চাকরি হারানোর হুমকিতে রয়েছেন নির্বাচন কমিশনের আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যাসিং একসেস টু সার্ভিসেস (আইডিইএ) প্রকল্পে কর্মরত ১ হাজার ১৩৪ জন ডাটা অ্যান্ট্রি অপারেটর। বর্তমানে তারা প্রকল্প কার্যালয়, ইসির আঞ্চলিক, জেলা ও উপজেলা অফিসে কর্মরত আছেন। বিশেষ করে ভোটার রেজিস্ট্রেশন, জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন, স্থানান্তর ও বিভিন্ন নির্বাচনের ইভিএমে ভোট গ্রহণে সহযোগিতাসহ অফিসের ডকুমেন্ট সংরক্ষণের কাজ করছেন তারা। তবে নির্বাচন কমিশন বিভিন্ন সময়ে তাদের চাকরি স্থায়ী করার কথা বললেও এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
সারা দেশের ডাটা অ্যান্ট্রি অপারেটররা নিজ নিজ জেলা-উপজেলা কর্মকর্তার মাধ্যমে তাদের চাকরি স্থায়ী করার তথা রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন করেও কোনো সারা পাচ্ছেন না। সেই সঙ্গে প্রকল্পর মেয়াদও শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে। এ ছাড়া সরকার জাতীয় পরিচয়পত্রের কার্যক্রম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করতে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে ইসির এ প্রকল্পে কর্মরত ডাটা অ্যান্ট্রি অপারেটরসহ অন্য কর্মচারীরা চাকরি হারানোর শঙ্কায় রয়েছেন। তারা তাদের পরিবার নিয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছেন বলে ইসি সচিবের কাছে লিখিতভাবে জানিয়েছেন। নির্বাচন কমিশন এ ডাটা অ্যান্ট্রি অপারেটরদের দিয়ে ভোটার তালিকা তৈরির কাজসহ ডাটাবেজে ভোটারদের তথ্য সংরক্ষণের কাজও করছেন।
গত বছরের ২৬ নভেম্বর সিলেটের সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসারে পাঠানো এক চিঠিতে দেখা গেছে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা সিলেটের জৈন্তাপুর নির্বাচন অফিস পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে সার্ভার স্টেশনে কর্মরত ডাটা অ্যান্ট্রি অপারেটরদের মূল কাঠামোয় অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেন। সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট অফিসার একটি চিঠি ইসির সিনিয়র সচিব, জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালকে পাঠান। একইভাবে সারা দেশের জেলা, উপজেলা নির্বাচন অফিসাররাও নিজ নিজ অফিসে কর্মরত ডাটা অ্যান্ট্রি অপারেটরদের চাকরি স্থায়ী করা তথা রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্তির আবেদন ইসি সচিবালয়ে পাঠিয়েছেন।
ইসির কর্মকর্তারা বলেছেন, আধুনিক বায়ো-তথ্য সমৃদ্ধ ডাটাবেজ তৈরির প্রতিটি ধাপে ডাটা অ্যান্ট্রি অপারেটর তথা টেকনিক্যাল টিমের সদস্যদের প্রয়োজন হয়। প্রতি বছর এ জনবল দিয়েই নির্বাচন অফিস হালনাগাদ কার্যক্রম পরিচালনা করে ইসি। জানা গেছে, ২০১৬ সালের মার্চে শুরুর দিকে বিগত দিনে যারা ইসির কাজ করেছেন তাদের মধ্য থেকে লিখিত, ব্যবহারিক ও ভাইভা পরীক্ষার মাধ্যমে ১ হাজার ১৩০ জনকে ডাটা অ্যান্ট্রি অপারেটর পদে আউটসোসির্ং প্রক্রিয়ায় ১ বছরের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপর প্রতি বছর তাদের চাকরির মেয়াদ এক বছর করে বাড়ানো হয়। এভাবে তারা দীর্ঘদিন থেকে সম্পূর্ণ অস্থায়ী ভিত্তিতে আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে নির্বাচন অফিসে কাজ করে যাচ্ছেন। এরই মধ্যে অনেকেরই চাকরির বয়সসীমা শেষ হয়েছে। ইসির চাকরি স্থায়ী না হলে তারা অন্য কোথাও চাকরি পাওয়ার সুযোগ পাবেন না।
বার্তাকক্ষ, ২৭ জুন, ২০২১;