চাঁদপুর

এ দেশে সর্বোচ্চ সম্মানের পেশা হলো শিক্ষকতা : চাঁদপুরে উপ-সচিব

চাঁদপুরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মো. হাবিবুর রহমান বলেছেন, এখনো এই দেশের সর্বোচ্চ সম্মানের পেশা হলো শিক্ষকতা। শিক্ষকরা আমাদের সমাজের সবচেয়ে সম্মানের ব্যক্তি।

চাঁদপুর শহরের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী ও শ্রেষ্ঠ শিক্ষালয় মাতৃপীঠ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শন এসে শিক্ষকদের বলেন, চাকরির ক্ষেত্রে আপনাদের মাঝে যে অতৃপ্ততা বা মনঃকষ্ট রয়েছে তা মাথায় না রেখে আমাদের সন্তানদের দক্ষ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলুন।’

শনিবার (১২ মে) সকালে প্রতিষ্ঠানটির কম্পিউটার ল্যাব, বিভিন্ন শ্রেণি কক্ষের পাঠদান পর্যবেক্ষণ করেন এবং শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন।

তাঁর আগমনে বেলা ১১টায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক মিলনায়তনে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উত্তম কুমার সাহার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপ-সচিব মো. হাবিবুর রহমান। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি, দৈনিক চাঁদপুর প্রতিদিনের সম্পাদক ও প্রকাশক ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী। অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন গ্রামীন ব্যংকের এজিএম মোস্তাফিজুর রহমান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপ-সচিব মো. হাবিবুর রহমান বলেন, উন্নত বিশ্বের সাথে প্রতিযোগিতা করতে হলে আমাদের সন্তানদে শুধুমাত্র পুথিগত শিক্ষাই দিলে হবে না, তাদের তথ্য-প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষা দিতে হবে। বইয়ের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে হাতে কলমে পাঠদান করা হবে। নয়তো উন্নত বিশ্বের সাথে প্রতিযোগিতায় তারা অনেক পিছিয়ে যাবে। নতুন প্রজন্মকে দক্ষ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হলে আমাদের মানসম্মত শিক্ষা দরকার। আর তারও আগে দরকার মানসম্মত শিক্ষক। কারণ এই শিক্ষকরাই হলেন আগামি দিনের দক্ষ নাগরিক গড়ে তোলার কারিগর। আমি মনে করি এজন্য আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তন দরকার। এর পাশাপাশি শিক্ষকদেরও চিন্তার পরিবর্তন আনতে হবে। তাদের আরো বেশি করে পড়তে হবে, গবেষণা করতে হবে এবং পাঠদানে নতুনত্ব আনতে হবে। কারণ বিদ্যালয়ে লেখা-পড়া শিখতে আসা প্রতিটি শিক্ষার্থীকে দক্ষ মানুষ করে গড়ে তোলার বাবা মা আপনাই।

তিনি বলেন, আমরা যারা শিক্ষার সাথে সংশ্লিষ্ট রয়েছি তারা সবাই একটি পরিবার। আমাদের এই শিক্ষা পরিবারটি অনেক বড়। এদেশে সরকারি প্রায় ৬৮ হাজার বিদ্যালয় রয়েছে যাতে প্রায় ৮লাখ শিক্ষক চাকরি করছেন। এসব বিদ্যালয়ের মধ্যে প্রায় ৫হাজার প্রতিষ্ঠানে মাল্টি মিডিয়া ক্লাসরুম রয়েছে। এই ব্যবস্থার মূল লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য হলো শিক্ষার্থীদের তথ্য-প্রযুক্তির সাথে সম্পৃক্ত করে তাদের আধুনিক শিক্ষাদান করা। কিন্তু এসব মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমগুলো তালা ঝুলিয়ে রাখলে সরকারের এই লক্ষ অর্জন হবে না। তাই মাল্টিমিডিয়া ক্লাস চালু রাখতে হবে।

উপ-সচিব মো. হাবিবুর রহমান আরো বলেন, গতকাল বাংলাদেশে একটি ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটে গেছে। এদিন বাংলাদেশের নিজস্ব স্যাটেলাইট উৎক্ষেপন করা হয়েছে। এতে করে দেশের অর্জনে আরো একটি নতুন মাত্রা যোগ হলো। এর মাধ্যমে দেশের তথ্য-প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতি হবে।

এই স্যাটেলাইট উৎক্ষেপনের উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশকে শতভাগ ডিজিটালাইজড করে গড়ে তোলা। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে ভিশন ২০২১ এর স্বপ্ন দেখেছেন তা অনেকটাই পূরণ হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের সেরা ১০টি উন্নত দেশের মধ্যে একটি হবে। আর সেই স্বপ্ন যারা পূরণ করবে তারা হলেন শিক্ষক। আপনারা শিক্ষকরাই সেই দক্ষ নাগরিক গড়ে দিবেন।

বিদ্যালয়ের সহকারী ইংরেজি শিক্ষক মো. মাসুদুর রহমানের পরিচালনায় শিক্ষকদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন সিনিয়র শিক্ষক প্রাণকৃষ্ণ দেবনাথ ও আলেয়া ফেরদৌসী। অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথিকে ফুলেল শুভেচ্ছায় বরণ করে নেয়া হয়। এর আগে পবিত্র কোরান থেকে তেলওয়াত করেন সহকারি শিক্ষক মনির হোসেন এবং গীতা পাঠ করে নেহার কান্তি চক্রবর্তী।

উল্লেখ্য: মো. হাবিবুর রহমান চাঁদপুর ফরিদগঞ্জ চান্দ্রার কৃতি সন্তান। তিনি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের উপ-সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

প্রতিবেদক- আশিক বিন রহিম

Share