বিশেষ সংবাদ

একত্রে তিন স্বামীর স্ত্রী তানজিলার কাণ্ড

একজন নয়, একসঙ্গে তিন স্বামীর সংসার করছেন তানজিলা হায়দার। প্রথম স্বামীকে ডিভোর্স না দিয়েই গোপনে করছেন একের পর এক বিয়ে।

অবশেষে ধরা পড়লেন। একাধিক বিয়ে করার অপরাধে পুত্রবধূর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন তৃতীয় স্বামীর মা।

চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে ফেনী সদর উপজেলার শর্শদি ইউনিয়নের উত্তর শর্শদি গ্রামে।

মামলার বাদী ফেনী শহরের রামপুর এলাকার মজিবুল হকের স্ত্রী ছালেহা বেগম জানান, তার ছেলে মো. জিয়াউল হক বাবলু কলেজে পড়ার সুবাদে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয় সদর উপজেলার শর্শদি ইউনিয়নের উত্তর শর্শদি গ্রামের ডিপটি বাড়ির রকিবুল হায়দারের মেয়ে তানজিলা হায়দারের সঙ্গে। প্রেম সম্পর্কের এক মাসের মধ্যে তানজিলা তাড়াহুড়ো করে বাবলুকে বিয়ের করতে বাধ্য করে।

একপর্যায়ে কাউকে না জানিয়ে গোপনে গত ২০১৫ সালের ১৭ই আগস্ট তানজিলা বাবলুকে ১০ লাখ টাকা দেনমোহরের (কাবিনে) বিয়ে করে।

বিয়ের কিছুদিন পর বাবলু তার স্ত্রী তানজিলাকে ঘরেও তুলে নেন। ঘরে তোলার কিছুদিন পর বাবলু উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের জন্য জাপান চলে যান। এরপর বেপরোয়া হয়ে উঠেন তানজিলা।

তার আচার-ব্যবহার সন্দেহ হলে খোঁজখবর নেয়া শুরু করেন বাবলুর মা ছালেহা বেগম। খোঁজ নিয়ে দেখেন, তার ছেলের বউ তানজিলার আগেও আরো দু’টি বিয়ে করেছেন।

গত ২০১০ সালের ২৪শে ডিসেম্বর তানজিলার সঙ্গে ৬ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে হয় কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রামের গুণবতি বাজার এলাকার ঝিগড়া গ্রামের মাবুদুল হকের ছেলে মো. আবদুল্লাহ আল মামুনের সাথে।

এরপর ২০১২ সালে ৪ঠা এপ্রিলে ২ লাখ টাকা দেনমোহরের (কাবিনে) বিয়ে হয় ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার রাজাপুর গ্রামের সাহাব উদ্দিনের ছেলে মাহবুবুল হক দোলনের সঙ্গে।

তিনটি কাবিনেই তানজিলা নিজেকে কুমারী হিসেবে পরিচয় দেয় এবং তিন কাবিনে জন্ম তারিখ তিন রকম উল্লেখ করে।

এসব বিষয়ে তানজিলাকে তার শাশুড়ি জিজ্ঞাসা করলে পরিবারের সবাইকে মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার হুমকিও দেয়।

ঘটনার পর বাবলুর মা ছালেহা বেগম বাদী হয়ে ফেনীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে পিটিশন (পিটিশন নং-২/১৭/২০১৭) মামলা দায়ের করেন।

এ বিষয়ে তানজিলা হায়দারের মুঠোফোনে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, তিনি শুধু একটি বিয়ে করেছেন। আর তার স্বামী হচ্ছে বাবলু। তিনি আরো জানান, বাবলু বিদেশ যাওয়ার জন্য তিনি তার বাবার বাড়ি থেকে ১৪ লাখ টাকা বাবলুকে এনে দেন। বাবলু বিদেশ যাওয়ার পর শশুর বাড়ির লোকজন তার বাবার কাছে আরো ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। যৌতুকের টাকা না দেয়ায় শ্বশুরবাড়ির লোকজন তার উপর নির্যাতন চালায়। এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে শাশুড়িসহ ৬ জনকে আসামি করে ২০১৬ সালের ১২ ডিসেম্বর ফেনী মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেছে। ওই মামলাটি করার পর থেকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন তার বিরুদ্ধে এসব অপপ্রচার চালিয়ে তার বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা দায়ের করেছে।’

অপরদিকে তানজিলার বাবা রফিকুল হায়দার জানান, তার মেয়ের দুই বিয়ে হয়েছে। প্রথম বিয়েটি স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি (ডিভোর্স) হয়েছে। ডিভোর্স লেটারের কপিও তার কাছে রয়েছে। প্রয়োজন হলে তিনি তা প্রদর্শন করবেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, বিয়ের নামে প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাৎ করা তানজিলার স্বভাব। কিছুদিন পর পর প্রেমের ফাঁদে ফেলে ছেলেদের থেকে মোটা অংকের অর্থ আত্মসাৎ করে কেটে পড়ে।

ভুক্তভোগীরা বিষয়গুলো নিয়ে আইনের আশ্রয় নিতে চাইলে জানাতে চাইলে তানজিলা তাদের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের মামলাসহ বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দেয়। (মানবজমিন)

নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৪: ০০ এএম, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, শনিবার
ডিএইচ

Share