জাতীয়

দেশে কাজ হারিয়ে বেকার হয়েছে এক কোটি ৩৬ লাখ মানুষ

করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় লকডাউনে দুই মাসের বেশি সময় ধরে দেশের সার্বিক কার্যক্রম প্রায় বন্ধ ছিল। এই সময়ে এক কোটি পাঁচ লাখ ৬০ হাজার মানুষ কাজ হারিয়েছে। এর আগে আরো প্রায় ৩০ লাখ মানুষ কর্মহীন ছিল। সব মিলে বন্ধের সময়টিতে কর্মহীন মানুষের সংখ্যা প্রায় এক কোটি ৩৬ লাখ। তবে সরকারি ছুটি শেষে দেশের অর্থনীতি ধীরে ধীরে সচল হচ্ছে।

২০ জুলাই সোমবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিল্স) এক অনলাইন সেমিনারে গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপনকালে এই তথ্য জানানো হয়। ‘কভিড-১৯ পরিস্থিতিতে প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের ওপর প্রভাব’ শীর্ষক এই ওয়েবিনারে গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) জেনেভা কার্যালয়ের সাবেক বিশেষ উপদেষ্টা রিজোয়ান ইসলাম।

বিলসের হিসাবে, করোনার প্রকোপ বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৬ মার্চ থেকে সবচেয়ে বেশি কাজ হারিয়েছে স্বকর্মসংস্থানে নিয়োজিত শ্রমশক্তি। এই খাতের ৬০ লাখ ৫০ হাজার শ্রমশক্তির ৮৫ শতাংশই বেকার হয়েছে, যার সংখ্যাটা ৫১ লাখ ৯০ হাজার। এ ছাড়া নির্মাণ খাতে ২৭ লাখ ৫০ হাজার, পরিবহন খাতে ছয় লাখ ৫০ হাজার, বাণিজ্যিক খাতে ৯ লাখ, খাদ্য ও এ সম্পর্কিত খাতে এক লাখ ৭০ হাজার এবং উৎপাদন খাতে ৯ লাখ শ্রমশক্তি কাজ হারিয়েছে। সব মিলে বন্ধের সময়টিতে নতুন করে কাজ হারিয়েছে এক কোটি পাঁচ লাখ ৬০ হাজার মানুষ।

ওয়েবিনারে আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তারা বলেন, কেবল আর্থিক সাহায্য দিয়ে মানুষকে দীর্ঘ মেয়াদে টিকিয়ে রাখা যাবে না। কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। শ্রম আইন বিশেষজ্ঞ ড. উত্তম কুমার দাস বলেন, ‘করোনার মতো এমন অস্বাভাবিক পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমাদের বিদ্যমান শ্রম আইন প্রস্তুত নয়। তার প্রমাণ পাওয়া গেছে সরকার ছুটি ঘোষণার পর কারখানা বন্ধ, লে-অফ কিংবা শ্রমিক ছাঁটাই ও তাদের পাওনা পরিশোধ ইস্যুতে। শ্রম মন্ত্রণালয়ও যথাযথ ভূমিকা নিতে ব্যর্থ হয়েছে।’

আইএলওর কান্ট্রি ডিরেক্টর টুমো পুটিআইনেন বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাস্তবধর্মী শ্রমবাজারনীতি প্রণয়নের পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, কাজ হারানো জনশক্তি কিভাবে কাজে ফিরতে পারে সে বিষয়ে দ্রুত ও কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া দরকার। এ লক্ষ্যে সরকার শ্রমঘন অবকাঠামো বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে পারে।

বিলসের মহাসচিব নজরুল ইসলাম খানের সঞ্চালনায় এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সংসদ সদস্য শিরীন আখতার, বিজিএমইএর পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন, এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের মহাসচিব ফারুক আহমেদ, অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন প্রমুখ।

বার্তা কক্ষ, ২১ জুলাই ২০২২০

Share