নন–এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করার দাবিতে আজ থেকে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে নন–এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তারা।
আজ সোমবার সকাল ১০টা থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি শুরু হবে। গতকাল রবিবার বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
এমপিওভুক্তির দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষক-কর্মচারীরা গত ১০ জুন থেকে টানা ৮ দিন ধরে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছে। রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সমানের রাস্তায় সহস্রাধিক শিক্ষক এ আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন।
নানা স্লোগানে ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে বিভিন্ন জেলা থেকে আগত শিক্ষক-কর্মচারীরা এ কর্মসূচি পালন করছেন। তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নারী শিক্ষকরাও। নিজেদের অধিকার আদায়ে অনেক নারী শিক্ষক ছোট সন্তান রেখেই এ আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন বলে জানান।
নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারী সংগঠনের সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার বলেন, ঈদের মতো এমন আনন্দের দিনেও বেতন না পাওয়ায় তারা রাজপথে ঈদ পালন করেছেন। তাদের পারিবারের সদস্যরাও না খেয়ে আছেন। যতক্ষণ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এমপিওভুক্ত না হচ্ছে ততক্ষণ আমরা রাজপথ ছাড়ব না।
তিনি বলেন, রমজান ও ঈদের জন্য আমাদের আন্দোলন (অবস্থান কর্মসূচি) অর্ধবেলা হলেও আজ থেকে দিনরাত কর্মসূচি পালিত হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী দেয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এমপিভুক্ত করা না হবে ততক্ষণ আমরা রাজপথেই অবস্থান করব।
আন্দোলনরত বরিশালের জল্লা ইউনিয়ন আইডিয়াল কলেজের ইতিহাসের প্রভাষক অরুণ কুমার বিশ্বাস বলেন, বিগত ১৮ বছর ধরে আমি শিক্ষকতা করছি। টিউশনি করে চলতে হয়। কোনো বেতন পাই না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স-মাস্টার্স করে শিক্ষকতা পেশায় এসে মানবেতর জীবন যাপন করছি। বিয়ে পর্যন্ত করতে পারিনি। বর্তমানে ছোট বোনের বিয়ের খরচ যোগাতে পারছি না। শিক্ষকতা পেশায় এসে কি তাহলে ভুল করেছি? বাধ্য হয়ে এখন আন্দোলনে যোগ দিয়েছি।
এর আগে একই দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনশন কর্মসূচিতে নামে নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারি ফেডারেশন। ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত অনশন করার পর প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে তারা অনশন ভঙ্গ করে ফিরে যায়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা তখন তাদের দাবি পূরণের প্রতিশ্রুতি দেন।
সারাদেশে বর্তমানে সাড়ে সাত হাজার নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে ৫ হাজার ২৪২টি স্কুল, কলেজ ও মাদরাসাকে।
স্বীকৃতিপ্রাপ্ত এসব প্রতিষ্ঠানকে এখনো এমপিওভুক্ত না করায় ফের আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষকরা।