঠিক? যে জান্নাতের প্রস্থ আসমান ও যমীনের সমান। সৌভাগ্যশালী সে ব্যক্তি যে অন্যের ভালো উপদেশ গ্রহণ করে। অতপর তাকওয়া ও সঠিক পথে চলার জন্য রবের সাহায্য ও তওফিক কামনা করে।

কারণ, আল্লাহ তা’আলাই একমাত্র তাওফিকদাতা, তিনিই উত্তম অভিভাবক, তিনিই উত্তম সাহায্যকারী। সুন্দর পরিবার এবং সমৃদ্ধ সমাজ গড়তে সন্তানদের নৈতিকভাবে গড়ে তোলার দায়িত্ব অভিভাবকদেরই নিতে হবে; আমাদের সন্তানদের আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করে নৈতিকভাবে গড়তে পারলেই মোবাইল এবং ইন্টারনেট নামক এ ভয়াবহ ভাইরাস থেকে মুক্তি পাবে সমাজ।

লেখক পরিচিতি: মুহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল, নির্বাহী সম্পাদক, দৈনিক চাঁদপুর দিগন্ত।

 

চাঁদপুর টাইমস : প্রতিনিধি/এমআরআর/২০১৫

Share