একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনী এলাকায়ই এবার ঈদ করছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। শুধু নেতারা নয় সরকারের মন্ত্রীরাও এবার এলাকাতেই ঈদ করছেন। দলীয় নেতা ও মন্ত্রীদের সঙ্গে কথা এমনই জানা গেছে।
চলতি জুন মাসে জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনের কারণে রোজায় এলাকায় খুব বেশি সময় দিতে পারেননি অধিকাংশ নেতা ও মন্ত্রী।
নিজ নির্বাচনী এলাকায় ঈদ করার পাশাপাশি তারা অংশ নেবেন বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে। যারা ঈদের দিন এলাকায় যেতে পারছেন না, তারাও আগে-পরে সময় করে দেখা করবেন নিজ এলাকার মানুষের সঙ্গে। অংশ নেবেন বিভিন্ন কর্মসূচিতে।
জানা গেছে, পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এবার গণভবনেই ঈদ উদযাপন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রতি বছরের মতো এবারও ঈদের দিন সকালে গণভবনে রাজনৈতিক নেতা, কূটনৈতিকসহ দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন তিনি। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ঈদের নামাজ ঢাকাতেই পড়বেন। তবে ঈদের দিন বিকেলে বা পরদিন সকালে নিজ নির্বাচনী এলাকা নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে যাবেন বলে জানা গেছে।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের মধ্যে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু নির্বাচনী এলাকা ঝালকাঠিতে, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ভোলায়, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সিলেটে ঈদ করবেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যদের মধ্যে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এবারও দেশের বাইরে ঈদ করবেন। পরিবারের লোকজনের সঙ্গে লন্ডনে ঈদ করার কথা রয়েছে জনপ্রশাসনমন্ত্রীর। সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, কাজী জাফরউল্লাহ এবং কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় ঈদ করবেন বলে জানা গেছে।
গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন চট্টগ্রামে ঈদ করবেন। অন্যদিকে আরেক সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ঈদের দিন সকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গণভবনে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। ঢাকায় ঈদের দিন কাটিয়ে পরের দিন নির্বাচনী এলাকা সিরাজগঞ্জ যাবেন। সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ঈদ করবেন সিলেটে।
দলের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান ঢাকাতেই ঈদ করবেন। তিনি বলেন, আমি ঈদের আগেই আমার এলাকার মানুষের সঙ্গে সাক্ষাৎ করি। এবারও করে এসেছি। ইফতারসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছি। জাকাতের কাপড় বিতরণ করেছি।
দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে মাহবুব উল আলম হানিফ ঈদ করবেন নিজ এলাকা কুষ্টিয়ায়। জাহাঙ্গীর কবির নানকের নির্বাচনী এলাকা ঢাকা হওয়ায় তিনি ঢাকাতেই ঈদ করবেন। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি সকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করে পরে চাঁদপুরে যাবেন। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান ফরিদপুরের মধুখালিতে নিজ এলাকার মানুষের সঙ্গে ঈদ করবেন।
সাংগঠনিক সম্পাদকদের মধ্যে একেএম এনামুল হক শামীম ঈদ করবেন নিজ এলাকা শরীয়তপুরে। খালিদ মাহমুদ চৌধুরী নিয়মিতই এলাকায় যান। তিনি জানান, ঢাকা অথবা দিনাজপুরে তার ঈদ করার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া আহমদ হোসেন নেত্রকোনায়, মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ সিলেটে, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম মাদারীপুরে, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন ঈদ করবেন জয়পুরহাটে।
প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ চট্টগ্রামে, দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ মাদারীপুরে, কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী ঈদের দিন সকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বিকেলে নোয়াখালীতে নিজ এলাকায় যাওয়ার কথা রয়েছে। তিনি বলেন, ঈদের দিন বিকেলে কয়েক দিনের জন্য এলাকায় যাব। তথ্য ও গবেষণা সম্পদক আফজাল হোসেন ঈদ করবেন নিজ এলাকা পটুয়াখালীতে।
সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল ও তার স্ত্রী যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল ঈদের দিন সকালে প্রধামন্ত্রীর সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করে চলে যাবেন নিজ এলাকা নেত্রকোনায়। সেখানে এলাকার মানুষের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন তারা। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস ঈদের দিন মুন্সীগঞ্জে থাকবেন। বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন ঢাকায় ঈদ করবেন। উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন ঈদ করবেন নিজ বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায়।
নিউজ ডেস্ক : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০৯:৪৫ এ.এম, ২৭ জুন ২০১৭,মঙ্গলবার
ইব্রাহীম জুয়েল