Home / চাঁদপুর / এতো গবেষণার পরও চাঁদপুরে পুকুরে পরীক্ষামূলক ইলিশ চাষের গবেষণা ব্যর্থ
এতো গবেষণার পরও চাঁদপুরে পুকুরে পরীক্ষামূলক ইলিশ চাষের গবেষণা ব্যর্থ

এতো গবেষণার পরও চাঁদপুরে পুকুরে পরীক্ষামূলক ইলিশ চাষের গবেষণা ব্যর্থ

চাঁদপুরে পুকুরে পরীক্ষামূলকভাবে ইলিশের চাষের গবেষণা ব্যর্থ হয়েছে। বর্তমানে এ গবেষণা পুকুরের পরিবর্তে গবেষণাকেন্দ্রের ল্যাবরেটরিতে স্থান পেয়েছে।

মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট, নদী কেন্দ্র, চাঁদপুরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইলিশ গবেষক ড. আনিছুর রহমান জানান, ১৯৮৮ সালে মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট, নদী কেন্দ্র, চাঁদপুরের ২টি পুকুরে ইলিশ চাষের প্রথম উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু সে সময় ব্যর্থতার ফলে ১৯৯৫ সালে সেই প্রকল্প বাতিল করা হয়। পরে আবার ২০১০ সালে চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের ৩টি পুকুরে ইলিশ চাষের উদ্যোগ নেয়া হয়।

পদ্মা-মেঘনা থেকে বিশেষ উপায়ে প্রায় ২ হাজার ২শ` ইলিশের পোনা সংগ্রহ করা হয় এবং সংগৃহীত জাটকা মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের এক হাজার ৮শ` ও ৬শ` ফুট গভীরতার ৩টি পুকুরে ফেলা হয়। কৃত্রিমভাবে পানি সরবরাহ করে নদীর আবহ সৃষ্টি, ইলিশের জন্য উপযোগী খাবার সরবরাহ ইত্যাদির মাধ্যমে জাটকা টিকিয়ে রাখা হয় কিছু সময়। এসব জাটকা যখন এখানকার পুকুরে ফেলা হয় তখন এগুলোর ওজন ছিল ৫ থেকে ১০ গ্রাম। প্রথম বছরেই তা ৫০ থেকে ১০০ গ্রাম পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। এর পরের বছর থেকে জাটকার ওজন ও শারীরিক গঠন বাড়েনি বরং কমতে থাকে।

পুকুরে ইলিশ চাষ কেন ব্যর্থ হলো জানতে চাইলে তিনি আরো জানান, পুকুরে ইলিশ চাষের গবেষণা এখনো শেষ হয়নি। পুকুর এবং নদীর মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। গভীরতার স্রোত, ইলিশ এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাওয়া সব মিলিয়ে পরিবেশগত সমস্যার কারণে পুকুরে ইলিশ চাষ সফলতার মুখ দেখেনি। তবে এটি কোনোভাবেই বাণিজ্যিকভাবে সম্ভব নয় বলে তিনি স্বীকার করেন। বর্তমানে ওই তিনটি পুকুরের মধ্যে ২টিতে মিশ্র প্রজাতির মাছ এবং একটিতে পাংগাসের চাষ করা হচ্ছে।

তিনি আরো জানান, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায় একটি সাবস্টেশন করা হয়েছে যা কেন্দ্র থেকে পরিচালিত হচ্ছে। ইকো অফিস বিডির আওতায় ওয়ার্ল্ড ফিশ ও বিএফআরআই যৌথভাবে পুকুরে ইলিশ চাষের গবেষণা চালাচ্ছে।

তিনি জানান, চাঁদপুরে পুকুরে ইলিশ চাষের জন্য ৭ জন গবেষক ও ৪ জন গবেষণা সহকারীর সমন্বয়ে একটি টিম দীর্ঘ সময় কাজ করেছে। এ কাজের জন্যে খুব বেশি একটা অর্থ ব্যয় হয়নি। সর্ব মিলিয়ে প্রায় ৬/৭ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। পুকুরে ইলিশ চাষ কোনো প্রকল্প ছিল না। এটি অন্যান্য গবেষণার পাশাপাশি অতিরিক্ত গবেষণা ছিল।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সফিকুর রহমান জানান, ইলিশ গভীর পানির মাছ। নদীগুলোতে ডুবো চর সৃষ্টি হওয়ায় ইলিশের বিচরণ কমে গেছে। নদীতেই ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না সেখানে পুকুরে কিভাবে ইলিশ চাষ হবে তা আমার বোধগম্য হচ্ছে না। এটা বিশেষজ্ঞরাই ভাল বলতে পারবেন।

মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট, নদী কেন্দ্র, চাঁদপুরে ইলিশ নিয়ে এতো গবেষণার পরও পুকুরে ইলিশ চাষ ব্যর্থ হওয়ায় চার বছর আগে গবেষণা সম্পূণভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

চাঁদপুর টাইমস : এমআরআর

আপডেট : 03:48 পিএম, ৩১ অক্টোবর, ২০১৫