দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একটি জেলা ঝিনাইদহ। চরমপন্থী-সর্বহারা অধ্যুষিত এই জেলার মানুষ এক সময়ে আতঙ্কে দিনগুজার করতো – ‘এই বুঝি মৃত্যু পরোয়ানা নিয়ে এলো ওরা’।
এ জেলার চারপাশ দিয়ে পাঁচটি জেলার সীমানা। ঝিনাইদহের মতোই সেসব জেলাবাসীরও অবস্থা ছিল সে রকম। এখন সময় পাল্টেছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নানামুখী তৎপরতার মুখে চরমপন্থী-সর্বহারাদের দিন ফুরিয়েছে।
কিন্তু ওইসব জেলাবাসীদের অনাহূত মৃত্যু পরোয়ানা আতংকের দিন ফুরায়নি, বরং বেড়েছে আর বাড়ছেই।
সাম্প্রতিক সময়ে এসে ঝিনাইদহবাসীর ভাগ্য যেন অনাকাঙ্খিত মৃত্যু পরোয়ানার সাথে মিতালী গড়েছে। বলা নেই, কওয়া নেই-হঠাৎ করেই অপ্রাকৃতিক মৃত্যু পরোয়ানা তাদেরকে নতুন আতংক আর উদ্বেগে ফেলেছে।
চরমপন্থী আর সর্বহারাদের অমানবিক আচরণের শিকার হওয়া ওই সব জেলার মানুষগুলো তাদের নিয়তি বলে মেনে নিলেও এখন রাষ্ট্রীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে গুম-খুনের ঘটনাগুলোকে কি বলে মেনে নেবে ? চরমপন্থী আর সর্বহারাদের কর্মকান্ডের বিচার চাওয়া তাদের আইনি অধিকারে পরিণত হলেও এখন কার কাছে কিসের বিচার চাইবে, তা তাদেরকে ভাবিয়ে তুলেছে।
ঝিনাইদহবাসীর ভাগ্যে বিগত সময়ে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে ২৭ ব্যক্তিকে অপহরণের পর ২৩ জনের লাশ জুটেছে।
গত এক মাসের ব্যবধানে তাদের ভাগ্যে মিলেছে আরও ৪ লাশ।
লাশের পর লাশ, অপহরণ আর গুম-এ সবই এখন ঝিনাইদহবাসীর নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ সব ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারস্থ হয়েও প্রতিকার মিলছে না। নিয়তিই প্রতিকার ? নিহতদের মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত থাকায় বিচারের আশাও ছেড়ে দিয়েছেন স্বজনরা।
কোন উত্তরও নেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্তাদের কাছে। তারা এসব ঘটনার পর শুধুই বলছেন, ‘দেখা যাক কি করা যায়, খোঁজ নিয়ে দেখছি আসল ঘটনা কি। অভিযোগ উঠতেই পারে। কারও মুখতো আর চাপা দিয়ে বন্ধ করে রাখা যাবে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে অপহরণের অভিযোগ টোটালি মিথ্যা!’
]জাহিদুর রহমান তারেক, ঝিনাইদহ করেসপন্ডেন্ট [/author]
: আপডেট ৮:০০ এএম, ২৫ এপ্রিল ২০১৬, সোমবার
ডিএইচ