Home / সারাদেশ / ১০ অক্টোবর মধুমতী সেতু’র উদ্বোধন
Madumati

১০ অক্টোবর মধুমতী সেতু’র উদ্বোধন

গোপালগঞ্জ-নড়াইল জেলার সীমান্তের কালনা পয়েন্টে নির্মিত দেশের প্রথম ৬ লেনের দৃষ্টিনন্দন‘মধুমতী সেতু’১০ অক্টোবর উদ্বোধন করা হবে। ওইদিন থেকেই সেতুতে গাড়ি চলবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করবেন এটি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের প্রকল্প পরিচালক শ্যামল ভট্টাচার্য উদ্বোধনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ওই কর্মকর্তা বলেন,‘ ১০ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি একই সঙ্গে উদ্বোধন করবেন কালনা পয়েন্টের ‘মধুমতী সেতু’ ও নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা সেতু।’

২২ সেপ্টেম্বর সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মধুমতী সেতু পরিদর্শনে আসেন। সেদিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সেতু মন্ত্রী বলেছিলেন, অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতুটি উদ্বোধন করবেন।

২৫ জুন পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর যশোর ও নড়াইলসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের কাছে কালনা সেতু নিয়ে আগ্রহ বেড়েছে। পদ্মা সেতু পার হয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের প্রবেশদ্বার হবে কালনাঘাট। এ অঞ্চলের মানুষ ওই সেতু উদ্বোধনের প্রহর গুণছেন। দৃষ্টিনন্দন এ সেতু দেশের প্রথম ৬ লেনের সেতু।

মধুমতি নদীর কালনা পয়েন্টে এ সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। এ সেতুর পূর্ব পাড়ে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলা শংকরপাশা ও পশ্চিম পাড়ে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা কলনা। শংকরপাশা গোপালগগঞ্জ জেলা সীমান্তের গ্রাম। আর কালনা নড়াইল জেলা সীমন্তের গ্রাম। দু’জেলার সীমান্তে নির্মিত সেতু ঢাকার সাথে অন্তত: ১০ জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ করে দেবে।

ইতিমধ্যে মূল সেতু ও সংযোগ সড়কের সব কাজ শেষ হয়েছে। সেতুর অর্ধেক অংশে ল্যাম্পপোস্ট বসানো শেষ হয়েছে। টোল প্লাজার আটটি বুথ করা হয়েছে । সেখানে যন্ত্রপাতি বসানোর প্রস্তুতি চলছে। সেতু এলাকায় চলছে নদী শাসনের কাজ চলছে।

কালনা সেতুর প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও সওজ নড়াইলের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.আশরাফুজ্জামান বলেন,‘সেতুতে ল্যাম্পপোস্ট দু-তিনদিনের মধ্যেই বসানো শেষ হবে। টোল প্লাজার সব কাজ উদ্বোধনের আগেই শেষ হবে। গাড়ি চলার জন্য পুরোপুরি প্রস্তত সেতুটি। নদী শাসনের কাজ পর্যায়ক্রমে করা হবে।

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) অর্থায়নে এ সেতু নির্মিত হয়েছে। জাপানের টেককেন করপোরেশন ও ওয়াইবিসি এবং বাংলাদেশের আবদুল মোনেম লিমিটেড যৌথভাবে এ সেতুর ঠিকাদার।

এ সেতু চালু হলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্তত: ১০ জেলার মানুষের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘব হবে। এ সেতু বেনাপোল বন্দর থেকে ঢাকার দূরত্ব কমবে ১৩০ কি.মি। এখানে সেতুর দাবিতে বহু আন্দোলন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০০৮ সালের ১৯ ডিসেম্বর নড়াইলের নির্বাচনি জনসভায় এ সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে সেতুর কাাজের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেছিলেন।

মধুমতী সেতু প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানান,সেতুর মাঝখানে বসানো হয়েছে ১৫০ মিটার দীর্ঘ স্টিলের স্প্যান। নেলসন লোস আর্চ টাইপের (ধনুকের মতো বাঁকা) এ স্প্যানটি তৈরি হয়েছে ভিয়েতনামে।

ওই স্প্যানের উভয় পাশের অন্য স্প্যানগুলো পিসি গার্ডারের । ছয় লেনের এ সেতু হবে এশিয়ান হাইওয়ের অংশ। চারটি মূল লেনে দ্রুতগতির ও দু’টি লেনে কম গতির যানবাহন চলাচল করবে।

সেতুর দৈর্ঘ্য ৬৯০ মিটার ও প্রস্থ ২৭.১০ মিটার। উভয় পাশে সংযোগ সড়ক ৪.২৭৩ কি.মি, যার প্রস্থ ৩০.৫০ মিটার। সেতু নির্মাণে ব্যয় হয় ৯৫৯.৮৫ কোটি টাকা।

৭ অক্টোবর , ২০২২
এজি