চাঁদপুর টাইমস নিউজ ডেস্ক :
ঈদ স্পেশাল সার্ভিসে নৌপথে ২৭টি লঞ্চ ও স্টিমার নামলেও কেবিন অনুযায়ী সাতগুণ বেশি চাহিদা থাকায় টিকিট শঙ্কায় রয়েছেন যাত্রীরা।
বিআইডব্লিউটিএ, বিআইডব্লিউটিসি এবং লঞ্চ মলিকদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী ১৪ জুলাই থেকে ঈদের স্পেশাল সার্ভিস চালু হয়ে ঈদ পরবর্তী সপ্তাহ জুড়ে চলবে। এসময় বরিশাল থেকে ১৪টি, ঝালকাঠির ২টি, রায়েন্দাগামী ২টি এবং বরগুনাগামী মিলিয়ে ২০টি লঞ্চ বিশেষ ডাবল ট্রিপ দিবে। আর বিআইডব্লিউটিসি’র নিয়মিত ৫টি স্টিমারের সঙ্গে বাড়তি যোগ হচ্ছে এমভি শেলা এবং এমভি মধুমতি নামে ২টি স্টিমার। এই সাতটি স্টিমারে কেবিন সংখ্যা ১৬০টি। ২০টি লঞ্চে ভিআইপি ৭০টি নিয়ে কেবিন সংখ্যা হলো ১৩৭০টি। সোফা থাকছে ৫০০। এই কেবিন সংখ্যার বিপরীতে প্রতিদিন চাহিদা থাকছে ১৫ হাজার টিকিটের।
এদিকে ৩০ জুন থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত ঈদের ঘরে ফেরা টিকিটের স্লিপ জমা নেয় লঞ্চ মালিকরা। ৭ জুলাই থেকে যাত্রীদের জমা নেয়া স্লিপ থেকে টিকিট দেয়া শুরু হয়। এই প্রক্রিয়ায় বরিশালের সুন্দরবন ও সুরভী নেভিগেশন কোং কর্তৃপক্ষ টিকিট দিচ্ছেন। তবে এমভি টিপু এবং কীর্তনখোলা লঞ্চ কর্তৃপক্ষ আরও আগেই ঈদের টিকিট ছেড়েছেন। বরিশলের এই ৪টি লঞ্চ কোম্পানি ছাড়া পারাবত লঞ্চের টিকিট দেয়া হয়েছে ঢাকা অফিস থেকে।
স্টিমারের টিকিট নিয়ে বিআইডব্লিউটিসি’র ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) সৈয়দ আবুল কালাম জানান, তাদের ৫০ ভাগ টিকিট অনলাইন www.shohoz.com এর মাধ্যমে আর ৫০ ভাগ টিকিট দেয়া হচ্ছে প্রধান কার্যালয় থেকে। ঈদপরবর্তী কর্মস্থলে ফেরা টিকিটের চাহিদা বরিশাল থেকে থাকলেও তাদের কিছু করার নেই। যদি ফেরার টিকিট ঢাকা অফিসে থাকে তবে তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে বরিশাল অফিস থেকে যাত্রীদের দেয়া যাবে।
এদিকে, প্রতি বছরের মত আগাম স্লিপ জমা দিয়েও লঞ্চের টিকিট না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে ফিরে যেতে দেখা গেছে অনেককে।
সুরভী কাউন্টারে টিকেট নিতে আসা যাত্রী রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘আগাম স্লিপ দিয়েও টিকিট পাইনি। লঞ্চ মালিকরা পছন্দের লোকদের আর কলোবাজারিদের টিকিট দিয়ে দেয়। পরে যাত্রীরা দ্বিগুণ দামে কালোবাজারিদের কাছ থেকে টিকিট কেনে।’
তিনি জানান, ঈদ উপলক্ষে ডাবল কেবিন ৪শ’ টাকা বাড়িয়ে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার টাকায়, সিঙ্গেল কেবিন দেড় শ’ টাকা বেড়ে হাজার টাকা নেয়া হচ্ছে। আর সোফায় এক’শ টাকা বাড়িয়ে নিচ্ছে ৬শ’ টাকা করে। তবে সুরভী ও সুন্দরবন ব্যতীত অন্য লঞ্চে ডবল কেবিন ২২’শ, সিঙ্গেল ১১’শ করে নেয়া হচ্ছে।
ভাড়া বৃদ্ধি বিষয়ে লঞ্চ মলিক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি সাইদুর রহমান বলেন, ‘বরিশাল ঢাকা রুটে সরকার নির্ধারিত ভাড়া সিঙ্গেল কেবিন ১ হাজার ৩০ টাকা, ডাবল ২ হাজার ৭২ টাকা আর ডেকের টিকেট ২শ’ ৬২ টাকা। তাদের সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বাড়তি নেয়া যাবে না। সে অনুযায়ী তারা সরকারী রেটের চেয়ে কম ভাড়াই নিচ্ছেন যাত্রীদের কাছ থেকে।
সুরভী লঞ্চের পরিচালক রিয়াজ উল কবির জানান, টিকিট কলোবাজারি রোধে তারা নিজেরাই আগাম স্লিপ জমা নিয়েছেন। এক্ষেত্রে তারা অগ্রাধিকার দিচ্ছেন নিয়মিত যাতায়াত করেন এমন যাত্রীদের।
তিনি আরও জানান, ১২ জুন বরিশাল ঢাকা নৌপথে নতুন নামানো সুরভী-৯ লঞ্চে ২২০টি কেবিন আর ৪০টি সোফা রয়েছে। বিপরীতে টিকিটের চাহিদা স্লিপ জমা পড়েছে দুই হাজারের অধিক। এতে করে বাকিরা বঞ্চিত হবেন এটাই স্বাভাবিক।
টিকিট কলোবাজারি রোধের বিষয়ে নৌ পুলিশ বরিশাল জোনের সহকারী পুলিশ সুপার মো. আ. মোতালেব জানান, তারা ইতোমধ্যেই কলোবাজারির সঙ্গে জড়িতদের সম্ভাব্য তালিকা তৈরি করেছেন। কথা বলেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের সঙ্গেও। কালোবাজারির অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নিবেন। অপরদিকে অজ্ঞান বা মলম পার্টির কবল থেকে যাত্রীদের রক্ষায় তারা প্রস্তুত বলে জানান।
ঈদে লঞ্চ যাত্রীদের নিরাপত্তা ও হয়রানী রোধে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে জানালেন বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের উপ পরিচালক মো. আবুল বাশার মজুমদার। এজন্য প্রশাসন ও লঞ্চ মালিকদের সঙ্গে বুধবার প্রস্তুতিমূলক সভা করেছেন। টিকিট কলোবাজারি রোধে লঞ্চ মলিকদের আগে থেকেই সতর্ক করেছেন। তবে তিনি মনে করেন- এবার বৈরী আবহাওয়া এবং বর্ষা মৌসুমে ঈদ হওয়াতে বিগত বছরের তুলনায় যাত্রী সংখ্যা কিছুটা কম হবে।
তিনি আরও জানান, ১৪ জুলাই থেকে ঈদ স্পেশাল সার্ভিস শুরু হলেও বরিশালে ১৬ জুলাই থেকে যাত্রীর চাপ বৃদ্ধি পাবে। যা চলবে ঈদের অগের দিন পর্যন্ত।
আপডেট : বাংলাদেশ সময় : ০১:১১ অপরাহ্ন, ২৪ আষাঢ় ১৪২২ বঙ্গাব্দ, বৃহস্পতিবার ০৮ জুলাই ২০১৫ খ্রিস্টাব্দ
চাঁদপুর টাইমস : প্রতিনিধি/এমআরআর/২০১৫
চাঁদপুর টাইমস ডট কম–এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি