মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার রূপালী ব্যাংকের শাখা থেকে গ্রাহকের দেড় লাখ টাকা চুরির ঘটনা ঘটেছে। মাত্র ৫ মিনিটে দেড় লাখ টাকা নিয়ে নির্বিঘ্নে ব্যাংক থেকে বের হয়ে যায় চার প্রতারক।
ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারী এমনকি গেটে থাকা নিরাপত্তা প্রহরীদের চোখে বিষয়টি ধরা না পড়লেও ব্যাংকের সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে চার প্রতারকের এমন কর্মকাণ্ড।
সিসি ক্যামেরায় চার প্রতারকের অভিনব প্রতারণার বিষয়টি ধরা পড়লেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
ব্যাংকের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, সোমবার বেলা ১১টার দিক শিবচর পৌর বাজারের স্বর্ণকারপট্টির রূপালী ব্যাংকে সূর্য্য মিয়া গোমস্তা নামের এক গ্রাহক যান।
ওই গ্রাহক ৩ লাখ টাকা জমা দিতে কাউন্টারে গেলে পেছন থেকে চার প্রতারক গ্রাহক সেজে তার পেছনে ও পাশে দাঁড়ায়। সূর্য্য মিয়া কাউন্টারের ওপর টাকা রাখেন। এ সময় এক প্রতারক সূর্য্য মিয়াকে বলেন আঙ্কেল নিচে টাকা পড়ে গেছে। ডাক শুনে সূর্য্য মিয়া নিচু হয়ে টাকা তুলতে গেলে কাউন্টারের ওপর রাখা দেড় লাখ টাকা নিয়ে সটকে যায় চার প্রতারক।
পরে তাদের অনেক খোঁজাখুঁজি করেও পাওয়া যায়নি। ভুক্তভোগী সূর্য্য মিয়া গোমস্তা শিবচর পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের খবির উদ্দিন গোমস্তার ছেলে।
সিসিটিভি ফুটেজে আরও দেখা যায়, বেলা ১১টা ৭ মিনিটে সূর্য্য মিয়া ব্যাংকে ঢুকেন। ওই সময় ব্যাংকে কোনো নিরাপত্তা প্রহরী ছিল না।
১১টা ৮ মিনিটে সাদা শার্ট পরিহিত এক যুবক প্রথমে ব্যাংকে ঢুকে। এর এক মিনিট পরই একটি ব্যাগ হাতে নিয়ে আরেক যুবক ব্যাংকে ঢুকে। তখন দুই যুবক নজরদারি রাখছিল সূর্য্য মিয়ার ওপর।
১১টা ১৩ মিনিটে কাউন্টার পরিবর্তন করে সূর্য্য মিয়া পাশের কাউন্টারে গেলে গ্রাহক বেশে চারজন ঘিরে ধরে। এ সময় এক যুবক সূর্য্য মিয়াকে আঙ্কেল বলে সম্বোধন করে জানায়, নিচে টাকা পড়েছে। তার কথা শুনে সূর্য্য মিয়া নিচু হয়ে টাকা তুলতে গেলে দেড় লাখ টাকা নিয়ে সটকে যায় চার যুবক। তাদের চারজনের পরনে সাদা শার্ট ছিল।
সূর্য্য মিয়া বলেন, আমি জমি বিক্রির ৩ লাখ টাকা রাখতে ব্যাংকে যাই। ব্যাংকের কাউন্টারে এক লোক আমাকে বলে আঙ্কেল আপনার টাকা নিচে পড়ছে। আমি টাকা তুলতে নিচু হতেই দেড় লাখ টাকা নিয়ে ওরা সটকে যায়। আমি থানায় অভিযোগ দিলে ব্যাংকে যায় পুলিশ। এ নিয়ে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
শিবচর রূপালী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার মো. আবু তালেব মিয়া বলেন, সূর্য্য মিয়া নামের এক গ্রাহক আমাদের কাছে টাকা চুরির অভিযোগ করলে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে চার প্রতারককে শনাক্ত করা হয়। গ্রাহকের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ব্যাংকে এসে বিস্তারিত জেনে গেছে। তারা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে।
শিবচর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির হোসেন মোল্লা বলেন, ওই গ্রাহকের অভিযোগ পেয়ে ব্যাংকে যাই। সবার সঙ্গে কথা বলেছি। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে চার প্রতারককে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের ধরতে অভিযান চালানো হবে।
বার্তা কক্ষ