আসন্ন চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পৌর এলাকার ভোটার ও প্রার্থীদের অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত রাখার আদেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত।
২৪ এপ্রিল বুধবার বর্তমান উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আবিদা সুলতানার রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চ।
এ ছাড়া আদেশে আদালত কেন পৌর এলাকার ভোটার এবং প্রার্থীদের উপজেলা নির্বাচনে নিষিদ্ধ করা হবে না জানতে চেয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, নির্বাচন সচিব, রিটার্নিং অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট ৬ জনকে চার সপ্তাহের রুল জারি করেন।
যদিও নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী আগামী ২১ মে চাঁদপুর সদর উপজেলায় নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। ইতোমধ্যে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলের পর যাচাই-বাছাই শেষে চেয়ারম্যান পদে ৪ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং অফিসার। এর মধ্যে একজন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ছাড়া অন্য সব প্রার্থীই পৌর এলাকার নাগরিক।
এ বিষয়ে চাঁদপুর সদর উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান বলেন, ‘চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদের সেবা ও বরাদ্দ পৌরসভার ভোটাররা পায় না। পৌর এলাকায় আমাদের কাজ করার কোনও অধিকারও নেই। কারণ, পৌর এলাকার সব কিছু পৌরসভাই দেখে। তাই উপজেলা পরিষদ থেকে পৌর এলাকার ভোটারদের বাদ দেওয়া এবং উপজেলা নির্বাচনে পৌর এলাকার ভোটাররা যাতে প্রার্থী হতে না পারেন সে বিষয়ে আদালত রুল জারি করেছেন।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ও চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বশির আহমেদ বলেন, ‘নির্বাচনের ওপর কোনও স্থগিতাদেশ হয়নি। আদালত বলেছেন, সদর উপজেলা নির্বাচনে ১৪টি ইউনিয়নের নাগরিকেরা ভোট দেবেন। আর পৌর এলাকার কোনও ভোটার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা নির্বাচন কমিশনকে বিষয়টি জানিয়েছি। এ ব্যাপারে বাকি সিদ্ধান্ত কমিশন নেবে।’
আদালত সূত্র জানায়, গত মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) চাঁদপুর সদর উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আবিদা সুলতানা সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন। তিনি তার রিট পিটিশনে পৌরসভা নির্বাচন আইন, বিধিমালা ও নিয়মকে চ্যালেঞ্জ করেন। সেই সঙ্গে আগামী ২১ মে অনুষ্ঠেয় চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাচনে চাঁদপুর পৌর এলাকার ভোটারদের ভোট প্রদান, নির্বাচনে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থিতা থেকে নিষিদ্ধ করার আবেদন করেন। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চে শুনানির পর বিচারপতিগণ প্রতিপক্ষগণের ওপর এ রুল জারি করেন। সেই সঙ্গে আগামী ২১ মে চাঁদপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সদর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন পরিষদের ভোটার ছাড়া পৌর এলাকার ভোটারদের অন্তর্ভুক্তকরণ এবং পৌরসভার কোনও প্রার্থীর নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কেন অবৈধ হবে না—সে মর্মে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেছেন।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, সিইসি, নির্বাচন কমিশনের সচিব, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার, রিটার্নিং অফিসারসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। রুল বলবৎ থাকা অবস্থায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চাঁদপুর পৌর এলাকার ভোটারদের ভোট প্রদান, চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থিতা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
স্টাফ করেসপন্ডেট, ২৬ এপ্রিল ২০২৪