ঈদের আগেই কারবারিদের কারসাজিতে গরুর মাংসের কেজি ৮০০ টাকা ছুঁয়েছে। একদিনের ব্যবধানে কেজিপ্রতি দাম বাড়ানো হয়েছে ৫০ টাকা। তবে কোনো কোনো বাজারে ৭৫০ টাকা কেজি দরে মাংস বিক্রির খবরও পাওয়া গেছে।
বেড়েছে লেয়ার ও ব্রয়লার মুরগির দামও। ৪০-৫০ টাকা বেড়ে ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০-২৬০ টাকা। আর ৩২০ টাকার লাল লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা কেজি। ক্রেতাদের অভিযোগ, বাজার মনিটরিং না থাকার কারণে সুযোগ সন্ধানী কারবারিরা কারসাজির মাধ্যমে বাজার ভেদে ইচ্ছামতো দাম বাড়িয়ে সাধারণের পকেট কাটছে।
তবে কারসাজির কথা মানতে নারাজ ব্যবসায়ীরা। তারা বলেছেন, ঈদের কারণে মাংসের চাহিদা বেশি। চাহিদা বাড়ায় মাংসের টান পড়েছে। ফলে বেশি দামে গরু ও মুরগি কিনতে হচ্ছে তাদের। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর তালতলা বাজারে ৮০০ টাকা কেজি গরুর মাংস বিক্রি হতে দেখা গেছে। অথচ বুধবারও এ বাজারে ৭৩০-৭৫০ টাকা কেজি মাংস বিক্রি হয়েছে বলে জানান ক্রেতারা। একদিনের ব্যবধানে কেজিতে ৫০ টাকা দাম বাড়ানো হলেও কারও কিছু বলার নেই। বাড়তি দামে মাংস কিনতে দোকানগুলোতে বেশ চাপও ছিল।
মাংসের দোকানে কথা হয় সরকারি কর্মকর্তা দিলরুবা আক্তারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ঈদে পরিবারের সবাইকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি যাবেন তিনি। পারিবারিক কারণেই ঈদের পরদিনই তাকে ঢাকায় ফিরতে হবে। ঈদের পর অন্তত এক সপ্তাহ ঢাকার কাঁচাবাজারে তেমন কিছু পাওয়া যায় না। তাই তিনি কিছু মাছ-মাংস কিনে রেখে যাবেন; কিন্তু গরুর মাংসের কেজি ৮০০ টাকা কেজি হওয়ায় তিনি কেনেননি। তার ভাষ্য, নিয়মিত এখানেই বাজার করেন। দুই তিন দিন আগেও এই বাজার থেকে ৭৩০ টাকা কেজি মাংস কিনেছেন। একদিন আগে কেজি ছিল ৭৫০ টাকা। বৃহস্পতিবার বিক্রি হয়েছে ৮০০ টাকা। একদিনের ব্যবধানে কেজিতে ৫০ টাকা বাড়ায় হতাশ তিনি।
মাংস বিক্রেতা রফিক বলেন, একদিন আগেও ৭৫০ টাকা কেজি গরুর মাংস বিক্রি করেছি, এটা ঠিক। আজকে ৮০০ টাকা কেজি বিক্রি করছি। ঈদ ঘনিয়ে আসায় গরুর মাংসের দাম বেড়েছে। প্রতিটি গরু ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে মাংসের দাম বাড়াতে হয়েছে। ক্রেতারাও ঈদ উপলক্ষ্যে কেজিতে ৫০ টাকা বেশি দিতে আপত্তি করছে না।
দাম নাগালের বাইরে হওয়ায় গরুর মাংস কিনতে গিয়ে অনেকেই মুরগির মাংস কিনে বাসায় ফিরেছেন। গরুর মাংস কিনতে বাজারে গিয়ে চার কেজি ব্রয়লার মুরগি কিনেছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী করিম উল্লাহ। আক্ষেপের সুরে তিনি বলেন, গরুর মাংস কিনতে এসেছিলাম। দাম চায় ৮০০ টাকা। তাই না কিনে মুরগির মাংস নিয়ে যাচ্ছি। মুরগির মাংসও কেজিতে ৫০ টাকা বেশি গুনতে হয়েছে।
রামপুরা বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদকে সামনে রেখে ব্রয়লার ও লেয়ার মুরগির দাম বাড়ানো হয়েছে। ব্যবসায়ী শকওত আলী বলেন, বুধবার ব্রয়লারের কেজি কিনেছি ১১৭ টাকায়। আজ কিনেছি ১৪২ টাকা কেজিতে। তাহলে কিভাবে আগের দামে বিক্রি করব? যাতায়াত খরচ ও দোকান ভাড়া মিলে আমাদের বিক্রি করতে হচ্ছে ২৬০ টাকা কেজি।
একই বাজারের মাংস ব্যবসায়ী সাজ্জাদুল হক মিন্টু বলেন, ঈদে সবাই মাংস খায়। সেই চিন্তা করেই বড় ব্যবসায়ীরা পরিকল্পিতভাবে দাম বাড়িয়েছে। আমরা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। আমরা বেশি দামে কিনে সেগুলো বিক্রি করছি। আমাদের খুব বেশি লাভ হচ্ছে না। মানুষ যদি মাংস কেনা কমিয়ে দিত তাহলে এমনিতেই দাম কমে যেত।
টাইমস ডেস্ক/ ২০ এপ্রিল ২০২৩
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur