আড়াই’শ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের ডিজিজাল এক্সরে মেশিন ও আল্ট্রাসনোগ্রাম বিভাগটি ২ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে কার্যক্রম বন্ধ থাকায় অকেজো হয়ে পড়েছে ডিজিটাল এক্সরে মেশিন। হাসপাতালের এ দুটি বিভাগ বন্ধ থাকায় বাড়তি খরচে বাহিরে থেকে এক্সরে এবং আল্ট্রাসনোগ্রাম করাতে গিয়ে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে রোগীরা।
খবর নিয়ে জানা যায়, ২ বছরের অধিক সময় ধরে বন্ধ রয়েছে আল্টাসনোগ্রাম বিভাগটিও। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ওই বিভাগটিতে রেডিওলজিস্ট ও কনসালটেন্ট পদে দুজন চিকিৎসক কর্মরত ছিলো। তাদের পদোন্নতি হওয়ার পর গত ৬ সেপ্টেম্বর থেকে হাসপাতালের নিচ তলায় অবস্থিত আল্ট্রাসনোগ্রাম বিভাগটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
এর মধ্যে আল্টাসনোগ্রাম বিভাগটির দায়িত্বে থাকা রেডিওলজিস্ট ডা. সফিকুল ইসলাম ২০১৬ সালে ৫ মে পদোন্নতি লাভ করে হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন।
তারপর থেকে আল্ট্রাসনোগ্রাম বিভাগটির কার্যক্রম পরিচালনা করেন হাসপাতালের কনসালটেন্ট ডা. মাইনুদ্দিন। তিনি গত ৫ সেপ্টোম্বর পদোন্নতি লাভ করে নোয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যোগদান করেন। এতে করে হাসপাতালের এ দুটি পদই শূন্য হয়ে গিয়ে আল্ট্রাসনোগ্রাম বিভাগটি বন্ধ হয়ে যায়।
ওপর দিকে টেকনিশিয়ান এবং ডিজিটাল এক্সরে ফিল্মের সংকটে ২ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে ডিজিটাল এক্সরের কার্যক্রম। নরমাল এক্সরে চলমান থাকলেও বন্ধ রয়েছে ডিজিটাল এক্সরে।

এক্সরে বিভাগের টেকনিশিয়ানদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, ডিজিটাল এক্সরে মেশিনটি স্থাপনের পর সামান্য কিছু পেপার দেয়া হয়। তারপর প্রায় দুই বছর ধরে ডিজিটাল এক্সরের কার্যক্রম চলমান থাকে। দুই বছর পর ফিল্ম পেপার শেষ হওয়ায় সরকারিভাবে সাপ্লাই না দেওয়ায় ডিজিটাল এক্সরে মেশিনের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়।
এতে হাসপাতালে এসে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। বিভিন্ন রোগের রোগ নির্ণয়ের জন্য হাসপাতালে এসে অল্প খরচে যে সেবা পেতো জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আসা রোগীরা। এখন এই দুটি বিভাগটি বন্ধ থাকায় সে সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষজন। যার ফলে জেলার বিভিন্ন স্থান ও জেলার বাইরে থেকে আসা রোগীদের অনেক হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন… চিকিৎসক সংকটে আল্ট্রাসনোগ্রাম বিভাগটি দেড় বছর যাবৎ বন্ধ : রোগীদের ভোগান্তি
সরকারি নিদিষ্ট খরচে হাসপাতালে ডিজিটাল এক্সরে ও আল্টাসনোগ্রাম করাতে না পেরে অধিক খরছ দিয়েই বাধ্যতামূলক ভাবে বাহিরের ডায়াগনস্টিক গুলোতে আল্টাসনোগ্রাম ও এক্সরে করাচ্ছেন রোগীরা। এর জন্যও রোগীদের ওই পরীক্ষাটি করাতে হাসপাতাল থেকে অন্য স্থানে আসা যাওয়ায় অনেক হয়রানির শিকার হচ্ছেন রোগীরা।
এদিকে আল্ট্রাসনোগ্রাম বিভাগটিই নয়,চিকিৎসক সংকটের কারণে হাসপাতালের আরো বেশ কিছু চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন না রোগীরা। কনসালন্টেট ও রেডিওলজিস্টের পাশাপাশি দীর্ঘ ৬ বছর ধরে চক্ষু চিকিৎসকের পদটিও শূন্য পড়ে আছে।
এ বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার হাবিব উল করিম চাঁদপুর টাইমসকে জানান, হাসপাতালের এক্সরে বিভাগসহ অন্যান্য মেশিন পত্রের যেসব সমস্যা রয়েছে। আমরা এসব বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে বেশ কয়েকবার লিখিত চিঠি দিয়ে অবগত করেছি। কিন্তু এখনো পর্যন্ত এর সমাধানের জন্য কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
এছাড়া রেডিওলজিস্ট,কনসালন্টেট ও চক্ষু চিকিৎসকের ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়েছে। তারা আমাদের হাসপাতালের শূন্য পদ গুলোতে লোকবল নিয়োগ দিলে আশা করছি এ সমস্যা গুলো সমাধান হবে।
প্রতিবেদক:কবির হোসেন মিজি,২২ জুন ২০২১
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur