এবারও বিশ্বকাপ খেলতে পারবে না ইতালি

চারবারের বিশ্বকাপজয়ী ইতালি এবারও যেতে পারবে না কাতারে অনুষ্ঠিত হওয়া আসরে। ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপের পর কাতারেও দেখা যাচ্ছে না ইতালিকে।

মেসিডোনিয়ার কাছে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের প্লে-অফের সেমিফাইনালে ১-০ গোলে হেরে গেছে ইতালি। ম্যাচের শুরু থেকে শেষ অবধি আক্রমণ করে গেছে ইতালি, নিয়েছে অনেক শট। কিন্তু বেশিরভাগ শটই তারা লক্ষ্যে রাখতে পারেননি। শেষ অবধি তাদের স্বপ্ন ভাঙে আলেসান্দার ত্রাজকোভস্কির অসাধারণ গোলে।

৪-৩-৩ ছকে নামা ইতালির মূল একাদশে ছিলেন না বেশ কিছু অভিজ্ঞ মুখ। তবে লিওনার্দো বোনুচ্চি, জর্জো কিয়েল্লিনি কিংবা ফেদেরিকো কিয়েসারা মূল একাদশে না থাকলেও যথেষ্ট শক্তিশালী দল নিয়ে নেমেছিল ইতালি। যার ছাপ দেখা গেছে খেলায়। একাধিক সুযোগ সৃষ্টি করেছে দলটা, কিন্তু যেটা সবচেয়ে বেশি দরকার ম্যাচ জেতার জন্য, সে গোলটাই পাওয়া হয়নি। ৬৬ শতাংশ সময় বলের দখল রেখে, গোল বরাবর ৩২টা শট নিয়েও উত্তর মেসিডোনিয়ার দৃঢ় মানসিকতার সামনে বারবার ব্যর্থ হচ্ছিলেন ইম্মোবিলে, বেরার্দি, ইনসিনিয়ারা।

এর পরই আসে সেই মুহূর্ত। যে মুহূর্তটা আজীবন মনে রাখবেন উত্তর মেসিডোনিয়ানরা, আর ভুলে যেতে চাইবেন ইতালিয়ানরা। যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে গোলকিপার স্তোলে দিমিত্রিয়েভস্কির লম্বা ফ্রি-কিক খুঁজে নেয় স্ট্রাইকার বোয়ান মিয়োভস্কিকে। মিয়োভস্কির মাথায় বল লেগে চলে যায় আরেক স্ট্রাইকার আলেকসান্দর ত্রায়কোভস্কির কাছে। ইতালির একজন খেলোয়াড়ও এই সময়টায় দুজনের কাছ থেকে বলের দখল নিতে পারেননি। ত্রায়কোভস্কিও সুযোগ বুঝে বক্সের বাইরে থেকে মাটিঘেঁষা জোরালো শটে পরাস্ত করেন ইতালির গোলকিপার জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মাকে।

মাঠে তখন একদিকে মেসিডোনিয়ানদের বাঁধভাঙা উল্লাস, আরেকদিকে কিয়েল্লিনি-ভেরাত্তিদের স্বপ্নভঙ্গের বেদনা। ম্যাচশেষে ভেরাত্তিকে দেখা গেল মুখ লুকিয়ে কাঁদছেন। অবশ্য ভেরাত্তির মিডফিল্ড সঙ্গী জর্জিনিও কি করছিলেন, দেখা যায়নি। ম্যাচের পুরো নব্বই মিনিটই খেলেছেন চেলসির মিডফিল্ডার জর্জিনিও। তার কেমন লাগছিল?

সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে বাছাইপর্বের মহাগুরুত্বপূর্ণ দুই ম্যাচে দুটি পেনাল্টি মিস করে ইতালির বিপদ যে তিনিই ডেকে এনেছিলেন। সেই দুই পেনাল্টি থেকে জর্জিনিও গোল করতে পারলে এই প্লে-অফ ফাঁড়ার মধ্যে আসতেই হয় না ইউরোজয়ীদের, সরাসরি বিশ্বকাপে সুযোগ পেয়ে যায় ইতালি। সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে বাছাইপর্বের প্রথম ম্যাচে জর্জিনিওর শট আটকে দিয়েছিলেন সুইস গোলকিপার ইয়ান সোমের, দ্বিতীয় ম্যাচে ভ্রষ্ট লক্ষ্যে মেরেছিলেন শট।

শেষমেশ ওই দুই পেনাল্টি মিসই কাল হলো ইতালির। ইউরো জিতেছেন, চেলসির হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছেন বলে যে জর্জিনিওর হাতে অনেকে ব্যালন ডি’অর দেখতে চাচ্ছিলেন কয়েক মাস আগেই, সে জর্জিনিওই মুদ্রার ওপিঠটাও দেখে ফেললেন খুব তাড়াতাড়ি।

Share