দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চেয়ে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আরও সুষ্ঠু ও সুন্দর হবে বলে আশাবাদ জানিয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেছেন, ‘যেহেতু সামনে এসএসসি পরীক্ষা আছে, এর পরপরই রোজা শুরু হবে। রোজার মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব নয়। ঈদের পরপরই যাতে নির্বাচন হয়, আমরা সেইভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি। এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ থেকে শুরু হয়ে ৩১ মের মধ্যে ধাপে ধাপে এই নির্বাচন শেষ করা হবে।’
আজ মঙ্গলবার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ইসি মো. আলমগীর আরও বলেন, ‘মনোনয়ন তোলা, জমা এগুলো হয়তো রোজার শেষের দিকে হবে। কিন্তু নির্বাচনী প্রচারণা, নির্বাচন ঈদের পরে হবে। উপজেলা নির্বাচন ইভিএমে হতে পারে আবার ব্যালটেও হতে পারে বা ব্যালট ও ইভিএমে মিক্সডও হতে পারে। এ ব্যাপারে এখনই চূড়ান্ত কিছু বলা যাচ্ছে না। কারণ ইভিএম কী পরিমাণ ব্যবহারযোগ্য, সেই হিসাবটা আমরা এখনো পাইনি। হিসাবটা পেলে আমরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারব।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে সহিংসতা কেন হয় তা গবেষণার বিষয়। আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, ম্যাজিস্ট্রেট, নির্বাচনের কর্মকর্তারা থাকবেন, যাতে কোনো সহিংসতা না হয়। সবার সহযোগিতায় জাতীয় নির্বাচনে সহিংসতা হয়নি। জাতীয় নির্বাচন যেহেতু আমরা শান্তিপূর্ণভাবে করতে পেরেছি, আমরা আশা করি যেহেতু এটা কয়েকটা ধাপে হবে, সেখানে আমাদের নির্বাচনটা আরও সুষ্ঠু ও সুন্দর হবে।’
সংসদ নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করেনি, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য তাদের প্রতি আপনারা আহ্বান জানাবেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের আহ্বান থাকবে সব রাজনৈতিক দলের যাঁরা আছেন, তাঁরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন। কারণ আমরা সংসদ নির্বাচন যেমন নিরপেক্ষভাবে সুষ্ঠু, সুন্দর করার চেষ্টা করেছি, স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও একইভাবে সুষ্ঠু করার চেষ্টা করব। যেহেতু এটা কয়েকটা ধাপে হবে, সেখানে আমাদের কনসেন্ট্রেশনটা আরও বেশি থাকবে। সেগুলো আরও সুষ্ঠু হবে বলে আমরা আশা করি।’
ক্ষমতাসীন দল দলীয় প্রতীক না দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কোনো রাজনৈতিক দল যদি মনে করে তারা দলীয় প্রতীকে মনোনয়ন দেবে না। সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কোনো মন্তব্য নেই। এ নিয়ে কোনো সমস্যাও নেই। রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন নিয়েও স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়া যায়। কোনো রাজনৈতিক দল দলীয় প্রতীক না দিলে সে ক্ষেত্রে তারা স্বতন্ত্রদের নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচন করবে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে হলে সংশ্লিষ্ট উপজেলার ২৫০ জন ভোটারের সমর্থন রয়েছে এমন প্রমাণ জমা দিতে হবে। আর যদি কেউ এর আগে উপজেলা চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়ী হয়ে থাকেন। তাহলে তাঁদের ভোটারের সমর্থনযুক্ত তালিকা জমা দিতে হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের কাছে দলীয় প্রতীক থাকলেও যে অবস্থা, না থাকলেও একই অবস্থা। নির্বাচন কমিশনের জন্য এটি আলাদা কোনো দায়দায়িত্ব নেই।’
সংরক্ষিত নারী আসনের বিষয়ে ইসি আলমগীর বলেন, ‘সংরক্ষিত নারী আসনের জন্য কোন দল কতটি আসন পাবে, সেই প্রভেশনটা জানাতে আমরা সংসদ সচিবালয়কে চিঠি পাঠিয়েছি। এখনো উত্তর পাইনি। সেটি পেলে সিদ্ধান্ত নেব। আইন অনুযায়ী গেজেট প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হয়। আমরা হয়তো তালিকা আগামী সপ্তাহে বা এই সপ্তাহের শেষেও পেয়ে যেতে পারি।’
যদি জোট হয়, ছোট ছোট রাজনৈতিক দল আছে তারা জোট করতে পারে। রাজনৈতিক দলের মধ্যেও জোট হতে পারে। স্বতন্ত্ররাও জোট হতে পারে, আবার রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র মিলেও জোট হতে পারে বলে জানান তিনি।
স্বতন্ত্রদের যদি জোট না হয়, তাহলে কী হবে, জানতে চাইলে এই কমিশনার বলেন, ‘জোট তো হতেই হবে। জোট না হলে সেগুলো শূন্য থাকবে।’
‘আইনবহির্ভূত’ জরিমানা করা হয়েছে দাবি করে কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার হাইকোর্টে রিট করেছেন। বিষয়টি নজরে আনলে তিনি বলেন, ‘আমাদের যেকোনো সিদ্ধান্তের বিষয়ে আদালতে যাওয়া যাবে, সেটি তো আইনে আছে। সেটি আদালত বিবেচনা করে দেখবেন, সেই হিসাবে সিদ্ধান্ত দেবেন। সেটি তো আমাদের বিষয় নয়।’
চাঁদপুর টাইমস ডেস্ক/২৩ জানুয়ারি ২০২৪