খাদ্য মন্ত্রণালয় পরিচালিত ওপেন মার্কেট সেল (ওএমএস)-এর মাধ্যমে দরিদ্র মানুষদের সহায়তার জন্য ৩০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ জন্য প্রাথমিকভাবে দেশের এক লাখ লোককে দেয়া হবে ডিজিটাল কার্ড। এ কার্ড নিয়ে ওএমএসের কেন্দ্র থেকে সহজেই চাল কেনা যাবে। ঈদুল আজহার আগেই এ কার্যক্রম শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে।
এরই মধ্যে রাজধানীর ৯টি কেন্দ্রে পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চালানো হয়েছে। খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। রবিবার ১৮ জুন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন,‘ কার্ড করার প্রক্রিয়া চলছে। ডিজিটাল কার্ড করে দেয়া হবে।’
মাইকিং করে কার্ড দেয়া হবে। এ ছাড়া যাঁরা ওএমএসের চাল-আটা নিতে আসেন, তাঁদের নাম-ঠিকানা লিখে রাখা হচ্ছে। তাঁদের কার্ড করে দেয়া হবে। ১৫ মে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে ওএমএস সেল কার্যক্রম নিয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ওই সভায় কার্ডের মাধ্যমে ওএমএস কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পরবর্তী সময়ে ঢাকা মহানগর এলাকায় ৯টি ওএমএস কেন্দ্র চিহ্নিত করে ১০ মে থেকে কার্ডের মাধ্যমে ওএমএস কার্যক্রমের চাল ও আটা বিক্রির পাইলটিং কার্যক্রম শুরু করা হয়। কেন্দ্রগুলোতে গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য, জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি ও স্ট্যাম্প সাইজের ছবিও সংগ্রহ করা হয়েছে।
২৯ মে খাদ্য অধিদপ্তরে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় আগামি ৩০ জুনের মধ্যে সারা দেশে ৪শ টি কেন্দ্রে কার্ডের মাধ্যমে ওএমএস কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এরই মধ্যে খাদ্য অধিদপ্তর থেকে কার্ডের মাধ্যমে ওএমএস কার্যক্রম শুরুর বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে সভার পর গত ৩১ মে থেকে গত ৬ জুন পর্যন্ত প্রতিটি কেন্দ্রে আসা ভোক্তাদের ওএমএস কার্ড প্রদানের লক্ষ্যে জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে ওএমএস চাল ও আটা বিক্রির বিষয়টি জানানো হয়। গত ৭ জুন থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত প্রতিটি কেন্দ্রে লাইনে দাঁড়ানো ভোক্তাদের কাছ থেকে এনআইডি নিয়ে ভোক্তার নাম এবং এনআইডি নম্বর একটি বাঁধাই করা রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করে ওএমএস বিক্রির কার্যকম পরিচালনা করা হয়।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, অসহায় মানুষদের খুঁজে ওএমএসের কার্ড করে দেয়া হবে। যাতে বিত্তশালী কোনো লোক কার্ড নিতে না পারেন সেদিকে নজর রাখা হবে। এ কারণে এত দিন যাঁরা লাইনে দাঁড়িয়ে রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে ওএমএসের চাল নিয়েছেন, তাঁদের তালিকা করা হয়েছে।
কার্ড হস্তান্তর করা যাবে না :
খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ডিজিটাল কার্ডটি হাতে পাওয়ার পর যাঁর নামে কার্ড তাঁকেই খাদ্যশস্য নিতে হবে। অন্য কারো কাছে হস্তান্তর করা যাবে না। এ কার্ড বিনা মূল্যে দেয়া হবে। এ কার্ডের মাধ্যমে ভোক্তা সপ্তাহে এক দিন খাদ্যশস্য কিনতে পারবেন। বিক্রয়কেন্দ্রে লাইনে দাঁড়িয়ে কার্ডের মাধ্যমে চাল ও আটা নিতে হবে। তথ্য ভুল প্রমাণিত হলে কার্ড বাতিল করা হবে। কার্ডে পণ্য উত্তোলনের সব ঘর শেষ হয়ে গেলে কার্ড জমা দিয়ে নতুন কার্ড নিতে হবে। প্রতিবার বিক্রয়ের সময় ‘বিতরণ’ চিহ্ন ঘরটি পাঞ্চ মেশিন দিয়ে ছিদ্র করে দেয়া হবে। কার্ডটি হারিয়ে গেলে নিকটস্থ থানায় খাদ্য অফিসে অবহিত করতে হবে।
১৯ জুন ২০২৩
এজি