ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের বিভিন্ন স্থানে ভোটাররা কেন্দ্রে ঢুকতে না পারা, অস্ত্র নিয়ে ঘোরাফেরাসহ বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, এমন ভোট আমরা চাইনি। এখনও চাই না।
আজ শনিবার ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে উত্তরার আইইএস স্কুল অ্যান্ড কলেজে নিজে ভোট দিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
নূরুল হুদা বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের প্রতি আমাদের নির্দেশ, এমন ঘটনা যদি ঘটে তারা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেবে।
নির্বাচনের প্রথম কয়েক ঘণ্টায় রাজধানীর চারদিকে গোলাগুলি, ককটেলসহ বিক্ষিপ্ত যেসব সংঘর্ষের খবর শোনা যাচ্ছে, সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় সিইসির কাছে। এতে তিনি বলেন, এমন ভোট আমরা চাইনি। এখনও চাই না।
নির্বাচনী পরিস্থিতি শান্ত রাখতে প্রার্থী, ভোটার এবং বিভিন্ন প্রার্থীর সমর্থকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সিইসি। তিনি বলে, ভোটের সপক্ষে পরিবেশ যেন বজায় থাকে। তবে এখন পর্যন্ত ভোটের পরিবেশ নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো অভিযোগ পাননি বলে জানান তিনি।
ভোটার উপস্থিতি সম্পর্কে সিইসি বলেন, সকাল থেকে যা দেখলাম, এখন পর্যন্ত (বেলা সোয়া ১১টা) ভোটার উপস্থিতি ভালো না। দেখলাম এই কেন্দ্রে (উত্তরার আইইএস স্কুল অ্যান্ড কলেজে) ২৭৬ জন ভোটার এখন পর্যন্ত এসেছে। আশা করছি, পরে আরও আসবে। তিনি বলেন, সকালের দিকে যে দু-একটি কেন্দ্র পরিদর্শন করেছি সেখানেও লোকজন কম ছিল।
নূরুল হুদা বলেন, আমরা ভোটের পরিবেশ সৃষ্টি করেছি। আমাদের যে দায়িত্ব সেটা পরিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করেছি-রিটার্নিং অফিসার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োগসহ সব কিছু। আমাদের দিক থেকে প্রস্তুতির কোনো ঘাটতি নেই। তিনি বলেন, যারা প্রার্থী, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে ভোটার আনার দায়িত্ব তাদের বেশি।
এজেন্টদের কেন্দ্রে টিকে থাকার সামর্থ্য থাকতে হবে
কেউ বললেই বেরিয়ে গেলে চলবে না। বিভিন্ন প্রার্থীদের এজেন্টদের ভোটকেন্দ্রে টিকে থাকার সামর্থ্য থাকতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা।
বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে বিএনপির এজেন্টদের বের করে দেয়া হচ্ছে-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে কে এম নূরুল হুদা বলেন, এজেন্টদেরও টিকে থাকার সামর্থ্য থাকতে হবে। একজন বললেই বেরিয়ে গেলে সেটা ম্যানেজ করা কঠিন।
এজেন্টরা মারামারি করবে না, প্রতিহত করবে
তিনি বলেন, সেখানে এজেন্ট মারামারি করবেন না তবে সে প্রতিহত করবে। বলবে, আমি যাব না। তারপরেও যদি তাকে বের হয়ে যেতে হয় তিনি পরবর্তী ব্যবস্থায় যাবেন।
সিইসি বলেন, বিভিন্ন কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি নির্দেশ রয়েছে, যদি কোনো কেন্দ্র থেকে কোনো দলের এজেন্টদের বের করে দেয়ার অভিযোগ পান, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে ওই এজেন্টকে আবার ওই কেন্দ্রে ঢুকিয়ে দিন।
তিনি বলেন, এজেন্ট বা প্রার্থীদের প্রতি অনুরোধ-এমন ঘটনা ঘটে থাকলে প্রথমে প্রিসাইডিং অফিসারকে জানাবেন। তারপর তারা বাইরে এসে নিকটবর্তী কোনো ম্যাজিস্ট্রেটকে পেলে তাকে জানাবেন। এরপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের জানাবেন এবং তাদের সাহায্যে তারা (এজেন্ট) ভেতরে যাবেন।
এজেন্টদের বের করে দেয়ার কোনো অভিযোগ তিনি পাননি উল্লেখ করে নূরুল হুদা বলেন, নির্বাচনে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি যাতে সৃষ্টি না হয় সকলের প্রতি সে অনুরোধ জানাচ্ছি।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেলে নির্বাচন বন্ধ
সিইসি বলেন, যেকোনো ধরনের অনিয়মের অভিযোগ পেলে রিটার্নিং কর্মকর্তারা ব্যবস্থা নেবে। নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে নির্বাচন বন্ধ করে দেব।
ইভিএমে ইতিবাচক সাড়া
তবে ইভিএমের ব্যাপারে মানুষের ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে উল্লেখ করে সিইসি বলেন, যাদের বুঝতে একটু অসুবিধা হচ্ছে তারা বুঝে নিচ্ছে।
ভোটারদের অনেকের ফ্রিঙ্গার প্রিন্ট না মেলায় সমস্যায় পড়ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এ বিষয়ে সিইসি বলেন, ভোট দেয়ার তিন থেকে চারটি উপায় আছে। একটি না মিললে অন্য উপায়ে ভোট দিতে পারবেন তারা।
বার্তা কক্ষ, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২০
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur