চাঁদপুর দেশের অন্যতম নদীবিধৌত কৃষি প্রধান অঞ্চল। মেঘনা,পদ্মা,মেঘনা ধনাগোদা ও ডাকাতিয়া নদী এ জেলা ওপর দিয়ে বয়ে যাওযায় কৃষি উৎপাদনে নদী অববাহিকায় ব্যাপক ফসল উৎপাদন হয়ে থাকে। নদীর তীর সংলগ্ন এলাকাগুলোতে ব্যাপকহারে এ সরিষা চাষাবাদ ও উৎপন্ন হয়ে থাকে। মেঘনার পশ্চিমতীরে রয়েছে ১১টি বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চল।
চাঁদপুরে ধান,পাট,আলু,সয়াবিন, পেঁয়াজ রসুন,ভূট্টা এর পরেই সরিষার স্থান। চলতি ২০২৪-‘২৫ বছরে চাঁদপুরে ৫ হাজার ৮শ’ ৯৩ মে.টন সরিষা উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এবং চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৪ হাজার ১ শ ৫০ হেক্টর জমিতে।
আবহাওয়ার অনুকূল পরিবেশ,পরিবহনে সুবিধা,কৃষকদের সরিষা চাষে আগ্রহ,কৃষি বিভাগের উৎপাদনের প্রযুক্তি প্রদান,যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নত,কৃষিউপকরণ পেতে সহজলভ্যতা,বীজ,সার ও কীটনাশক ব্যবহারে কৃষিবিদদের পরামর্শ,ব্যাংক থেকে কৃষিঋণ প্রদান ইত্যাদি কারণে চাঁদপুরের চাষীরা ব্যাপক হারে সরিষা চাষ করছে। বিশেষ করে চাঁদপুরের চরাঞ্চলগুলোতে ব্যাপক সরিষা চাষাবাদ ও উৎপাদন করে থাকে চাষীরা।
অতীব দু:খের বিষয়-নদী তীরবর্তী হওয়ায় চরাঞ্চলের চাষীদের কৃষিঋণ দিচ্ছে না ব্যাংকগুলো । চরাঞ্চলগুলি হলো-মতলবের চরইলিয়ট, চর কাসিম,সবজি কান্দি,জহিরাবাদ,ষষ্টখন্ড বোরোচর,চাঁদপুর সদরের রাজরাজেস্বর, জাহাজমারা, লগ্নিমারা, বাঁশগাড়ি, চিড়ারচর, ফতেজংগপুর, হাইমচরে,ঈশানবালা, মধ্যচর,সাহেববাজার চরগাজীপুর মনিপুর, মাঝিরবাজার ও বাবুরচর ইত্যাদি। বিপুল পরিমাণে সরিষা চাষাবাদ হয়ে থাকে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামার বাড়ি চাঁদপুরের সূত্র মতে, চাঁদপুর সদরে চাষাবাদ লক্ষ্যমাত্রা ৫শ’ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭শ ১০ মে.টন।
মতলব উত্তরে চাষাবাদ হয়েছে ১ হাজার ৫শ ৫৫ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ২শ ৮ মে.টন। মতলব দক্ষিণে চাষাবাদ ৩শ’১০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ শ ৪০ মে.টন।
হাজীগঞ্জে চাষাবাদ ৬শ ৭৫ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯শ’৬০ মে.টন। শাহরাস্তিতে চাষাবাদ ২ শ’ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ শ’ ৮৪ মে.টন ।
কচুয়ায় চাষাবাদ ৫ শ ১০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ শ’ ২৪ মে.টন। ফরিদগঞ্জে চাষাবাদ ১শ হেক্টর ৭৫ মে. টন এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২শ ৪৯ মে.টন এবং হাইমচরে চাষাবাদ ২শ ২৫ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩শ ১৯ মে.টন।
জেলার ৪ রাষ্ট্রয়ত্ব সোনালী,অগ্রণী,জনতা ও কৃষি ব্যাংক এ বছর ১ কোটি ৯ লাখ টাকা ডাল,তৈল, মসলা ও ভূট্টা চাষাবাদে ঋণ হিসেবে বরাদ্দ প্রদান করেছেন এবং ১ লাখ টাকার বিতরণ করেছে বলে ব্যাংকগুলোর আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্রে জানানো হয়েছে।
চাঁদপুরের ৮ উপজলোয় রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ও জেলা-উপজেলার সব বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে ২০২৪-’২৫ র্অথবছরে ৩২০ কোটি ৩২ লাখ ৫৭ হাজার টাকা কৃষি ঋণ ও দারিদ্রবিমোচন খাতে বিতরণের জন্যে বাংলাদেশ ব্যাংক বরাদ্দ দিয়েছে ।
চাঁদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মো.মোবারক হোসেন জানান, চাঁদপুরে এবার ব্যাপক সরিষার চাষাবাদ করার সম্ভাবনা রয়েছে। এ বছরের মুল্যে কৃষককুল লাভবান হয়েছে। আশা করি উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী হবে।
সরকার এবার বীজ,সার ও নগদ অর্থ প্রণোদনা হিসেবে দিয়েছে। এবার প্রায় ৮০ হাজার কৃষক প্রণোদনা গ্রহণ করে কৃষি উৎপাদন কাজে লাগাতে পারবে।
আবদুল গনি
ডিসেম্বর ৭ , ২০২৪
এজি