চাঁদপুরের পুলিশ শুধু মামলা গ্রহণই করেন না, মামলার অভিযোগও নিস্পত্তি করে থাকেন। প্রতিদিন কয়েক শত নারী-পুরুষ, পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আসছে তাদের সু-বিচার পাবার আশায়।
গত দেড় বছরে চাঁদপুরের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক হাজার অভিযোগ গ্রহণ করে এবং ৭শ’অভিযোগ নিস্পত্তি করে। এর মধ্যে ৫শ’অভিযোগ ছিল পারিবারিক, দু’শত অভিযোগ ছিল জমি সংক্রান্ত, পূর্ব শত্রুতা, মারামরি, প্রতারণা ইত্যাদি।
পূর্বে প্রতিদিন এ জেলায় যেখানে থানায় মামলা হতো ৭০ থেকে এক শ’। সেখানে বর্তমানে মামলা হচ্ছে ২০/২৫টি। পুলিশের জাতীয় প্যারেডে পর পর দু’বার নেতৃত্ব দানকারী প্রথম নারী ও সদ্য রাষ্ট্রপতি পদক প্রাপ্ত চাঁদপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার (পিপিএম), এ জেলায় পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করার পর তাঁর কার্যালয়ে ‘‘নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ সেল’’ চালু করেন।
এ সেলে প্রতিদিন কয়েক শত নারী পুরুষ তাদের বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে আসছেন এবং মনখুলে সকল অভিযোগ জানাতে পারছেন।
প্রথম দিকে পুলিশ সুপার নিজেই অভিযোগ শুনেতেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতেন। কিন্তু দিন দিন অভিযোগকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবার দরুন তিনি এতো সময় দিতে পারছেনা বলে বর্তমানে একজন নারী ও একজন পুরুষ পুলিশ এস আইকে অভিযোগ গ্রহণ এবং নিস্পত্তির জন্য প্রয়োজনীয় সুপারিশসহ নথি উপস্থাপনের দায়িত্ব দিয়েছেন।
তারা প্রতিদিন এ কাজটি অত্যন্ত বিচক্ষনতার সাথে পালন করে আসছেন। বহু অভিযোগ পুলিশ সুপার নিজের কক্ষে বাদী বিবাদীকে ডেকে এনে নিস্পত্তি করে দিচ্ছেন। ফলে বিচার প্রার্থীদের নিকট এই পুলিশ সুপার হয়ে উঠেছেন একজন নিষ্ঠাবান ও দেবতুল্য পুলিশ কর্মকর্তা।
এই পুলিশ সুপার চাঁদপুর আসার পর জেলার ৮ টি থানার কর্মকর্তাদের নিয়ে ‘‘জনগণের দোর গোড়ায় পুলিশ’’ এই মূল মন্ত্রকে সামনে রেখে মাদক, বাল্য বিবাহ, ইভটেজিং, জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাস, অবৈধ যানবাহন চলাচল বিশেষ করে ট্রাক্টর, সিএনজি ইত্যাদির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স দেখিয়ে প্রতিটি উপ-জেলায় গালর্স গাইড, স্কাউট, কমিউনিটি পুলিশ সদস্যদের নিয়ে নিজে ট্রাকে বসে মাইক যোগে এসবের বিরুদ্ধে ব্যপক প্রচারোভিযান চালান।
এতে সাধারণ জনগণের মাঝে ব্যাপক সারা জাগে এবং মাদক, বাল্য বিবাহ, ইভটেজিং, সন্ত্রসী, ট্রাকক্টরসহ অবৈধ যানবাহন, শিশু ও নারী নির্যাতন তৎপরতা অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে।
এসব অপরাধের দিক থেকে চাঁদপুর জেলা অনেকটা মুক্ত হয়ে একটি মডেল হিসাবে বিশেষ পরিচিতি লাভ করতে শুরু করেছে।
চাঁদপুর জেলা পুলিশ এ জেলার বাড়িওয়ালা, বাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহ করা। শহরের গুরুত্বপূর্ন মোড়ে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, অন লাইনে জিডি কার্যক্রম,অন লাইনে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ব্যবস্থা চালু করতে সক্ষম হয়েছে।
একই সাথে তারা চাঁদপুর শহরের ফুটপাত থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, গুরুত্বপূর্ন স্থানে পুলিশ বস্ক নির্মাণ করেন। ফলে এই জেলায় বর্তমানে পুলিশের কার্যক্রম নিয়ে জনমনে আশার আলো জেগে উঠেছে। পুলিশ সম্পর্কে জনগণের পুরানো ধারনা পাল্টাতে শুরু করেছে।
প্রতিবেদক-মাজহারুল ইসলাম অনিক
।। আপডটে, বাংলাদশে সময় ১০ : ৪০ পিএম, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ মঙ্গলবার
এইউ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur