পেঁয়াজ উৎপাদনে দশম স্থান থেকে তৃতীয়তে বাংলাদেশ

পেঁয়াজ উৎপাদনে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়, যা আগে ছিল দশম। বুধবার বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের আঞ্চলিক মসলা গবেষণা কেন্দ্রের গবেষণা মাঠে বারি পেঁয়াজ-৫-এর উৎপাদন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিজ্ঞানীরা এ তথ্য জানান। জানা গেছে, প্রতিবছর দেশে পেঁয়াজের চাহিদা ৩৫ থেকে ৩৬ লাখ মেট্রিক টন।

সেখানে গতবছর উৎপাদন হয়েছে ৩২ লাখ মেট্রিক টন। গত এক বছরে দেশে পেঁয়াজ উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ৮ লাখ মেট্রিক টন। বিজ্ঞানীরা বলেন, ‘নতুন জাত সঠিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করলে পেঁয়াজ উৎপাদনে শিগগির স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করবে বাংলাদেশ।’

গত দু’বছর ধরে দেশে কৃষিপণ্য পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে নেই। পেঁয়াজ নিয়ে ভোক্তাদের অভিযোগ বিস্তর। গুদামে পেঁয়াজ থাকলেও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দাম বাড়ানো হয়েছে। প্রায়ই সপ্তাহান্তে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। এমনিতে করোনাকাল চলছে। নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই।

কৃষি এদেশের অর্থনীতির এক অতি গুরুত্বপূর্ণ খাত। বর্তমানে দেশে জিডিপির প্রায় এক-পঞ্চমাংশ অর্জিত হয় কৃষি খাত থেকে। এখনও এদেশের বিপুল জনসংখ্যার কর্মসংস্থানও হয়ে থাকে কৃষিকে অবলম্বন করেই। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার সেটি অনুধাবন করতে সক্ষম হয়। আমাদের কৃষি ক্ষেত্রে যে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে তা বর্তমান সরকারের দূরদর্শী কৃষিভাবনার প্রতিফলন।

দেশে খাদ্যঘাটতি নেই। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেড় যুগ ধরে কৃষি ক্ষেত্রে বহুমাত্রিক উৎপাদনে গতি পাওয়ার ফলে দেশে এখন মানুষ না খেয়ে থাকে না।

কৃষি ক্ষেত্রে নানা ভর্তুকিসহ উচ্চ ফলনশীল বীজ সরবরাহ, কৃষিঋণ সময়মতো কৃষকের হাতে পৌঁছানোর ফলে অতীতের তিনগুণ বেশি ফলন হয়ে থাকে।

কৃষি অধিদফতর সূত্র বলছে, দেশে পেঁয়াজের চাহিদায় ঘাটতি ৪ লাখ মেট্রিক টন। এ ঘাটতি আমদানির মাধ্যমে পূরণ করা সম্ভব। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট পেঁয়াজ-৫-এর উচ্চ ফলনশীল পেঁয়াজ উৎপাদন শুরু করেছে, যা আগামীতে দেশের পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়াতে বড় ভূমিকা রাখবে।

আমরা বিশ্বাস করি, কৃষি নিয়ে যত গবেষণা বাড়বে, দেশে তত বেশি কৃষিপণ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। অল্প খরচে বেশি ফসল উৎপাদন কীভাবে করা যেতে পারে, সেটাকে বিবেচনায় রেখে মাটির উর্বরতা এবং পরিবেশ বিবেচনা করে সারা দেশে অঞ্চলভিত্তিক কৃষি গবেষণা প্রয়োজন।

এতে কৃষি খাত সমৃদ্ধ হবে। ২০৪১ সালের ভিশনকে সামনে রেখে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আমাদের আরও মনোযোগী হতে হবে। বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ। ভূমিস্বল্পতার কথা বিবেচনায় রেখে খাদ্যপণ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে। উৎপাদন বাড়লে নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়ে রফতানিও করা যাবে।

আমরা মনে করছি, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট নতুন জাতের পেঁয়াজ উৎপাদনের যে সুখবর দিয়েছে তা কৃষিখাত ও ভোক্তাদের জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে। আমরা সংশ্লিষ্টদের আন্তরিক সাধুবাদ জানাই।

বার্তা কক্ষ,২৮ জানুয়ারি ২০২২

Share