কেউ আইন ও বিচারের ঊর্ধ্বে নয় জানিয়ে এ দেশে একদিন এদেশে গুম-খুনের বিচার হবেই বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আয়োজিত এক দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
তেজগাঁও বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি নিখোঁজ আমিনুল ইসলাম জাকিরকে ফিরে পাওয়ার দাবি নিয়ে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমিনুল ইসলাম জাকিরকে সরকারের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গুম করেছে। বিএনপির আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ৭ এপ্রিল আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী গুলশান-২ থেকে তাকে উঠিয়ে নিয়ে যায়। এরপর থেকে সে নিখোঁজ। জানি না, সে বেঁচে আছে না মারা গেছে।’
সেজন্য জাকিরের পরিবারের সদস্য ও শুভাকাঙ্ক্ষীরাও তার আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়াও করতে পারছে না। কী নির্মম! -বলেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, ‘গত কয়েক বছর ধরে মানুষকে যত্রতত্র গুম করা হচ্ছে। এ গুমকাণ্ড শুরু হয়েছিল ঢাকার কমিশনার চৌধুরী আলমকে দিয়ে। এরপর সিলেটের অকুতোভয় নেতা ইলিয়াস আলী। তারপর অসংখ্য নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপ হচ্ছে।’
ভারতের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘বুধবার ভারতে একটি খবর বের হয়েছে, প্রায় চল্লিশ বছর আগে ভারতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কয়েকজনকে ক্রসফায়ারে হত্যা করেছিল। তাদের বিচার হয়েছে এবং রায়ে তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। সুতরাং কেউ আইন ও বিচারের ঊর্ধ্বে নয়। আজ হোক, কাল হোক- এর (গুম) বিচার হবেই হবে।’
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, ‘বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে আদালতপাড়ায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অসংখ্য নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। গুম হওয়া ছেলেদের তাদের মায়ের বুকে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে না। অনেককে পঙ্গু করে দেয়া হয়েছে। গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মামলা দেয়া হয়েছে। দেশের কেউ শান্তিতে নেই। এভাবে একটি রাষ্ট্র চলতে পারে না। এ অবস্থা থেকে উত্তোরণে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন ফিরিয়ে আনতে হবে।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আসুন, মহান রাব্বুল আল-আমিনের কাছে দোয়া করি, তিনি যেন আমিনুল ইসলাম জাকিরসহ গুম হওয়া সব নেতাকর্মীকে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেন, গুমের সংস্কৃতির অবসান হয় এবং মানুষ যেন সুষ্ঠু পরিবেশে নিরাপদে চলাফেরা করতে পারে।’
ছাত্রদল সভাপতি রাজীব আহসানের সভাপতিত্বে এবং সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদের সঞ্চালনায় এতে আরো উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মামুনুর রশিদ মামুন, সহ-সভাপতি এজমল হোসেন পাইলট, তারেক-উজ্জামান তারেক, সাবেক ছাত্রনেতা আবদুল কাদের ভুইয়া জুয়েল, শহিদুল ইসলাম বাবুল, বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ, ওবায়দুল হক নাসির, হাসান মামুন ও আব্দুল মতিন প্রমুখ।
আলোচনা সভা শেষে দোয়া মাহফিল পরিচালনা করেন জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা শাহ নেসারুল হক। (বাংলামেইল)