করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আগামী ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণভাবে সব তফসিলি ব্যাংক বন্ধ থাকবে। তবে এ সময় সীমিত আকারে জরুরি সেবার আওতায় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগসহ কিছু শাখা খোলা থাকবে।
এগুলো থেকে আমদানি-রফতানি, পণ্য পরিবহণ, উৎপাদন সংশ্লিষ্ট ব্যাংকিং সেবা সীমিত আকারে পাওয়া যাবে। এছাড়া ব্যাংকগুলোর এটিএম ও অনলাইন ব্যাংকিং কার্যক্রম সার্বক্ষণিকভাবে চালু থাকবে। গ্রাহকদের সুবিধার্থে এটিএম বুথ থেকে টাকার তোলার পরিমাণ দ্বিগুণ বাড়ানো হয়েছে। মোবাইল ব্যাংকিং সেবাও চালু থাকবে। তবে সাধারণ গ্রাহকদের জন্য কোনো ব্যাংকের শাখা খোলা থাকবে না। এ কারণে শেয়ারবাজারও বন্ধ থাকবে।
এ বিষয়ে সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পৃথক তিনটি সার্কুলার জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংক ও মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদানকারী কোম্পানিগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
একটি সার্কুলারে বলা হয়, সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ চলাকালীন সাধারণভাবে সব তফসিলি ব্যাংক ব্যাংক বন্ধ থাকবে। এ সময়ে ব্যাংকের সব কর্মকর্তা কর্মচারীদেরকে নিজ নিজ কর্মস্থলে অবস্থান করতে হবে।
এতে আরও বলা হয়, সমুদ্র, স্থল, বিমান বন্দর এলাকায় অবস্থিত ব্যাংকের শাখা, উপ শাখা ও বুথগুলো খোলা রাখার বিষয়ে বন্দর ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এসব খাতে ব্যাংকিং সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে স্ব স্ব ব্যাংক প্রয়োজনীয়তার নিরিখে বৈদেশিক বাণিজ্য শাখা সীমিত সংখ্যক জনবল নিয়ে খোলা রাখতে পারবে। একই সঙ্গে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ সীমিত সংখ্যক জনবল দ্বারা চালু রাখা যাবে।
এতে আরও বলা হয়, এটিএম ও কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন চালু রাখার সুবিধার্থে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সহায়তায় সার্বক্ষণিকভাবে খোলা থাকবে। এ জন্য এটিএম বুথগুলোতে পর্যাপ্ত নগদ অর্থের সরবরাহ রাখতে হবে। একই সঙ্গে ইন্টারনেট ব্যাংকিং সার্বক্ষণিকভাবে চালু রাখতে হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অপর এক সার্কুলারে বলা হয়, লকডাউনের মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ (চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ, মসুর ডাল, লবণ, চিনি, আদা, রসুন), পানি, শিশুখাদ্য ও অন্যান্য খাদ্য সামগ্রী, মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সব ধরনের চিকিৎসা সামগ্রী ও ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী স্বাস্থ্যবধি মেনে উৎপাদন, আমদানি, পণ্য খালাস, পণ্য পরিবহণ, কুরিয়ার ব্যবস্থা এবং ওয়্যারহাউস কার্যক্রম অব্যাহত রাখার বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ করা হয়েছে। এর আলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে জারি করা সার্কুলারে ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদেরকে আলোচ্য ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সেবা দেওয়ার জন্য ব্যাংকগুলোকে দ্রুততার সঙ্গে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে আরও একটি সার্কুলার জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ও মোবাইল ব্যাংকিং পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
এই সার্কুলারে সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ চলাকালীন সাধারণ জনগণের অতি জরুরি প্রয়োজন ও অত্যবশ্যকীয় জরুরি পরিসেবা নিশ্চিত করতে দৈনন্দিন অর্থের সরবরাহ নিশ্চিত করতে এটিএম, ইন্টারনেট ব্যাংকিং ও মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, বিধিনিষেধ চলাকালীন এটিএম বুথগুলোকে সচল ও তাতে পর্যাপ্ত নগদ অর্থ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে এটিএম বুথ থেকে দিনে সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা তোলা যাবে। আগে তোলা যেত ৫০ হাজার টাকা। এক্ষেত্রে টাকার পরিমাণ দ্বিগুণ বাড়ানো হয়েছে। বিভিন্ন অ্যাপসের মাধ্যমেও ওই পরিমাণ টাকা স্থানান্তর করা যাবে।
এতে আরও বলা হয়, নিত্যপ্রয়োজনীয় অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সাথে পরিচালিত মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম সরকার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চালু রাখতে হবে। একই সঙ্গে এজেন্টদের কাছ থেকে গ্রাহকদের টাকা তোলার জন্য প্রয়োজনীয় নগদ অর্থের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। সরকার ঘোষিত সময়সীমা হচ্ছে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত। ফলে ওই সময়ে এজেন্টদের মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু থাকবে। তবে অ্যাপস বা মোবাইল ফোন সেটে এই সেবা সার্বক্ষণিকভাবে চালু থাকবে।
ঢাকা ব্যুরো চীফ,১৩ এপ্রির ২০২১