দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া (বীর বিক্রম) এমপি বলেছেন, এ বছর দীর্ঘ মেয়াদী ও বিস্তৃত এলাকায় বন্যা হয়েছে। কিন্তু বন্যায় একটি মানুষও বন্যার কারণে খাদ্যের অভাবে মারা যায়নি ও কেউ আশ্রয়হীনও ছিল না। বন্যার কারণে দেশে একটি মানুষও না খেয়ে মরেনি। এমনটি দূর্ভোগ পোহাতে হয়েছে কম।
বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) সকালে মতলব উত্তরের আলী মিয়া মহাবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের মাঝে তুরস্কের আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থার (টিকা) মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেছেন, সরকার ও আওয়ামী লীগ দলীয় নেতৃবৃন্দের সক্রিয় অংশগ্রহণে বর্তমান সরকার অত্যন্ত সার্থকতার সহিত সফলতার সাথে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য এখনো ত্রাণ তৎপরতা ও পুনর্বাসন কাজ অব্যাহত রয়েছে। বন্যার টেকসই মোকাবিলার জন্য সরকার বন্যাপ্রবণ এলাকায় নতুন নতুন আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করছে ও ঝুঁকিপূর্ণ মানুষদের ঘরবাড়ি উঁচু করে দিচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, বন্যার পানি দ্রুত নেমে যেতে সরকার গুরুত্বপূর্ণ নদীগুলো ড্রেজিং করার উদ্যোগ নিয়েছে। ত্রাণমন্ত্রী মায়া চৌধুরী আরো বলেন, তুরস্কের সাথে বাংলাদেশ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় তুরস্ক সরকার বাংলাদেশের বন্যা কবলিত পরিবারদের জন্য এ সহায়তা পাঠিয়েছেন। রোহিঙ্গাদের সার্বিক সহায়তায় এগিয়ে আসার জন্যও তিনি তুরস্ক সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সরকারের উদ্যোগের প্রশংসা করে মায়া চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে গত তিন মাস ধরে প্রধানমন্ত্রী যে অক্লান্ত প্রচেষ্টা চালিয়েছেন, জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ সারাবিশ্বকে জাগ্রত করেছেন, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিকভাবে চাপ সৃষ্টি করেছেন। এই চাপ সৃষ্ট করার জন্যই মিয়ানমার থেকে প্রতিনিধি এসেছে, মন্ত্রী এসেছে। বাংলাদেশের কূটনৈতিক তৎপরতা ও চাপ দেওয়ার কারণেই মিয়ানমার বাধ্য হচ্ছে তাদের অবস্থান থেকে সরে আসতে।
তিনি বলেন, তিন মাস ধরে আমরা বিভিন্ন খারাপ পরিস্থিতিতে ছিলাম, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছুটে গিয়েছেন। আমরা সেখানে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনেছি, বিদেশিরাসহ সবাই এর প্রশংসা করেছে।
মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শারমিন আক্তারের সভাপতিত্বে ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ কুদ্দুছের পরিচালনায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, তুরস্কের আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থার (টিকা) সমন্বয়কারী আহমেদ রেফিক চিটিংকায়া, উপ-সমন্বয়কারী শেরিফ উজতুর্ক, আলোকিত বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ইফতেখার হোসেন, চাঁদপুর জেলা প্রশাসক আব্দুস সবুর মন্ডল, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও ত্রাণমন্ত্রীর জ্যেষ্ঠ পুত্র সাজেদুল হোসেন চৌধুরী দিপু, চাঁদপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ ওচমান পাটোয়ারী, চাঁদপুর পৌর মেয়র নাসির উদ্দিন আহমেদ, চাঁদপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার, ত্রাণমন্ত্রী মায়া চৌধুরীর সহধর্মিনী মিসেস পারভীন চৌধুরী প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, সারাদেশে বিভিন্ন জেলায় ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ ১০ হাজার পরিবারের জন্য তুরস্কের আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থার (টিকা) মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারকে ৩শ’ মে. টন ত্রাণ সামগ্রী সহায়তা করেছে।
এরমধ্যে লালমনিরহাটে ৯০ টন, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, জামালপুর, গাইবান্দা ও মানিকগঞ্জে ৩০ টন করে এবং চাঁদপুরে ৬০ টন ত্রাণ সামগ্রী বরাদ্দ দেয়া হয়।
৩০ কেজির প্রতি প্যাকেটে রয়েছে ২০ কেজি চাল, ৫ কেজি ডাল, ২ লিটার তেল, ২ কেজি চিনি এবং ১ কেজি লবন। পরিবার প্রতি ৩০ কেজি করে ১০ হাজার প্যাকেটের মাধ্যমে এ ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে।
খান মো. কামাল, মতলব উত্তর
: আপডেট, বাংলাদেশ ১০ : ২০ পিএম, ২ নভেম্বর, ২০১৭ বৃহস্পতিবার
এইউ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur