চাঁদপুর শহরের প্রধান পৌর ঈদ গাঁ’টি সৌন্দর্য ফিরে পেলেও অবৈধ দখল, গাড়িং পার্কিং ও ময়লা ফেলার কারণে আজও তার পবিত্রতা রক্ষা পায়নি। যে যার ইচ্ছে মতোই ব্যবহার করছে ঈদ গাঁয়ের মাঠ।
পৌর ঈদ গাঁ টি এখনো বিভিন্ন গাড়ি পাকিং, নির্মাণ সামগ্রী, হকার ও কাঁচা মাল, ব্যবসায়ীদের দখলে রয়েছে। যেখানে মুসলমানরা প্রতি বছর পবিত্র ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার নামাজ আদায় করে থাকেন। সে মাঠটিতে এখনো ফেলা হচ্ছে ময়লা, আর্বজনা। প্রতিনিয়ত পার্কিং করা হচ্ছে পিকআপ ভ্যান, ট্রাক,এ্যাম্বুলেস, রিক্সা, ঠেলাভ্যান।
শহরের প্রধান এই কেন্দ্রীয় ঈদ গাঁটি নিয়ে এর কয়েক বছর পূর্বে এমন অরক্ষিত বিষয় নিয়ে স্বচিত্র সংবাদ প্রকাশ হলে এর রক্ষনাবেক্ষনের উদ্যোগ নেন চাঁদপুর পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। এর সৌন্দর্য ও পবিত্রতা রক্ষায় চাঁদপুর পৌরসভা প্রায় ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে উন্নত পরিসরে ঈদ গাঁ’য়ের চর্তুদিকে বাউন্ডারি দেয়াল নির্মাণ করেন। যাতে করে ঈদ গাঁয়ের ভেতরে গরু ছাগল, কিংবা কোন মানুষজন চলাফেরা করতে না পারে। এতে করে ঈদ গাঁয়ের পবিত্রতা ও সৌন্দর্য রক্ষা পাবে।
আর উত্তর পাশের কবি নজরুল সড়ক লাগোয়া যে বাউন্ডারি নির্মান করা হয়েছিলো ,সেটির পূর্ব এবং পশ্চিম পাশের পূর্বের মতোই দুটি প্রধান গেট করা হয়। তবে গেট গুলো আগের তুলনায় অনেক উন্নত পরিসরে নির্মান করা হয়।
ওই সময় নির্মাণ কাজ পুরোপুরি শেষ না হতেই ঈদ গাঁয়ের পশ্চিম পাশের গেট দিয়ে একটি সিমেন্ট কোম্পানীর ট্রাক প্রবেশ করার সময় নবনির্মিত গেটটির উপরের অধিকাংশ ভেঙ্গে ফাটল ধরে। তারপর সেটি নিয়ে একটি স্বচিত্র সংবাদ প্রকাশ পায়। পরে স্টীলের তৈরি দুটি গেটে তালা লাগিয়ে দেয়া হয়েছিলো। কিছুদিন যেতেই একই ভাবে পূর্বের মতো রূপ নেয় এই প্রধান ঈদ গাঁটি। সেখানে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন যানবাহন পার্কিং করা হচ্ছে। একই সাথে ফেলা হচ্ছে ময়লা আর্বজনা। ঈদ মাঠের এমন দৃশ্য দেখে সচেতন মহল মনে করছেন, চর্তুদিকে দেয়াল নির্মাণ করে এর সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেলেও আজও ঈদ গাঁ টির পরিপূর্ণ পবিত্রতা রক্ষা পায়নি।
চাঁদপুরের প্রধান ঈদ গাঁ হিসেবে পৌরসভার এই ঈদ গাঁ মাঠেই প্রতিবছর পবিত্র ঈদের নামাজ আদায় করেন মুসলমানরা। অথচ কিছু সুবিদা ভোগীদের দখলে সে ঐতিহ্যবাহী ঈদ গাঁ টি যেনো অরক্ষিত হয়ে পড়ে আছে। তা দেখার যেনে কেউ নেই।

চাঁদপুর শহরের কবি নজরুল সড়কস্থ ( সাবেক স্ট্যান্টরোড) পুরান বাজার নতুন বাজার ব্রীজের নিকটে অবস্থিত পৌর ঈদ গাঁ মাঠটিতে সরজমিনে গিয়ে দেখাযায়, মাঠের চর্তুদিকে মাঠ জুড়ে পিকআপ ভ্যান, এ্যাম্বুলেন্স, ট্রাক, ঠেলাভ্যান, রিক্সাসহ বিভিন্ন ছোট- বড় যানবাহন পাকিং করে রাখা হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন পঁচা কাঁচামাল সেখানে ফেলে রাখার কারনে এবং বহিরাগতদের মল মূত্রে সেখানে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। যার কারনে ঈদ গাঁ মাঠটি একদিকে যেমন পবিত্রতা রক্ষা পাচ্ছেনা অন্যদিকে পরিবেশ দূষিত হয়ে তার সৌন্দর্য হারাচ্ছে শহরের এই প্রধান ঈদ গাঁটি।
এর পাশাপাশি দেখা গেছে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন বাসা বাড়ির লোকদের ময়লা আবর্জনা ফেলার জন্য কয়েক বছর পূর্বে চাঁদপুর পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ঈদ গাঁয়ের এককোণে নির্দিষ্ট একটি ডাস্টবিন নির্মান করে দেন। অথচ প্রতিনিয়ত দেখা যায় স্থানীয় বাসিন্দারা ও কিছু কাঁচামাল আড়াৎদাররা নির্দিষ্ট ওই ডাস্টবিনে তাদের পঁচা কাঁচামাল না ফেলে ডাস্টবিনের পাশে সড়কের ওপর অথবা ঈদ গাঁ মাঠে ওইসব পঁচা কাঁচামাল ফেলছেন। তাদের এসব ময়লা আবর্জনা মাঠে এবং সড়কে ফেলে রাখার কারনে সেগুলো দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পরিবেশ নষ্ট করছে।
প্রায়ই দেখা যায় ওই সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী পথচারীরা দুর্গন্ধের কারনে নাকে হাত দিয়ে দ্রুত পায়ে হেটে যাতায়াত করছেন। এছাড়া প্রতিদিন সকালে ঘুরতে বের হওয়া মানুষজন ওইসব পঁচে যাওয়া কাঁচা মালের স্তুপে স্লিপ খেয়ে পড়ছেন।
তাই চাঁদপুরের এই ঐতিহ্যবাহী প্রধান ঈদ গাঁ মাঠটির পবিত্রতা রক্ষা করার জন্য মাঠের দুপাশে থাকা গেট দুটিকে স্থায়ী ভাবে বন্ধ রেখে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চাঁদপুর পৌর কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
এ বিষয়ে চাঁদপুর পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ সোহেল রানার সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, যারা সেখানে প্রতিনিয়ত গাড়ি পার্কিং কিংবা ময়লা-আবর্জনা ফেলছে তা সম্পর্ণ অবৈধ। তবে তারা যদি ঈদগাঁহের মাঠে গাড়ি পার্কিং না করে তাহলে দেখা গেছে সড়কের উপর গাড়ি রাখলে সেখানে অনেক যানজটের সৃষ্টি হয়। তাই আমরাও তাদেরকে এখনো সেভাবে গাড়ি না রাখতে নিষেধ করিনি। তিনি আরো জানান, চাঁদপুর শহরের পালবাজার এলাকার সড়কটি অনেক প্রশস্ত করা হবে তখন হয়তো খুব সহজেই এর সমাধান হয়ে যাবে। তারপরেও ঈদগা মাঠে গাড়ি পার্কিংয়ের বিষয়ে পৌর মেয়রের সাথে কথা বলে এই বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করার চেষ্টা করবো।
প্রতিবেদক: কবির হোসেন মিজি, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur