চাঁদপুর

এক যুগ পর চাঁদপুরে জেলা আ’লীগের সম্মেলন আজ

প্রধান অতিথি জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফ

আজ বুধবার (২৭ জানুয়ারি) চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। চাঁদপুর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠেয় ওই সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। সম্মেলন উদ্বোধন করবেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর এমপি।

এ উপলক্ষে চাঁদপুর জেলা শহর বিশেষ করে সম্মেলনস্থল চাঁদপুর স্টেডিয়াম মাঠ সাজসাজ রব। ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে চাঁদপুর জেলা আওয়ামীলীগ। সম্মেলন স্থলে একাধিকবার পরিদর্শও শেষ করেছেন জেলা নেতৃবৃন্দ।

সম্মেলনে অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম এমপি, সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডঃ আঃ মতিন খসরু এমপি, র.ম. মুসতাকিন, ফরিদুর রহমান লাইলী ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য সুজিত রায় নন্দী।

দিনভর সম্মেলন শেষে কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে জেলা শিল্পকলা একাডেমীতে। সম্মেলনস্থলের নিরাপত্তায় বসানো হয়েছে ৩০টি সিসি ক্যামেরা। পুরো সম্মেলনস্থল পর্যবেক্ষণে বসানো হয়েছে বিশাল মনিটর। সম্মেলন উপলক্ষে জেলা পুলিশ ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থাগ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে মাঠ ও মঞ্চ তল্লাশি করেছে গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন।

এদিকে সম্মেলন উপলক্ষে আ’লীগের নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। সম্মেলনকে ঘিরে জেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতারাসহ তৃণমূলের নেতাকর্মীরা কেন্দ্রিয় নেতাদের স্বাগত জানাতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সম্মেলনকে ঘিরে উজ্জীবিত হয়ে আছে। সম্মেলনকে ঘিরে ইতোমধ্যে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীদের ব্যানার, রঙিন পোস্টার, বিলবোর্ড ও ফ্যাস্টুনে ছেয়ে গেছে পুরো চাঁদপুর। প্রার্থীসহ তাদের সমর্থকরা সফর করেছেন ৮ উপজেলার নেতাকর্মীদের কাছে।

অপরদিকে সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের আশংকায় জেলা শহরের মানুষদের মাঝে কিছুটা অজানা আতংক রয়েছে। সকাল থেকে জেলা শহরের ভেতরে যানবাহনের সংখ্যা অন্যান্য দিনের তুলনায় কিছুটা কম রয়েছে।

সম্মেলনে সভাপতি পদে বর্তমান সভাপতি ড. শামছুল হক ভূঁইয়া, পৌর মেয়র ও চাঁদপুর শহর সভাপতি নাছির উদ্দিন আহম্মেদ, সিনিয়র সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডাঃ দীপু মনির বড় ভাই ডা. জে আর ওয়াদুদ টিপু প্রার্থী হিসেবে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। তাদের ব্যানার, পোস্টার ও ফ্যাস্টুনে পুরো শহর এখন নতুন করে সেজেছে। তাদের সমর্থকরা পুরো জেলায় নেতাকর্মীদের কাছে গিয়ে-গিয়ে মতবিনিময়সহ দোয়া ও সমর্থন চাচ্ছেন।

সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, সহ-সভাপতি ওচমান গনি পাটোয়ারী, যুগ্ম-সম্পাদক অ্যাড. জহিরুল ইসলাম, আহসানউল্লাহ আখন, সাংগঠনিক সম্পাদক তাফাজ্জল হোসেন এসডু পাটোয়ারী, শামসুল হক মন্টু পাটোয়ারী, অ্যাডঃ মজিবুর রহমান ভূঁইয়া, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. হারুনুর রশিদ সাগরের নাম শোনা যাচ্ছে।

এদিকে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ আবু নঈম দুলাল পাটওয়ারী বলেন, সম্মেলনে ৩শ’ ৪৬ জন কাউন্সিলর ভোট দেবেন। এদের মধ্যে জেলার জনসংখ্যা অনুপাতে ২শ’ ৫৯ জন এবং জেলা কমিটির ৫০ জন এবং কেন্দ্রিয় কমিটি ও গণমান্য ব্যক্তিদের মধ্যে ৩৭ জনকে কাউন্সিলর করা হয়েছে।

সম্মেলনে নির্বাচন প্রসঙ্গে চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে কাউন্সিলরদের প্রস্তাবের উপর নির্ভর করে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের জন্য কাউন্সিলরা যদি নেত্রীর উপর দায়িত্ব দেয় তাহলে নির্বাচন হবে না। আর যদি প্রস্তাব আসে আমরাই আমাদের নেতা নির্বাচিত করবো, সে ক্ষেত্রে যেই কয়টি পদে তারা প্রার্থীদের নাম প্রস্তাব করবে সেই পদে একাধিক প্রার্থী থাকলে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

প্রসঙ্গত, সর্বশেষ ২০০৫ সালের ২৬ এপ্রিল চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। ওই সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আ’লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য মরহুম মিজানুর রহমান চৌধুরী। উদ্বোধক ছিলেন আ’লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আমির হোসেন আমু এবং প্রধান বক্তা ছিলেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক মরহুম আবদুল জলিল।

ওই সম্মেলনে ভোটের মাধ্যমে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল। তবে সভাপতি পদে ভোটের হিসাব গড়মিল হওয়ায় ফলাফল স্থগিত রাখেন নির্বাচন পরিচালনা সংশ্লিষ্টরা। পরবর্তীতে কেন্দ্রিয় আ’লীগ থেকে পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি গঠন করলে সভাপতি মনোনীত হন ড. শামছুল হক ভূঁইয়া।

চাঁদপুর টাইমস রিপোর্ট|| আপডেট: ০৫:০৬ পিএম, ২৬ জানুয়ারি ২০১৬, মঙ্গলবার

এমআরআর  

Share