ঈদের আগে ও পরে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ঘরে ফেরা যাত্রীদের নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে চাঁদপুর জেলা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
নিরাপত্তায় থাকছে কোস্টগার্ড, নৌ-পুলিশ, বিআইডব্লিউটিএ, আনসার ও স্কাউটসসহ অন্যান্যরা।
ঘরে ফেরা যাত্রীরা যাতে নির্বিঘ্নে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে সেজন্য নেয়া হয়েছে সব ধরনের নিরাপত্তা প্রস্তুতি। এমন নিরাপত্তা থাকবে ঈদের পরে ৭ দিন পর্যন্ত।
সড়ক ও নৌ-পথে যাত্রী হয়রানি রোধ ও যানবাহনে অতিরিক্ত যাত্রী ওঠা বন্ধ, ছিনতাই ও মলম পার্টি দৌরাত্ম্য রোধসহ অন্যান্য অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কঠোর নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে চাঁদপুরে।
এজন্য পুলিশের ৪ শতাধিক সদস্য জেলার বিভিন্ন মার্কেট, গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট, বাস টার্মিনাল, নৌ-টার্মিনাল ও সড়কে অবস্থান করবে। পাশাপাশি সাদা পোশাকধারী আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও নজরদারি করবে, যাতে কোনো প্রকার আইন-সৃঙ্খলার ব্যত্যয় না ঘটে।
চাঁদপুর জেলা পুলিশের ডিআইও-১(ডিএসবি) মো. মনিরুজ্জামান জানান, ‘ঈদে ঘরে ফেরা যাত্রীদের নিরাপত্তায় জেলার বিভিন্ন মার্কেট, বিপণীবিতান, গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট, বাস টার্মিনাল, নৌ-টার্মিনাল ও সড়কে অবস্থান করবে পুলিশের ৩৭৫ সদস্য। ঈদ পরবর্তী সময়ে কর্মস্থলে ফিরে যাওয়া যাত্রীদের জন্যও নিরাপত্তা ব্যবস্থা বলবত থাকবে। এছাড়া জেলার সবখানে ২০ সদস্যের সাদা পোশাকধারী আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যের কঠোর নজরদারি অব্যাহত রাখবে।’
এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলা নৌ-পুলিশ জানিয়েছে, ‘নৌ-পথে ঈদের আগে ও পরে যাত্রীদের নিরাপত্তা ও ঘরে ফিরতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। রাখা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। সেখান থেকে রাত-দিন তদারকি করা হচ্ছে নিরাপত্তার সার্বিক দিকগুলো। তাছাড়া নৌ-পুলিশের ৫০ সদস্যের পাশাপশি জেলা পুলিশের বেশ কিছু সদস্য অতিরিক্ত নিরাপত্তায় দায়িত্বে রয়েছে। এবার ঈদে ঘরে ফেরা যাত্রীরা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে ঈদ উদযাপন করে পরবর্তীতে নিজ নিজ কর্মস্থলে ফিরতে পারবেন বলে তারা জানিয়েছে।’
তিনি আরো জানান, কোনো লঞ্চে যাতে অতিরিক্ত যাত্রী উঠাতে না পারে, সেজন্য পেট্রোল বোর্ড রাখা হয়েছে। তারা নদীর মাঝখান থেকে যাত্রীদের নিরাপদে টার্মিনালে নিয়ে আসবে এবং পরবর্তী লঞ্চ বা স্টিমারে ফেরার ব্যবস্থা করবে।
বিআইডব্লিউটিএ’র উপ-পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ঈদে ঘরে ফেরা যাত্রীদের সুবিধার্থে একটি সমন্বয় টিমের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ছিনতাই ও মলম পার্টির দৌরাত্ম্যসহ অন্যান্য অপরাধ শূন্যের মাত্রায় কমিয়ে আনতে নৌ-পুলিশ, স্কাউটস ও আনসার সদস্যরা সর্বাত্মক কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি জানান, লঞ্চে যাত্রীদের ওভারলোড যাতে না হয়ে সে জন্য নৌকা ও টেম্পুর আলাদা রুট নির্ধারণ করা হয়েছে। অধিকতর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নৌ টার্মিনাল থেকে হকার উচ্ছেদ করা হয়েছে। যাতে ভিড়ে কিংবা যাত্রী উঠা নামার সময় কোনো আপত্তিকর ঘটনা না ঘটে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে জানান, এবারের ঈদ ও ঈদের পরবর্তী সময়ে নৌ-পথে যাত্রীরা হয়রানির শিকার হবে না।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার জানান, ‘ঘরমুখী যাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে লঞ্চ ঘাট, জনগুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা বাস টার্মিনালসহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সাদা পোশাকধারী পুলিশের সাথে নিয়মিত পুলিশ সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এছাড়া আইন-সৃঙ্খলা বাহিনীর মোবাইল টিম, ভিজিটিং টিম, নৌ-পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখছে।’
পুলিশ সুপার আরো জানান, লঞ্চ ঘাটে সিএনজিতে যাত্রীদের উঠানো নিয়ে দুর্ভোগ কমিয়ে আনতে সিএনজি মালিক সমিতির সাথে আলোচনা করা হয়েছে। এখন থেকে হলুদ রঙয়ের সিএনজি লঞ্চ টার্মিনালে প্রবেশ করবে। হলুদ রঙ না থাকলে কোনো সিএনজি টার্মিনালে প্রবেশ করতে পারবে না। এছাড়া রেজিস্ট্রেশনবিহীন কোনো সিএনজিকে গ্যাস না দিতে পাম্প মালিকদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
তিনি আশা করেন, যাত্রী ও শহরের বিপণীবিতানসহ অনান্য স্থানে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার বিষয়ে পুলিশ সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করেছে। ফলে সর্বসাধারণ শান্তিপূর্ণভাবে এবার ঈদ উদযাপন করতে পারবে বলে তিনি আশাবাদী।
নিউজ ডেস্ক ।। আপডেট ০৫:০৫ পিএম,০৩ জুলাই ২০১৬,রোববার
এইউ