চাঁদপুরে আলু উত্তোলন শুরু : লক্ষ্যমাত্রা পৌনে ২ লাখ মে.টন

চাঁদপুরে আলু উত্তোলন শুরু। ফলনও বেশ ভালো। ইতোমধ্যেই চাষিরা তাদের আলু তোলা শুরু করেছে। গন্ডা প্রতি ১২-১৩ মণ উৎপাদন হয়েছে বলে চাষিরা জানিয়েছেন। বস্তাভরে হিমাগারে প্রেরণও করছে।এবার প্রচলিত পাটের বস্তার বদলে অন্যরকম ব্যাগ ব্যবহার করতে দেখা যাচ্ছে ।

চাঁদপুরে চলতি ২০২১-২২ মৌসুমে আলু উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৯৬ হাজার ৮০ মে.টন। এ বছর ৯ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। চাঁদপুর আলু উৎপাদনে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।

চাঁদপুর খামার বাড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রবিমৌসুমের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায় ।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, চাঁদপুর সদরে এবার আলু চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ১ হাজার ৭শ হেক্টর এবং উৎপাদন ৩৫ হাজার ৮৮ মে.টন। মতলব উত্তরে ৬শ ২০ হেক্টর এবং উৎপাদন ১২ হাজার ৭শ ৯৭ মে.টন। মতলব দক্ষিণে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৩ হাজার ৭শ হেক্টর এবং উৎপাদন ৭৬ হাজার ৩শ ৬৮ মে.টন। হাজীগঞ্জে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৭শ ২০ হেক্টর এবং উৎপাদন ১৪ হাজার ৮শ ৬১ মে.টন। শাহরাস্তিতে চাষাবাদ লক্ষ্যমাত্রা ২০ হেক্টর এবং উৎপাদন ৪শ ১২ মে.টন। কচুয়ায় চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ২ হাজার ৫শ হেক্টর এবং উৎপাদন ৫১ হাজার ৬শ মে.টন। ফরিদগঞ্জে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৯০ হেক্টর এবং উৎপাদন ১ হাজার ৮শ ৫৭ মে.টন এবং হাইমচরে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ১ শ ৫০ হেক্টর এবং উৎপাদন ৩ হাজার ৯৬ মে.টন ।

চাঁদপুরে ১২টি হিমাগারে ৭০ হাজার মে.টন আলু সংরক্ষণ করার ধারণ ক্ষমতা রয়েছে। বাকি আলু হিমাগারের বাহিরে থাকে। এর মধ্যে কিছু পরিমাণ আলূ উৎপাদন মৌসুম খেকে বিক্রি হয়ে আসছে এবং বাকি আলু কৃষকগণ কৃষিবিভাগের পরামর্শে কৃত্রিমভঅবে মাচায় সংরক্ষণ করা হয়েছে বলে কৃষিদপ্তর জানান ।

এদিকে চলতি করোনা মহামারীতে ত্রাণ হিসেবে সর্বমহলে চালের পাশাপাশি আলু রাখায় কৃষকগণ আলুর ভালো দাম পাচ্ছে। বর্তমানে প্রতি কেজি আলুর খুরচাা মূল্য ১৮-২০ টাকা। তবে লকডাউনের কারণে হোটেল রেস্তোঁরায় আলুর চাহিদা বিদ্যমান রয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে প্রাপ্ত তথ্য মতে, কৃষকদের সাথে কাথা বলে জানা যায়,বর্তমানে কৃষকরা লাঙ্গলের পরিবর্তে ট্রাক্টর, হোচার পরিবর্তে বিদ্যুৎ চালিত স্যালো সেচ ব্যবস্থায়, গোবরের সারের পরিবর্তে বিভিন্ন প্রকার উন্নত রাসায়নিক সার ব্যবহার, উন্নত বীজ, পরিমিত কীটনাশকের ব্যবহার,নতুন নতুন জাতের উদ্ভাবন ও প্রযুক্তির ব্যবহার ও আবহাওয়ার অনুকূল পরিবেশ থাকলে আলুর বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা ছিল বলে জানান।

চাঁদপুর জেলা একটি নদীবিধৌত কৃষি ভিক্তিক অঞ্চল বিধায় কৃষকরা সময়মত চাষাবাদ,বীজবপন ও সঠিক পরিচর্যায় পারদর্শী। জেলার ব্যাংকগুলো যথারীতি ফসল ঋণ প্রদান করে কৃষিপণ্য উৎপাদনে ব্যাপক সহায়তা দিচ্ছে। এ দিকে চাঁদপুরের সাথে নৌ,সড়ক ও রেলপথের উত্তম যোগাযোগ থাকায় দেশের সর্বত্র কৃষিপণ্য পরিবহন অন্যান্য জেলার চেয়ে খুবই সহজ ও নিরাপদ ইত্যাদি সুযোগ থাকা সত্বেও চাষিরা মার খাচ্ছে।

প্রসঙ্গত,আলু বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরি সবজি। চাঁদপুর আলু উৎপাদনে দেশের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অর্জন জেলা। মুন্সীগঞ্জের পরেই চাঁদপুরের স্থান। ফলে চাঁদপুরে বেসরকারিভাবে ১২টি কোল্ডস্টোরেজ রয়েছে।এগুলোর ধারণক্ষমতা মাত্র ৭০ হাজার মে.টন।

মতলবের করিম কোল্ডস্টোরেজের সংরক্ষণাগারটির ধারণ বাড়ালেও বাকি আলু কৃষকদের নিজ দায়িত্বে মাচায় বা কৃত্রিম উপায়ে সংরক্ষণ করা হয়েছে ।

৮ উপজেলায় আলুর চাষাবাদ ও উৎপাদনে বিভিন্ন জাতের আলু চাষাবাদ করে থাকে চাঁদপুরের কৃষকরা। কম-বেশি সব উপজেলাই আলুর ফলন ও চাষাবাদ হয়ে থাকে। বিগত ক’বছর ধরেই চাঁদপুরে ব্যাপক আলু উৎপাদন হচ্ছে।

বিশেষ করে আলু উৎপাদনকারী অঞ্চলগুলোর মধ্যে হচ্ছে সফরমালী,রালদিয়া,মুন্সীরহাট, মতলব দক্ষিণ, নারায়ণপুর, কুমারডুগি, শাহাতলী, কেতুয়া এলাকা। বর্তমানে আলুর খুচরা মূল্য ২০ টাকা কেজি ।

আবদুল গনি,১৫ মার্চ ২০২২

Share